সূঁইবিহীন ইনসুলিন ব্যবহার করে ডায়াবেটিক রোগীদের চিকিৎসা সম্ভব
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৩৭:১৮,অপরাহ্ন ১৮ জুলাই ২০১৪
সিলেট ডায়াবেটিক হাসপাতালে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেছেন, ইনসুলিন ইনজেকশন এখন পর্যন্ত ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য সবচেয়ে কার্যকর, নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা হিসেবে বিবেচিত। সূঁই দিয়ে ইনজেকশনের মাধ্যমে ইনসুলিন গ্রহণ করার সময় ব্যথা অনুভব হওয়ার কারণে রোগীরা বিব্রত ও কষ্টবোধ করে থাকেন। এতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ডায়াবেটিক রোগী নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা ব্যবস্থা এড়িয়ে চলেন। দিনে কয়েকবার ইনসুলিন ইনজেকশন সুঁইয়ের মাধ্যমে গ্রহণ করার যন্ত্রনা থেকে রেহাই পাওয়ার স্বপ্ন ডায়াবেটিক রোগীদের। বক্তারা বলেন, বিশ্বের কোটি কোটি ডায়াবেটিক রোগীদের যন্ত্রনা মুক্তির স্বপ্ন বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বায়োটেক প্রতিষ্ঠান আই-হেলথ নেট চিকিৎসা সেবা প্রদানের অঙ্গীকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের দেশে দেশে সূঁইবিহীন ইনজেকশনের মাধ্যমে ডায়াবেটিক রোগীদের ইনসুলিন ব্যবহার করার সুখকর প্রযুক্তি সরবরাহ করে চলেছে। সূঁই বিহীন ইনসুলিন ইনজেকশন পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের দেশের ডায়াবেটিক রোগীদের নির্ভরযোগ্য, নিরাপদ ও কার্যকর চিকিৎসা গ্রহণ সম্ভব।
গতকাল সোমবার সকাল ৯টায় সিলেট শহরের জিন্দাবাজার পুরানলেনস্থ সিলেট ডায়াবেটিক হাসপাতালের সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তারা একথা বলেন। সিলেট ডায়াবেটিক সমিতির সমিতির সহ-সভাপতি সাবেক পৌর চেয়ারম্যান, অ্যাডভোকেট আ.ফ.ম. কামাল মতবিনিময় সভায় সভপতিত্ব করেন।
সভার শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বায়োটেক প্রতিষ্ঠান আই-হেলথ নেট এর সিও ও সভাপতি মোহাম্মদ মালিক পারম্ভিক বক্তব্য দেন। তিনি তার বক্তব্যে সূঁইবিহীন ইনসুলিন ইনজেকশন সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্ত ব্যাখ্যা করেন এবং একজন শিকড় সন্ধানী হিসেবে পিতৃভূমি, মাতৃভূমি সর্বোপরি নিজের জন্মভূমিতে ডায়াবেটিক রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে সহযোগীতার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
মতবিনিময়কালে মূল বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন সিলেট ডায়াবেটিক হাসপাতালের সনোলজিষ্ট ডা. মোহাম্মদ আব্দুল হাফিজ। তিনি সূঁই বিহীন ইনজেকশন পদ্ধতির উপর ব্যাখ্যা প্রদানপূর্বক বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন। সভায় আব্দুল মালিক আই-হেলথ নেট বায়োটেক প্রতিষ্ঠানের বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সূঁইবিহীন ইনজেকশনের মাধ্যমে ডায়াবেটিক রোগীদের ইনসুলিন প্রদান ছাড়াও যে কোন ধরনের ইনজেকশন দেয়া হয় বলে জানান। তিনি উপস্থিত দুইজন নার্সকে নিয়ে সূঁইবিহীন ইনজেকশন ব্যবহার পদ্ধতি প্রদর্শন করেন। প্রদর্শনীতে বি-২০০০ ও জেটাজেট নামক দুইটি ডিভাইস প্রদর্শন করেন। তিনি আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকার ১২টি দেশে এসব পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জানান।
সম্প্রতি বাংলাদেশের ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল, এ্যাপোলো হসপিটাল এর মতপ্রতিষ্ঠানসহ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাথে সংশ্লিষ্ট খেলোয়ার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রয়োজনে এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জানান। বিগত ২দিন তিনি সিলেটের নর্থ ইষ্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং সিলেট এম.এ.জি.ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সম্মানিত চিকিৎসক, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথেও মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে অবগত করে এ পদ্ধতি গ্রহণের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উক্ত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, সিলেট ডায়বেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লোকমান আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নিজাম উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ এম.এ. মান্নান, যুগ্ম-কোষাধ্যক্ষ প্রকৌশলী শিবব্রত চন্দন ভৌমিক, সমিতির কার্যকরী কমিটির সদস্য সাংবাদিক আফতাব চৌধুরী, সমিতির কার্যকরী কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান শওকত, সিলেট ডায়াবেটিক হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডাঃ এ.জেড. মাহবুব আহমদ, আবাসিক চিকিৎসক ডা. লোলিত মোহন নাথ প্রমুখ।