লতিফকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করবে না সরকার
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:০২:২৮,অপরাহ্ন ২৬ নভেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক::
আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি করবে না সরকার। কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিয়েছে। তাহলেও তার বিষয়টি আদালতের মাধ্যমেই নিষ্পত্তি করতে চায় সরকার। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবে সরকার সেটার বাস্তবায়ন করবে। তবে তার যাতে আদালতে শাস্তি হয় সেই বিষয়টি দেখার জন্য রাষ্ট্রপক্ষের সিনিয়র আইনজীবীদের বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, লতিফ সিদ্দিকী এই সময়ে দেশে আসার পেছনে সরকারের কোনোরকম হাত ছিল না। কোনো সহযোগিতাও ছিল না। তিনি সরকারের নীতি নির্ধারণী কারো সঙ্গে আলোচনা করেও আসেননি। তা না করলেও সরকারের ভেতরের কেউ কেউ এখন সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বিভিন্ন কথা বলে সরকারকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সব উদ্যোগ নিচ্ছেন। সফলও হচ্ছেন। কিন্তু একের পর এক ঘটনা সৃষ্টি করছে ষড়যন্ত্রকারীরা। তাদের কেউ তাকে সহায়তা করেছে কিনাÑ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এই ব্যাপারে খোঁজ খবরও করা শুরু হয়েছে।
এই ব্যাপারে ওই সূত্র জানায়, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী পরিকল্পিতভাবেই দেশে এসেছেন। তাকে দেশে ফিরিয়ে এনেছেন তার ভাই বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। তারা দুজনই চাইছেন সরকার বিপাকে পড়–ক ও দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হোক। তারা সরকারকে বিপদে ফেলতে চান।
ইতোমধ্যে তারা এটাও জেনেছেন যে, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য তাদের সঙ্গে বিএনপির সমঝোতা হয়ে থাকতে পারে বলেও তথ্য জানতে পেরেছে। বিএনপি আন্দোলন করলে তারা দুভাই এতে বিএনপিকে সহায়তা করতে পারেন। লতিফ সিদ্দিকীর ইস্যু থেকে আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনেও রূপ নিতে পারে। তাতে সফল হলে ও আগামী দিনে বিএনপি জোট ক্ষমতাসীন হতে পারলে তাদেরও সুবিধা দেওয়া হবে।
এছাড়াও কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে সরকারের সমঝোতা হয়েছে। তাকে তার ভাইয়ের টাঙ্গাইলে আসনে ভাইয়ের বিকল্প হিসাবে নেওয়া হবেÑ এমন কথাও শোনা গিয়েছিল। কিন্তু বনিবনা না হওয়ার কারণে পরে সেটা সম্ভব হয়নি। আর এই কারণেই তারা সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ।
এদিকে সূত্র জানায়, লতিফ সিদ্দিকীর কাছে এমন সব তথ্য রয়েছে যা এই মুহূর্তে প্রকাশ করে দিলে তা সরকারের জন্য ইতিবাচক হবে না। এর আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে কথা বলেন। তাকে নিয়ে সমালোচনাও করেন। সূত্র জানায়, লতিফ সিদ্দিকী আরো নানা কথাও বলতে পারেন। তবে সত্য কিংবা মিথ্যাÑ যেটাই হোক না কেন, সরকার তার মুখ থেকে ওই ধরনের কোনো কথা প্রকাশ হোক তা চাইছে না। সেটা না চাওয়ার কারণে তিনি দেশে ফিরে আসার পরও তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কোনো নির্দেশনা না থাকায় কোনো বাহিনীর কেউ তাকে গ্রেপ্তার করেনি। এমনকি বিমানবন্দরে ১৪টির বেশি আইনশৃঙ্খলাবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করে তারাও কেউ তাকে গ্রেপ্তার করেনি। বরং তিনি নিরাপদে বিমানবন্দরের বাইরে বেরিয়ে গেছেন। এরপর গতকাল দুপুর পর্যন্ত নিরাপদেই ছিলেন। পরে থানায় গেলে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানো হয়।
প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, সরকার এখন নানা দিক থেকে চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। এর মধ্যে লতিফ সিদ্দিকী সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের ব্যাপারে বিশেষ করে জয়ের ব্যাপারে তিনি এমন সব তথ্য প্রকাশ করতে পারেন যাতে করে বিপদে পড়ে যেতে পারে সরকার। তবে পরিস্থিতি যাই হোক, শেখ হাসিনা সব বিষয়গুলো জেনেছেন আর জেনেই সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছেন।