মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে ৫ নেতার বিদ্রোহ!
প্রকাশিত হয়েছে : ১:৫১:১১,অপরাহ্ন ০৫ মার্চ ২০১৯
নিউজ ডেস্ক:: বিএনপির নেতারা এবার আনুষ্ঠানিকভাবেই মির্জা ফখরুল ইসলামকে সরকারের এজেন্ট বলছেন। বিএনপির একাধিক নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনেন। তারা জানতে চান যে, নাজিমুদ্দীন রোডের বিশেষ কারাগারে কিভাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গেলেন এবং বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বললেন? যেখানে সরকারের নির্দেশনা ছাড়া একটা মাছিও ঢুকতে পারে না, সেখানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কিভাবে অনুমতি দেওয়া হলো!
বিএনপির স্থায়ী কমিটির শীর্ষ ৫ নেতা এখন সরাসরি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তারা বলেছেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যদি বিএনপির মহাসচিব থাকেন, তাহলে তারা বিএনপি করবেন কি করবেন না তা তাঁরা চিন্তা করে দেখবেন। এই নেতাদের মধ্যে রয়েছেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তারা মনে করছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার গ্রেপ্তারের পরে বিএনপিকে নিষ্ক্রিয় রাখা, খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে নির্বাচনে যাওয়া, দলকে প্রস্তুত না করে নির্বাচনে যাওয়া এবং নির্বাচনে ভরাডুবির পরও কোন রকম আন্দোলন সংগ্রামের কর্মসূচী গ্রহণ না করা ইত্যাদি সবই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর করেছেন সরকারকে খুশি করার জন্য। ওই নেতারা বলছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে এতগুলো মামলা, তারপরও তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে না কেন! মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে এই বিতর্ক অবশ্য নতুন নয়।
২০১৪ এবং ২০১৫ সালে যখন বিএনপি লাগাতার আন্দোলন শুরু করেছিল। লাগাতার অবরোধ দিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করেছিল, সেই সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সরকারের গোপন যোগাযোগ হয়েছিল বলে বিএনপির নেতারা দাবি করছেন। তারা মনে করছেন যে, বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সরকার ব্যবহার করছেন। তাদের ভুল নির্দেশনার কারণে বিএনপির আজ এই দু:অবস্থা।
ওই নেতা মনে করছেন যে, বিএনপিকে নির্লিপ্ত রেখে সরকারকে সুযোগ সুবিধা দেওয়ার জন্যই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সরকার নানা রকম পৃষ্টপোষকতা করছে ও সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। তার একটি বড় উদাহরণ হলো, বিশেষ আদালতে কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বৈঠক করতে দেওয়া। তারা মনে করেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একা কেন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করবেন?
যদি বেগম খালেদা জিয়ার কোন রাজনৈতিক নির্দেশনা থাকে বা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্যও যদি কোন আলোচনার প্রয়োজন হয়, সেটা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের দিবে। দলের একজন সিনিয়র নেতা বলেছেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যখন বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন শনিবার এবং শুক্রবার।
তখনও তিনি বলেননি যে, বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তিনি কারাগারে দেখা করবেন। একজন নেতা জানিয়েছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যখন কারাগারে বিশেষ আদালতে যাচ্ছিলেন, তখনও তিনি বলেননি যে কোথায় যাচ্ছেন। স্থায়ী কমিটির সবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল নির্বাচনের পরে বেগম খালেদা জিয়ার কাছে বিএনপির নেতৃবৃন্দ যাবে এবং কি করণীয় ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করবেন। কিন্তু সে ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সম্মিলিত সদস্যদের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কেন একা দেখা করলেন?
সকলেই মনে করছেন যে, সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে এখন রাজনীতি থেকে চিরতরে অপসারনের জন্য একটি নীল নকশা প্রণয়ন করেছেন এবং সেই নীল নকশার অংশিদার হয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেজন্যই তিনি গোপনে দেখা করছেন এবং এই নীল নকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, এই ব্যাপারে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যদি যথাযথ এবং যুক্তিসংগত জবাব দিতে না পারেন, তাহলে বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়াই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবেন।