মিনি ইজতেমার আখেরী মুনাজাত অনুষ্ঠিত
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৫৫:৫৮,অপরাহ্ন ২৮ ডিসেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক::
কুড়িগ্রামে প্রতিবছরের ন্যায় এবারো কুড়িগ্রামের ধরলা ব্রীজ পূর্বপাড়ের ফজলুল করীম (রহ.) জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তম মুসলিম জমায়েত তিন দিনব্যাপী মিনি ইজতেমার আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে ইজতেমার কার্যক্রম সমাপ্ত হয়েছে। আজ রবিবার সকাল ৯টার দিকে চরমোনাইর পীর হযরত সৈয়দ রেজাউল করীম ২০ মিনিট দীর্ঘ এ আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন। এসময় আল্লাহ আল্লাহ ধ্বনীতে প্রখরিত হয়ে উঠে ধরলা ব্রীজ ও এর আশ্বপার্শ্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা। আখেরী মুনাজাতে মুছল্লীরা তাদের অতীতের পাপ কর্মের কথা স্মরণ করে তার থেকে মুক্তি ও মাফ পাবার আশায় মহান আল্লাহপাকের দরবারে দু’হাত তুলে মুনাজাত করেছেন। মুনাজাতে উপস্থিত মুছল্লীরা সকল মুসলিম উম্মাহর নাজাত ও দেশের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য মহান আল্লাহতায়ালার কাছে দু’হাত তুলে ফরিয়াদ করেন। তাদের বুকফাঁটা কান্নায় ধরলা পাড় ও আশেপাশের এলাকার বাতায় ভারী হয়ে উঠে। ২০ মিনিটের জন্য স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল ইজতেমাস্থল ও তার আশেপাশের এলাকার জীবনযাত্রা। ইজতেমার মাইকের আওয়াজের আওতাধীন এলাকার মুছল্লীরা যে যেখানে পেয়েছে সেখানেই বসে পড়ে আখেরী মোনাজাতে শরীক হয়েছে।
ইজতেমার আখেরী মোনাজাতে শরীক হওয়ার উদ্দেশ্যে গত শনিবার বিকাল থেকেই কুড়িগ্রাম জেলা সহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে মানুষ পিঁপড়ার মত আসতে থাকে ইজতেমাস্থলে। শনিবার সকালেই প্রায় ১৮’শ সামিয়ানা বিশিষ্ট ইজতেমার মূল প্যান্ডেল ভর্তি হয়ে এর আশ্বপার্শ্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা কানায় কানায় ভরে যায় মুছল্লীদের পদচারণায়। ফলে সকাল থেকেই কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী, কুড়িগ্রাম-যাত্রাপুর ও ইজতেমার আশ্বপার্শ্ব সড়কগুলোতে তীব্র যানযটের সৃষ্টি হয়। এসব রুটের অভ্যন্তরীন ও দূরপাল্লার যানবাহনগুলোকে পাটেশ্বরী বাজার ও জিয়া বাজার এলাকায় দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে হয়। স্থানীয় ট্রাফিক বিভাগকে যানযট সামলাতে বেশ বেগ পেতে হয়। আখেরী মুনাজাতের প্রায় ৩ঘন্টা পর বেলা ১২টার দিকে এসব এলাকার যানবাহন চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়। কুড়িগ্রাম জেলা মুজাহিদ কমিটির সদর ও মাহফিল এন্তেজামিয়া কমিটির আহ্বায়ক আলহাজ্ব জহুরুল হক জানান- গতবারের তুলানায় এবার ইজতেমায় দ্বিগুন বেশী মুছল্লীর সমাগম হয়েছে। ইজতেমায় ১২ লক্ষাধীক ধর্মপ্রাণ মুছল্লীর আগমন ঘটেছে বলে তিনি দাবী করেন।
উল্লেখ্য- গত বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় চরমোনাইর পীর সৈয়দ রেজাউল করীমের উদ্ধোধনী বয়ানের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সর্ববৃহৎ জমায়েত এ তিন দিন ব্যাপী মিনি ইজতেমার কার্যক্রম শুরু হয়। তিন দিনে চরমোনাইর পীর মোট ৭টি বয়ান পেশ করেন। তিনি ছাড়াও এই তিন দিনে ২০-২৫ জন দেশ-বরেণ্য আলেম-ওলামা ও চরমোনাইর মরহুম পীর ফজলুল করীমের খলিফা ও সাহেবজাদারা বিভিন্ন ওয়াজ-নসিয়ত পেশ করেন। কুড়িগ্রাম জেলা শাখা মুজাহিদ কমিটি অষ্টমবারের মত এবারো তিন দিনব্যাপী এ ইজতেমার আয়োজন করে।