পাহারায় চার বাহিনী; প্রতি তিন কেন্দ্রে একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স
প্রকাশিত হয়েছে : ২:০৭:২৬,অপরাহ্ন ২৭ এপ্রিল ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
সিটি নির্বাচনের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রস্তুতি সম্পন্ন। গড়ে তোলা হয়েছে নিরাপত্তা বলয়। কাজ করবে বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও আনসার। নাশকতার
পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে থাকছে তাৎক্ষণিক মোবাইল ট্র্যাকিং ব্যবস্থা। ছদ্মবেশে টহল দেবেন গোয়েন্দারাও। সোমবার সকাল ১০টা থেকে ঢাকা উত্তরের আটটি ও দক্ষিণের
আটটি স্থান থেকে পুলিশ-র্যাবের পাহারায় উত্তরের এক হাজার ৯৩টি কেন্দ্রে এবং দক্ষিণের ৮৮৯টি কেন্দ্রে পাঠানো হয় ব্যালট পেপার ও নির্বাচনি সামগ্রী।
ঢাকা দক্ষিণের রিটার্নিং কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মোর্শেদ ও উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহ আলম বলেন, সোমবার সকাল ১০টা থেকে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা
নির্বাচনের সরঞ্জাম বিতরণ শুরু করেন। সন্ধ্যার মধ্যেই এগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারায় প্রতিটি কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসাররা এসব
বুঝে নিয়েছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, উত্তর ও দক্ষিণের এক হাজার ৪২৯টি কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) কেন্দ্র চিহ্নিত করে বিশেষ
নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে এসব কেন্দ্রে প্রত্যেকের দেহতল্লাশি চালানো হবে।
প্রত্যেকটি বড় কেন্দ্রে ১২জন করে পুলিশ ও আনসার সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বড় কেন্দ্রে ১২টি ও ছোট কেন্দ্রে ১০টি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তারা দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে দু’টি করে মোবাইল পার্টি টহল দেওয়া শুরু করেছে। প্রতি তিনটি কেন্দ্রের জন্য একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স রিজার্ভ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি
কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ভোটের পরও যতক্ষণ প্রয়োজন হবে ততক্ষণ পর্যন্ত বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকবে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, মহানগর নাট্যমঞ্চ ও বঙ্গবন্ধু
আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র (বিআইসিসি) থেকে নির্বাচনি ফলাফল ঘোষণা করা হবে। এ দু’টি এলাকা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার
অংশ হিসেবে একটি কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুমের পাশাপাশি চারটি সাব-কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিআইসিসি ও নাট্যমঞ্চের জন্য দু’জন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সিটি করপোরেশন এলাকার সকল
ভোটকেন্দ্র ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে এরইমধ্যে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে। সাদা পোশাকেও দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সদস্যরা।
র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ জানিয়েছেন, তিন সিটিতে র্যাবের পাঁচ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে র্যাবের মোট ২৬৮টি টহল দল কাজ
করবে। নির্বাচনের দিন ১৩৪টি মোটরসাইকেল পেট্রোল, ৩৬টি স্ট্রাইকিং রিজার্ভ ফোর্স এবং সাদাপোশাকে ১৩৪টি দল কাজ করবে। র্যাব সদর দফতর থেকে প্রতিটি দলের
সঙ্গে সার্বক্ষণিক সমন্বয় করা হবে। পরিস্থিতি দ্রুত মোকাবেলা করতে মোবাইলে জিপিএস ট্র্যাকিংয়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, বিজিবি’র সদর দফতরে সিটি নির্বাচন সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে
১০টায় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জাবেদ আলী নিয়ন্ত্রণ কক্ষ পরিদর্শন করেন। বিজিবি মোতায়েনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনারকে
অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিজিবি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ মোহসিন রেজা জানান, ঢাকার দুই সিটিতে ৭০ প্লাটুন ও চট্টগ্রামে ৩০ প্লাটুন বিজিবি সদস্য নির্বাচনে নিরাপত্তার দায়িত্বে মোতায়েন
করা হয়েছে। এরইমধ্যে তারা দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে ১৬ জন, ৩৬টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৮১ জন এবং নারীদের জন্য সংরক্ষিত ১২টি ওয়ার্ডে ৮৯ জন
কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে ২০ জন, ৫৭টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৯০ জন এবং নারীদের জন্য সংরক্ষিত ১৯টি
ওয়ার্ডে ২১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ঢাকা দক্ষিণে ১৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৫৩ জন, উত্তরে ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ৩৭৪ জন এবং চট্টগ্রামে ১৮ লাখ ১৩ হাজার ৪৪৯ জন ভোটার মঙ্গলবার তাদের নতুন মেয়র ও
কাউন্সিলর পেতে ভোট দেবেন।