চবির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে দায় চাপাতে চাইছেন উপাচার্য, অভিযোগ শিক্ষকদের
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৩৫:০৯,অপরাহ্ন ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংঘাতময় পরিস্থিতি এড়াতে ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধিরা। তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থতা ঢাকতেই শিক্ষকদের ন্যায্য আন্দোলনকে বিতর্কিত করতে চাইছে। তাদের মতে, শিক্ষকদের আন্দোলনের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের কোনো সম্পর্ক নেই।
মো. আবদুল্লা আল আমীন
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য শিরীণ আখতার বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির চলমান আন্দোলন দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। তাদের আন্দোলনের সুযোগে ছাত্রলীগ সংঘর্ষে জড়িয়েছে।’
তিনি আরও জানান, শিক্ষক সমিতির নির্বাহী কমিটির একটি অংশ তার ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছে। এ আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্নকরার পাশাপাশি দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
বিভিন্ন বিভাগে প্ল্যানিং কমিটির সিদ্ধান্ত না মেনে শিক্ষক নিয়োগসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান, কর্মবিরতিসহ নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে সংগঠনটি।
এ অবস্থায় শিরীণ আখতারের অভিযোগ, সমিতি সদস্যরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সরকারের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তবে শিক্ষকরা বলছেন ভিন্ন কথা। সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সিরাজ উদ দৌলা বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে অনিয়ম-অসঙ্গতি, স্বেচ্ছাচারী কার্যক্রম, নিয়োগ বাণিজ্য, চরম প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনাসহ ২৯টি অভিযোগ তুলে তিন মাস ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষকরা।অন্যদিকে, নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বজায় রাখতে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে ছাত্রলীগ। লাগামহীন ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণ নেই কারো হাতে।
তার মতে, ছাত্রলীগের সংঘাতময় পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে ও দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে শিক্ষক সমিতির ওপর দায় চাপাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
ছাত্রলীগের মারামারির সঙ্গে শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের কী সম্পর্ক, প্রশ্ন তুলেন তিনি।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত উপাচার্য, উপ-উপাচার্য পদত্যাগ করবে না ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। ছাত্রলীগের মারামারির সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ও দুর্নীতির বিষয় ধামাচাপা দিতেই তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।
এ অবস্থায় উপাচার্য, উপ উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের গত কয়েকদিনের সংঘর্ষের ঘটনায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তবে, মারামারির ঘটনায় এখনও কোনও মামলা হয়নি। ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।