খুলনা মহানগর আ’লীগের সম্মেলন শনিবার
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:০২:৫৯,অপরাহ্ন ২৭ নভেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক::
এক দশকেরও বেশি সময় পর শনিবার (২৯ নভেম্বর) খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্মেলন ঘিরে এরই মধ্যে দলে তৈরি হয়েছে উৎসবের আমেজ। নগরজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে ব্যানার, ফেস্টুন আর পোস্টার।
সম্মেলন সফল করতে নেতাকর্মীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। সাংগঠনিক প্রস্তুতির পাশাপাশি নগরজুড়ে সাজ সাজ রব চলছে। প্রতিদিনই বাড়ছে তোরণের সংখ্যা। রাতের আঁধার আলো করছে রঙিন সাজবাতি। নগর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের উৎসবে সামিল হচ্ছেন জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দ্বীপ থেকে পাড়া-মহল্লার অলিগলিতে শোভা পাচ্ছে সম্মেলনের সাফল্য কামনা করে বর্ণিল ফেস্টুন।
শেষ মুহূর্তে চলছে মঞ্চ, প্যান্ডেল তৈরির কাজ। দলীয় প্রতীক নৌকার আদলে তৈরি হচ্ছে মঞ্চটি। ইতোমধ্যে ৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সম্মেলনকে ঘিরে দলের নেতাকর্মীরা প্রতিদিন মিছিল ও সভা-সমাবেশ করছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনে ১০ হাজার ডেলিগেট, ৩৮৫ জন কাউন্সিলর, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৬/৭ হাজারেরও অধিক নেতাকর্মী উপস্থিত থাকবেন। মঞ্চের দৈর্ঘ্য ৬০ ফুট, প্রস্থ ৪০ ফুট এবং উচ্চতা ৫ ফুট ধরা হয়েছে। বক্তৃতা মঞ্চ থাকছে দুটি। মঞ্চটি লোহা দিয়ে নির্মিত হচ্ছে। লালগালিচায় মঞ্চ আবৃত থাকবে।
অপরদিকে প্যান্ডেলের দৈর্ঘ্য ৩৪০ ফুট এবং প্রস্থ ২০০ ফুট ধরা হয়েছে। প্যান্ডেলের প্রতিটি খুঁটি মোড়ানো থাকবে লাল-সাদা কাপড় দিয়ে। গোটা প্যান্ডেলে মাইক থাকবে ২০/২২টি।
দলীয় সূত্র আরও জানায়, ২০০৪ সালের সম্মেলনে তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি সভাপতি ও মিজানুর রহমান মিজান এমপি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১০ বছর পর চলতি বছরের ১৮ জুলাই কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় ২৭ সেপ্টেম্বর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ঈদুল আযহা ও শারদীয় দুর্গোৎসবের কারণে সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি।
সম্মেলনের প্রস্তুতি হিসেবে মহানগর কমিটি নগরীর ৩৬টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড ও ৫টি থানা কমিটির সম্মেলন শেষ করে। এ সময়ে এসব সাংগঠনিক এলাকায় প্রায় ১৬ হাজার ব্যক্তিকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ দেওয়া হয়। সর্বশেষ ১১ নভেম্বর মহানগর কমিটি ২৯ নভেম্বর সম্মেলনের নতুন তারিখ চূড়ান্ত করে।
শনিবার সকাল ১০টায় খুলনা সার্কিট হাউজ ময়দানে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন এবং বিকালে অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম সকালে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। বক্তব্য রাখবেন খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক এমপি, কাজী জাফর উল্লাহ, মাহবুবুল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, বেগম মন্নুজান সুফিয়ান ও এস এম কামাল হোসেন প্রমুখ।
এদিকে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন কমিটিতে কারা আসছেন তা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। কাউন্সিল নাকি ঘোষণার মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসবে তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ও খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল, শান্তিপূর্ণ করতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান।
একটি বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, সাবেক খুলনা সিটি মেয়র, মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক সভাপতি পদে অপ্রতিদ্বন্দ্বী থেকে যাচ্ছেন। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান এমপি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়ছেন।
এ পদে মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান পপলু নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে সদর থানা সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামেরও প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতাকর্মী জানিয়েছেন, কয়েক বছর সম্মেলন না হওয়ায় ঝিমিয়ে পড়েছে দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড। বিগত কমিটির কেউ কেউ মারা গেছেন, অনেকে রাজনীতি থেকে সরে গেছেন। নেতাদের মধ্যে দূরত্বও আছে। এখন তারা সংগঠনকে গতিশীল করতে নবীন-প্রবীণ মিলিয়ে কমিটি দেখতে চান।
দলীয় সূত্র জানায়, নগরীর ৩৬টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড থেকে ১০ জন করে মোট ৩৬০ জন কাউন্সিলর হবেন। এ ছাড়া সম্মেলনে আরো ২৫ জন কাউন্সিলর মনোনীত করা হবে। মোট ৩৮৫ জন কাউন্সিলর নগর কমিটি নির্বাচন করবেন।