খুলনা আ’লীগ খালেক ও মিজানের নেতৃত্বে
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৪২:৩৭,অপরাহ্ন ৩০ নভেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক::
প্রায় ১১ বছর পর শনিবার অনুষ্ঠিত খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি সভাপতি ও মিজানুর রহমান মিজান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
শনিবিার বিকেলে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সভাপতির নাম ঘোষণা করেন। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রথমে তিন জন মনোনয়নপত্র জমা দিলেও পরে অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান পপলু প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। আর অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম সমর্থন দেন মিজানকে। ফলে মিজানও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হলেন তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান।
এর আগে দুপুরে খুলনা সার্টিক হাউজ ময়দানে সম্মেলন উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি।
উদ্বোধনী বক্তব্যে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ১০০ বছরেও বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসবে না। আওয়ামী লীগ সংবিধানবিরোধী কোন কাজ করবে না। শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী ওয়াদা রেখেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে। এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। যতদিন বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধী যতদিন থাকবে ততদিন এই বিচার চলবে। জিয়াউর রহমান এই যুদ্ধাপরাধী স্বাধীনতা বিরোধীদের পুরষ্কৃত করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে, জাতীয় চার নেতাকে যারা হত্যা করে জাতিকে নেতৃত্বহীন করার চেষ্টা চালিয়েছিল- বিএনপি তাদের পূনর্বাসন করেছে। বেগম জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছেন। আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার লক্ষে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে শেখ হাসিনাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলেন বেগম জিয়া।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিষয়ক মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমপি।
এ সময় তিনি বলেন, নির্ধারিত মেয়াদের এক সেকেন্ড আগেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতাচ্যূত করা যাবে না। বাংলাদেশে এমন কোন শক্তি নেই যে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যূত করতে পারে।
সদ্য বিদায়ী আমেরিকান রাষ্ট্রদুত ড্যান মজিনাকে উদ্দেশ্য করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, অনেক চেষ্টা করেছিলেন যাতে করে বাংলাদেশে নির্বাচন না হয়, শেখ হাসিনা যাতে ক্ষমতায় বসতে না পারে। কিন্তু শেখ হাসিনাই ক্ষমতায় বসেছেন। বাংলাদেশে এখন আর কাজের মেয়ে মর্জিনার কথায় ক্ষমতার রদবদল হয় না।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন খুলনা মহানগর সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি।
সম্মেলনের প্রধান বক্তা বি এম মোজাম্মেল হক এমপি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার যখন উন্নয়নের কাজ করছে তখন বিএনপি-জামায়াত জোট দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত। আওয়ামী লীগকে সংঘবদ্ধ ভাবে সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, খালেদা জিয়ার আন্দোলন বাংলার মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন। জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে খালেদা জিয়া বিদেশি প্রভূদের কাছে ধরণা দিচ্ছেন। সরকার ও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। কিন্তু ধরণা দিয়ে ও ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যূত করা যাবে না।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু, বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক এসএম মোস্তফা রশিদী সুজা এমপিসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।
সমাবেশে সাংগঠনিক প্রতিবেদন পাঠ করেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, শোক প্রস্তাব পাঠ করেন সাবেক ছাত্রনেতা আশরাফুল ইসলাম। সমাবেশে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে নিহত ও মৃত নেতাকর্মীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সম্মেলন উপলক্ষে সকাল থেকেই বিভিন্ন ইউনিট থেকে মিছিল সহকারে নেতাকর্মীরা সম্মেলন স্থানে আসে। দুপুর গড়াতে গড়াতে সম্মেলন স্থান পূর্ণ হয়ে যায় নেতা-কর্মীদের পদচারণায়।