প্ররোচনায় কাদের মোল্লার ছেলের এমন বক্তব্য : অ্যাটর্নি জেনারেল
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৫৩:৫৫,অপরাহ্ন ১১ ডিসেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক::
একটি বিশেষ মহলের প্ররোচনায় আব্দুল কাদের মোল্লার ছেলে ‘তার বাবাকে এই সরকার হত্যা করেছে’ এই রকম দাবি করছে বলে জানান সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্র্টের রায়ের পরে এমন মন্তব্য করায় তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার কাদের মোল্লার পরিবারের পক্ষে তার ছেলের বক্তব্যের পরে প্রতিক্রিয়ায় অ্যার্টনি জেনারেল বলেন, কাদের মোল্লার পক্ষ থেকে রিভিউ পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। রিভিউ পিটিশন দায়ের করবেন-এই কথা বলে চেম্বার বিচারকের কাছ থেকে স্থগিতাদেশ নিয়েছেন। পরবর্তীতে তার শুনানিও হয়েছে। শুনানিতে আপিল বিভাগ রিভিউ পিটিশন মেরিটে শুনানি করেছেন। মেরিটে শুনানি করে তারা পূর্বের রায় পুনর্বিবেচনা করার মতো কোনো যুক্তি পাননি। কাজেই কাদের মোল্লার সকল সুযোগ তিনি পেয়েছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে (ট্রায়াল কোর্টেও) কাদের মোল্লা সমস্ত সুযোগ পেয়েছেন। বিস্তারিতভাবে আপিলের শুনানি হয়েছে, সেখানে সুযোগ পেয়েছেন। এই শুনানিতে আদালত সাতজন অ্যামিকাস কিউরির বক্তব্য শুনেছেন।
‘সবশেষে আমরা আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছি, রিভিউ চলবে না। তারপরও রিভিউ পিটিশন দায়ের হয়েছে। দায়েরের পর সেই পিটিশন শুনানি হয়েছে। সেই রায় সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে। সেই রায় পড়ার জন্য আমি কাদের মোল্লার পরিবারকে বলব’, বলেন তিনি।
কাদের মোল্লার রায়ের পুনর্বিবেচনা কেন করা যায়নি তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা পূর্ণাঙ্গ রায়ে এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই সময়ে তারা যে সব বক্তব্য রাখছেন, একটি মহলের প্ররোচনায় তারা এগুলি করছেন। বিচারটাকে অহেতুক প্রশ্নবিদ্ধ করতে তারা এসব বক্তব্য দিচ্ছেন। এইসবের কোনো রকম সারবত্তা নেই। মানুষকে বিভ্রান্ত করতে এই সব বক্তব্য।
তিনি বলেন, আমি তাদের বলব- কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে যে সব সাক্ষী এসেছে, বিশেষ করে মোমেনার সাক্ষ্য, সেই সাক্ষ্য তারা যাতে পড়ে দেখেন। তাহলেই বুঝতে পারবেন, কাদের মোল্লা কতখানি অপরাধ সে সময়ে করেছেন এবং কাদের মোল্লাকে আদালত সঠিক দণ্ডই দিয়েছেন।
কাদের মোল্লাকে সর্বোচ্চ শাস্তি না দেওয়া হলে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ প্রত্যেকেই হতাশ হতো মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা হতাশ হতেন না হতেন সেটা বড় কথা নয়। “আমাদের সর্বোচ্চ আদালত যে বিচার করেছেন, সেই বিচারের পরে তাকে দণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এটাকে যদি কাদের মোল্লার পরিবার হত্যা বলে ধরে নেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার প্রসেডিং শুরু করা উচিত বলে আমি মনে করি।
২০১৩সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার প্রথম রায়ে কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদন্ডের রায় দেওয়া হয়। রায় প্রকাশের পর ১০ ডিসেম্বর ফাঁসি কার্যকরে উদ্যোগ নিলে কাদের মোল্লার আইনজীবীদের আবেদনে চেম্বার বিচারপতি দন্ড কার্যকর স্থগিত করে দেন। কাদের মোল্লাকে বাঁচাতে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন গ্রহণের আবেদনও করা হয়। দ্বিতীয় আবেদনে রায় পুনর্বিবেচনা করে কাদের মোল্লার খালাসের আবেদন করা হয়। তার পরের দুই দিন কাদের মোল্লার রিভিউ নিয়ে দুটি আবেদনের শুনানির পর ১২ ডিসেম্বর আদালত তা খারিজ করে দিলে ওই রাতেই ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হয়।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে কাদের মোল্লার ছেলেন হাসান জামিল বলেন,আমার বাবা দুনিয়া থেকে বিদায়ের আগে জানতেই পারল না, সংবিধান অনুসারে তার রিভিউ করার অধিকার আছে কি না। যখন আইনের পূর্ণাঙ্গ আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়, তখন সেটা হত্যাকাণ্ড ছাড়া আর কিছু নয়।
সংবাদ সম্মেলনে কাদের মোল্লার স্ত্রী সানোয়ার জাহানও উপস্থিত ছিলেন। যথেষ্ট আইনি সুযোগ না দিয়ে এ সরকার ফাঁসি কার্যকরের নামে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তার বড় ছেলে হাসান জামিল