জাতীয় চারনেতা হত্যাকান্ডের পরিকল্পনাকারী জিয়াউর রহমান: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ১:৪৬:৩৬,অপরাহ্ন ১৫ নভেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক:: মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের নিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুদ্ধাপরাধী হিসেবে যাদের সাজা হয়েছে বিএনপি নেত্রীর জনসভায় তাদের মুক্তি দাবি করা হয়। এতেই প্রমান করে তিনি রাজাকারদের ছাড়া বাচতে পারেন না।
শনিবার বিকেলে যুবলীগের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে এবং জাতীয় চারনেতার হত্যাকান্ডের ঘটনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান ও খন্দকার মোশতাক ছিলেন ওই হত্যা কান্ডের মূলহোতা এবং পারিকল্পনাকারী।
আবার এই স্বাধীনতা বিরোধীএবং মানুষেরআর্থ-সামাজিক মুক্তির বিরোধীতাকারীদের নিয়েই বর্তমান ২০ দলীয়জোট গঠনকরা হয়েছে। এইবিশদলএদেশের বিষফোঁড়া। এরানা থাকলে বাংলাদেশ আজ প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ডে পরিণতহত।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, কোন হুমকি-ধামকিতে কাজ হবে না। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা হবে। আর ২০৪১ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ হবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা এদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। সেই স্বাধীনতার সুফল জাতি পেতে শুরু করেছে। আগামীতে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় একটি মানুষও অনাহারে থাকবে না। প্রতিটি ঘরে ঘরে আলোর জ্বালানো হবে। কেউ অন্ধকারে থাকবে না। শেখ হাসিনা বলেন, শেখ ফজলুল হক মনি মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক ছিলেন। তিনি অস্ত্র হাতে মুক্তিযুদ্ধও করেছেন। তিনি যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাই যুবলীগকে শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করতে হবে। আগামীতে যুবলীগ সদস্যরা দেশ ও জাতির কল্যাণে নিয়োজিত থাকবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর দোসরদের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিল। আমরা ওয়াদা দিয়েছিলাম তাদের বিচার করবো, বিচার করছি। আর বিএনপি কি করছে? আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে,গাছ কেটেছে,গাড়ী পুড়িয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর এবং ৭৫ এর পরে জিয়াউর রহমান খুনিদের রাজনীতিতে আশ্রয় দিয়েছেন। এখন ২০ দলে যারা আছেন তাদের কেউ খুনি কেউ যুদ্ধাপরাধী। সূর্যসেন হলের ছাত্রলীগের নেতাদের হত্যার আসামিরা এখন ২০ দলের নেতা। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে যারা আছে তাদেরকে বিষফোঁড়ার সঙ্গে তুলনা করেন। হাসিনা বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসে ১৯৯৬ সালে। তখনই দেশের মানুষ প্রথম উপলব্ধি করে সরকার মানেই জনগণের সেবক। আমরা দেশের এবং দেশের মানুষের উন্নয়নে কাজ করি।
জিয়া এদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে নি আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জিয়াউর রহমান এদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে নাই। বিএনপির নীতি-আদর্শই ছিল ভিন্ন। ১৫ আগস্টের পরে তারা স্বাধীনতা বিরোধীদের পুনর্বাসিত করে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীদের নিয়ে ক্ষমতায় আসে তারা।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু খুনিদের আশ্রয় ও তাদের বিভিন্ন দেশেপুনর্বাসন করেননি। এখন তার স্ত্রী খালেদা জিয়া তিনিও স্বামীর পথ অনুসরণ করছেন। সারাদেশের তার সমাবেশে সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারদের মুক্তির দাবি করা হয়। এর থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের নাকি রাজাকারদের পক্ষে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামীতে প্রত্যেক ঘরে ঘরে আলো জালাবো, কোনো ঘর বিদ্যুৎবিহীন থাকবে না। এর আগে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছি। আরো বাড়ানো হবে। যুবকর্মসংস্থানের জন্য জামানত বিহীন ঋণ গ্রহণের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছি। যেখান থেকে যে কোন যুবক দুই লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। এখন আর যুবকদের জমি বিক্রি করে বিদেশ যেতে হবে না। ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিদেশ যাবে। ফিরে এসে সেটা পরিশোধ করবে।
আউটসোর্সিংকে ‘লার্নিং এন্ড আর্নিং’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তথ্য প্রযুক্তিতে ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সেখানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন যে কেউ আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে তথ্য-প্রযুক্তিতে ব্যবহার করে উপর্জন করবে।
সংগঠনের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করে যুবলীগ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান ওফর ফারুক চৌধুরী।