দুদকের মামলায় স্বাক্ষীও আসামী
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:০৭:২২,অপরাহ্ন ৩১ মে ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
বিএনপির সাবেক সাংসদ হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে দুদকের করা মামলা নিন্ম আদালতে চলবে মর্মে রায় ঘোষণা করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে এ মামলার প্রধান সাক্ষী জুলফিকার আলীকেও মামলায় (পক্ষভুক্ত) আসামী করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত এক রায়ের কপি পান এ মামলার আসামী হাফিজ ইব্রাহিমের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে করা এক আপিল আবেদনের ওপর শুনানি করে গত বছরের ১২ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এই রায় দেন।
রায়ে আপিল বিভাগ বলেন, সাবেক সাংসদ হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে দুদকের করা এই মামলার সাক্ষীকেও আসামী হিসেবে অন্তভুক্ত করা হলো। আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী এখন আসামী হাফিজ ইব্রাহিম তার স্ত্রী মিসেস মাফরুজা সুলতানা এবং মামলার সাক্ষী মো.জুলফিকার আলী ও তার স্ত্রী রহিমা আলীও মামলার আসামী করে বিশেষ আদালতে মামলা চালানোর জন্য। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
তার আগে বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে বিএনপিদলীয় সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ ইব্রাহিম ও তাঁর স্ত্রী মাফরুজা সুলতানার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলার কার্যক্রম চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি।
একই সঙ্গে মাফরুজা সুলতানার করা লিভ টু আপিল আবেদনের ওপর গত বছরের ২৬ অক্টোবর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হয়। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ এই রায় দেন।
মাফরুজা সুলতানার করা এক আবেদনে এ আদেশ দেওয়া হয়। আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী টিএইচ খান, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, মোহাম্মদ আহসান ও নাজমুল হুদা। সরকারপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
এদিকে হাফিজ ইব্রাহিম দম্পতির বিরুদ্ধে মামলার সাক্ষী ব্যবসায়ী জুলফিকার আলী ও তাঁর স্ত্রী রহিমা আলীকে এ মামলায় আসামি করার ক্ষেত্রে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা মানেনি দুদক। হাইকোর্ট গত বছরের ফেব্রুয়ারি এক আদেশে জুলফিকার আলী দম্পতির বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, জুলফিকার আলী ও রহিমা খাতুন অপরাধ করেছেন। হাইকোর্টের এ নির্দেশ না মেনে দুদক জুলফিকার আলী দম্পতিকে সাক্ষী করার পক্ষে অভিমত দিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলফিকার আলী দম্পতি অপরাধ করেছেন। তবে তাঁদের আসামি করা হলে এ মামলায় আর কোনো সাক্ষী পাওয়া যাবে না।
উল্লেখ্য, সিঙ্গাপুরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে জুলফিকার আলী দম্পতির একটি হিসাব থেকে হাফিজ ইব্রাহিম দম্পতির আরেকটি হিসাব নম্বরে এক লাখ ৭৫ হাজার ডলার জমা করা হয়। ২০০৫ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে এ অর্থ জমা হয়। এরপর দুদক ২০১১ সালের ১৬ আগস্ট হাফিজ ইব্রাহিম দম্পতির বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করে।
এ মামলায় ২০১২ সালের ১২ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়ার পর আদালত অভিযোগ আমলে নেয়। এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন মাফরুজা সুলতানা। হাইকোর্ট এ আবেদন খারিজ করে দেন। একই সঙ্গে মামলার সাক্ষী জুলফিকার আলী দম্পতিকে আসামি করার পক্ষে আদেশ দেন।
হাইকোর্টের খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন মাফরুজা সুলতানা। আর এ আবেদনে দুদকের মতামত তুলে ধরে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করার আবেদন করা হয়েছে।