কুমিল্লায় ট্রেন লাইনচ্যুত: ৮ ঘণ্টাতেও উদ্ধার হয়নি একটি বগিও
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:২১:৪৩,অপরাহ্ন ১৭ মার্চ ২০২৪
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বিজয় এক্সপ্রেসের ৯টি বগি লাইনচ্যুতের ঘটনার পর ৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও একটি বগিও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এরইমধ্যে দুটি উদ্ধারকারী ট্রেন ঘটনাস্থলে কাজ শুরু করেছে।
মো.আবদুল্লা আল আমীন
রোববার (১৭ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে নাঙ্গলকোট উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নের তেজের বাজার এলাকায় এ বগি লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটে।
আখাউড়া, লাকসাম ও চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন দুটি ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। ঘটনার পর আপলাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকলেও ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে, চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকা, সিলেট ও ময়মনসিংহের ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে, দুর্বল পাটাতন ও স্লিপারের কারণে দুর্ঘটনার অভিযোগ স্থানীয়দের। তবে, কর্তৃপক্ষের দাবি, অতিরিক্ত তাপে রেললাইন বেঁকে যাওয়ায় এ দুর্ঘটনা।
স্থানীয়রা জানায়, বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি রেললাইন থেকে ছিটকে খেত ও ঘরের ওপর পড়ে ৯টি বগি। মুহূর্তেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে বগিগুলো। রেললাইন ভেঙে কয়েকগজ দূরে গাছের গুঁড়িতে আটকে যায় রেলের ইঞ্জিনও। হুমড়ি খেয়ে বিভিন্ন দিকে পড়ে আহত হন ৩০ জন। তবে সবাই শঙ্কামুক্ত। এলাকাবাসী তাৎক্ষণিক এসে যাত্রীদের উদ্ধার করেন।
আরও পড়ুন: পুরানো স্লিপারেই কুমিল্লায় ট্রেন দুর্ঘটনা, বলছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা
১৮টি বগিতে কয়েকশ যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে জামালপুর যাচ্ছিল ট্রেনটি। হাসানপুর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে নাঙ্গলকোটের আগে চলন্ত ট্রেনটি বগিগুলো লাইনচ্যুত হয়ে এবড়ো-থেবড়ো হয়ে যায়। এসময় রেললাইনের ধারে একটি বাড়িতে উঠে যায় বগি। তবে সেসময় ঘরে কেউ ছিলেন না।
স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, এই দুর্ঘটনার মূল কারণ হচ্ছে ব্রিজ। এই ব্রিজের যে কাঠ, এই কাঠ অনেক বছরের পুরোনো। এই ব্রিজের কোনো সংস্কার হয়নি। দুর্ঘটনায় চালকদেরও অবহেলা রয়েছে। ট্রেনটি যে গতিতে এসেছে তা স্বাভাবিক গতি ছিল না। এই লাইনে একটা গতিসীমা আছে, এই গতিসীমা মানা হয়নি।
কর্তৃপক্ষের দাবি, অতিরিক্ত তাপে লাইন বেঁকে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সামনেই স্টেশন থাকায় ট্রেনের অতিরিক্ত গতিও ছিল না।
চট্টগ্রাম বিভাগ রেলওয়ের ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন,
তাপের কারণে রেললাইন বেঁকে গিয়েছিল, যা আমরা খেয়াল করি নাই। তাপে রেললাইন বেঁকে যাওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ৯ বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। আজ ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক নাও হতে পারে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত উদ্ধারের।
গত দুই বছরে রেলপথে মোট ১৭০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় মোট ৪৯ জনের প্রাণহানি হয়েছে।