বাংলাদেশকে ‘খোঁচা’ পাকিস্তানি হাফিজের
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:২১:৪৫,অপরাহ্ন ০৮ এপ্রিল ২০১৫
স্পোর্টস ডেস্ক::
আগামী ১৭ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ক্রিকেট লড়াই শুরু হবে। তবে ব্যাট-বলের লড়াই শুরু হওয়ার আগেই কথার লড়াই শুরু হয়ে গেছে। গত সপ্তাহে সাকিব আল হাসান জানিয়েছেন পাকিস্তানকে হারানোর এটাই মোক্ষম সুযোগ। সাকিবের সেই কথার জবাবে ইতিহাস ও পরিসংখ্যানকে টেনে এনে বাংলাদেশকে খোঁচা দিলেন পাকিস্তানের অলরাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজ।
২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর এক পাকিস্তান বাদে সব দলকেই হারিয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানোর পর ১৯৯২ বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে আর হারের বৃত্তথেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি টাইগাররা। তবে এবার সেই ‘গেরো’ খুলবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সাকিব আল হাসান। এমনকি আসন্ন সফরে বাংলাদেশকেই ফেভারিট মনে করেন তিনি।
এদিকে সাকিবের সেই মন্তব্যের জবাবে বাংলাদেশকে খোঁচা দিলেন পাকিস্তানের অলরাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজ। এজন্য তিনি পরিসংখ্যানকে টেনে আনেন।
হাফিজ বলেন, ‘সাকিব যা বলেছে সেটা আত্মবিশ্বাস থেকে বলেছে। এটা ভালো যদি এটার ওপর তাদের বিশ্বাস থাকে। শুনেছি মাশরাফি প্রথম ম্যাচে খেলবে না এবং সেই ম্যাচে সাকিব দলকে নেতৃত্ব দিবে। কিন্তু আপনি যদি সাম্প্রতিক অতীতের দিকে চোখ বুলান তবে দেখবেন, পাকিস্তান বাংলাদেশের ওপর আধিপত্য বিস্তার করেছে। তারা ১৯৯৯ সালের পর আমাদের আর হারাতে পারেনি।’
বিশ্বকাপ শেষে মিসবাহ উল হক ও শহিদ আফ্রিদি ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেন। আসন্ন সফরে ইউনিস খানকেও দেশে রেখে আসছে পাকিস্তান। ফলে কম অভিজ্ঞ একটি দলই প্রতিপক্ষ হিসেবে পাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে হাফিজ জানিয়েছেন, দলের অনেক খেলোয়াড় কম অভিজ্ঞ হলেও তারা যোগ্যতা দিয়েই দলে ঢোকেছে এবং জাতীয় দলের হয়ে নিজেদের প্রমাণের জন্য মুখিয়ে রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান ক্রিকেটের প্রতিভাকে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। এই তরুণ খেলোয়াড়রা ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেদের প্রমাণ করেছে এবং তারপর নির্বাচকরা তাদের দলে ডেকেছে। আমরা নতুন যুগে বাস করছি, অনেক নতুন খেলোয়াড় নিয়ে (বাংলাদেশ সফরে) যাচ্ছি। কিন্তু দল হিসেবে আমরা ভালো খেলা উপহার দিবো এবং নতুনরা আসন্ন সিরিজের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।’
১৯৯৮ সাল থেকে এই পর্যন্ত পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪৭ ম্যাচ খেলে শুধু ১৯৯৯ সালের ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে একমাত্র জয়টি পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০০৩ সালে মুলতান টেস্টে বাংলাদেশ জয়ের দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল। তবে আম্পায়ারদের বাজে সিদ্ধান্ত ও ইনজামাম উল হকের ‘মহাকাব্যিক’ ইনিংসের সুবাদে ১ উইকেটে পরাজিত হয় বাংলাদেশ। পরিসংখ্যানে পাকিস্তান যোজন-বিয়োজন এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশকে খাটো করে দেখছেন না মোহাম্মদ হাফিজ। বিশেষ করে সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপে বাংলাদেশ যেই পারফরমেন্স দেখিয়েছে তাতে করে বাংলাদেশকে যথেষ্ট সমীহ করছেন তিনি।
মোহাম্মদ হাফিজ বলেন, ‘বাংলাদেশ সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপে দারূণ পারফরমেন্স করেছে, অসাধারণ পারফরমেন্স দেখিয়ে হাজার হাজার মানুষের মন জয় করেছে। গোটা টুর্নামেন্টে তারা যে রকম খেলা খেলেছে তাতে করে তাদের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠার যোগ্যতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। দল হিসেবে আমরা তাদের খাটো করে দেখছি না। বিশেষ করে ঘরের মাঠে তারা সব সময়ই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ।’
আসন্ন বাংলাদেশ সফরে পাকিস্তান ৩টি ওয়ানডে, ২টি টেস্ট ও একটি টি-২০ ম্যাচ খেলবে। আগামী ১৭ এপ্রিল মিরপুরের শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে দুই দলের সিরিজ শুরু হবে। একই মাঠে অপর দুটি ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে ১৯ ও ২২ এপ্রিল।
প্রসঙ্গত, বিশ্বকাপে ‘স্লো ওভার রেট’র কারণে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পাওয়ায় নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা প্রথম ওয়ানডেতে খেলতে পারবেন না। তার পরিবর্তে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিবেন সাকিব আল হাসান।