বনানীর আগুনে ক্রিকেটারের মৃত্যু
প্রকাশিত হয়েছে : ১:২৭:৫০,অপরাহ্ন ২৯ মার্চ ২০১৯
নিউজ ডেস্ক:: রাজধানীর বনানীর ১৭ নম্বর রোডের এফ আর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৫ জনে দাঁড়িয়েছে। আহতের সংখ্যা শতাধিক। এখনও নিখোঁজ রয়েছে ২০ জন। সেখানে দায়িত্বরত একাধিক ফায়ার সার্ভিস কর্মীর সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে আগুন লাগার ৬ ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ১৯ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে একজন হলেন নাহিদুল ইসলাম তুষার নামের এক ক্রিকেটার।
মাগুরার স্থানীয় ক্রিকেটে লিগে নিয়মিত খেলতেন তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে গতির ঝড় তোলা তুষারের স্বপ্ন ছিল জাতীয় পর্যায়ে খেলার। সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
মাগুরার এই ক্রিকেটারের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার সঙ্গে খেলা খান নয়ন নামে সাবেক আরেক ক্রিকেটার ও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের ঘনিষ্ট বন্ধু খান নয়ন। তিনি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মিডিয়া ম্যানেজার।
খান নয়ন বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় অভি নামে মাগুরার আমার এক বন্ধু বনি আমিন অভি ফোন করে বলল, আমাদের মাগুরার এক বন্ধু নাহিদুল ইসলাম তুষার বনানীতে আগুনে পুড়ে মারা গেছে। এই তুষার হল যে বাঁ হাতি পেস বোলার ছিল। আমরা সবাই লেফটি তুষার বলে তাকে ডাকতাম। মাগুরা জেলা টিমের ক্রিকেটার ছিল। স্টেডিয়ামের অপর পাশে আদর্শ পাড়াতে থাকত ওরা। তুষারের বাবার চাকরির সুবাদে মাগুরা থাকত। দারুণ এক হাসিখুশি বিনয়ী ছেলে।
খান নয়ন জানান, ক্রিকেটার তুষারের লাশ কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। নিহত নাহিদুল ইসলাম তুষারের বাবা ইশহাক আলি মাগুরা হেলথের ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে টাঙ্গাইলে পৈত্রিক বাড়িতে পরিবারসহ বসবাস করেন। আর ক্রিকেটার তুষার খেলাধুলার পাশাপাশি এয়ার হ্যারিটেজ নামক একটা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন।
এদিকে বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে মারা যাওয়া ২৫ জনের মধ্যে ২৪ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে বনানীতে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ডিএমপি’র গুলশান জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার মুশতাক আহমেদ। ফায়ার সার্ভিস তাদের তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ২৫ জনের মরদেহ আমরা শনাক্ত করেছি, তার মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ২৪ জনের মরদেহ তাদের স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমাদের লিস্টে ৭৩ জনের মতো আহত আছেন। এছাড়াও কম-বেশি আরো অনেকে আহত হয়েছিলেন। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। যারা মিসিং ছিলেন বলে আমাদের কাছে রিপোর্ট ছিলো তাদের প্রায় সকলেরই মরদেহ পাওয়া গেছে। ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কার্যক্রম এখনো চলছে। আমরা সর্বাত্মকভাবে তাদের সহযোগিতা করছি।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ১৯ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন- নিরস দিবনে রাজা (শ্রীলংকান), আব্দুল্লাহ আল ফারুক, পারভেজ সাজ্জাদ, আমেনা ইয়াসমিন, জেবুন্নেসা, আমির হোসেন, মাকসুদুর রহমান, নাহিদুল ইসলাম তুষার, আহমেদ জাফর, তানজিলা মৌলি, রেজাউল করিম কাজী, আতাউর রহমান, মিজানুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, রুমকি আক্তার, সালাউদ্দিন, ফজলে রাব্বি ও আনজির আবির।