বনানী বিভীষিকা: আগে বলো, ওরা কেমন আছে
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:২৫:১৪,অপরাহ্ন ২৯ মার্চ ২০১৯
নিউজ ডেস্ক:: ‘ওরা কেমন আছে সেটা আগে বলো। সবাই নামতে পেরেছে। কে কোথায় আছে। কারও কোনো সমস্যা হয়নি তো। অন্য সবাইকে আর দেখছি না কেন।’ বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউর এফ আর টাওয়ারের ১১ তলায় ডর্ড নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন মাহবুবা নীলিমা। অগ্নিকাণ্ডের পর তিনি আটকা পড়েছিলেন ওই ভবনে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা উদ্ধার করে আনার পর তাকে ভর্তি করা হয় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে তাকে দেখতে গতকাল বিকেলে যান ডর্ড নামের ওই প্রতিষ্ঠানের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। সহকর্মীদের দেখেই বিলাপ করছিলেন নীলিমা।
তখনও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পঞ্চম তলায় বিছানায় শুয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন তিনি। মুখে তার মাস্ক। চিকিৎসক অক্সিজেন দিয়ে রেখেছেন। স্বজন ও বন্ধুরা তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। বলছিলেন, চিন্তা করিস না, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবি।
ডর্ডের পরিচালক সেঁজুতি দৌলা বলেন, এফ আর টাওয়ারের তৃতীয়, বারো, তেরো, ষোলো ও উনিশ তলায় তাদের অফিস। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তাদের অফিসের অনেকে ভেতরে আটকা পড়েন। কেউ আবার নানাভাবে ভবন থেকে নেমে আসতে সক্ষম হন।
আগুন লাগার সময় সেঁজুতি ওই ভবনে ছিলেন। খবর পেয়েই তিনি ছাদে চলে যান। ছাদ থেকে লাফিয়ে পাশের বহুতল ভবনের ছাদে ওঠেন তিনি। এরপর পাশের ভবন দিয়ে নিচে নেমে নিজের জীবন বাঁচান।
সেঁজুতি দৌলা জানান, ছাদে ওঠার আগে ইমার্জেন্সি সিঁড়ি দিয়ে নামার চেষ্টা করেন। তবে সেই সিঁড়ির কাছে গিয়ে দেখেন আগুনের তাপে সিঁড়িতে টেকা যাচ্ছে না। আগুনের কুণ্ডলী পুরো সিঁড়িতে ছড়িয়ে পড়ে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত হয়েছেন মোতাহার হোসেন নামে আরেক যুবক। তিনি বলেন, ১৪ তলায় ছিলাম। আগুন লাগার পর কী করব বুঝতে পারিনি। এরপর মাথা ঠাণ্ডা করে ওই ফ্লোরে বসে থাকি। ফায়ার সার্ভিস কখন আসবে- তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। মনে হচ্ছিল বেঁচে আসতে পারব না।