সিলেটের আতিয়া মহলে অভিযান: দুই বছরেও আসেনি চার্জশিট
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:০৩:১৩,অপরাহ্ন ২৫ মার্চ ২০১৯
নিউজ ডেস্ক:: দেশে-বিদেশে আলোচিত সিলেটের দক্ষিণ সুরমার আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী সেনা অভিযান ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ এর দুই বছর পূর্ণ হলো ২৪ মার্চ। সেনা কমান্ডোদের নেতৃত্বে চলা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ অভিযান চলাকালে ওই ভবনে বহু বিস্ফোরণ ঘটে এবং ব্যাপক গোলাগুলি হয়। ওই অভিযানে চার জঙ্গি, র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালকসহ ১১ ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
বিস্ফোরণে আহত হয়েছিলেন র্যাব, পুলিশ, সাংবাদিকসহ অনেকেই। সেই আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযান এবং অভিযান চলাকালে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়েরকৃত দুটি মামলাই এখনও তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তবে কোনো চার্জশিট দিতে পারেনি তারা।
ইতোপূর্বে এই দুই মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতাররা হলেন, আতিয়া মহলে অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে আত্মাহুতি দেয়া নারী জঙ্গি মঞ্জিয়ারা বেগম ওরফে মর্জিনার বোন আর্জিনা (১৯) ও তার স্বামী জহুরুল হক ওরফে জসিম (২৫) এবং অপর আসামি হাসান (২৬)।
চট্টগ্রামের সিতাকুন্ডে সংঘঠিত জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ এই তিন আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর থেকে তারা চট্টগ্রাম কারাগারে ছিলেন। চট্টগ্রাম থেকে এনে তাদের সিলেটের আদালতে হাজির করা হয়।
সূত্র জানায়, সিলেট মহানগরের দক্ষিণ সুরমার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের শিববাড়ির ‘আতিয়া মহলে’ সেনাবাহিনীর ১১১ ঘণ্টা চালানো ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ এর দুই বছর পূর্ণ হয়েছে গতকাল রোববার। ২০১৭ সালের ২৪ মার্চ ভোর থেকে সেই আতিয়া মহলে অভিযান শুরু হয়ে ৫ দিন পর সফলতার মুখ দেখে সেনাবাহিনী।
আতিয়া মহলের জঙ্গিবিরোধী ওই অভিযানে প্রথমে আতিয়া মহল ঘেরাও করেছিল এসএমপি পুলিশ। পরে ঢাকা থেকে আসে সিআইডির বিশেষ বাহিনী ‘সোয়াট’ দল। কিন্তু চূড়ান্ত অভিযানে অংশ নেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা। চৌকষ সেনা সদস্যরা সেই অভিযানের নাম দেন ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’। অভিযান শেষে আতিয়া মহল থেকে চার জঙ্গির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর কমান্ডোদের অভিযান চলাকালে আতিয়া মহলের পাশেই একটি সড়কে দুই দফা বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন সাতজন।
আতিয়া মহলে ৫ দিন ব্যাপী শ্বাসরুদ্ধকর জঙ্গিবিরোধী অভিযান এবং অভিযান চলাকালে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল এসএমপির মোগলাবাজার থানায়। মামলার তদন্তভার প্রথমে পুলিশের হাতে থাকলেও পরে তা স্থানান্তর করা হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হাতে। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান পিবিআইয়ের পরিদর্শক আবুল হোসেন।
২৪ মার্চ ২০১৭ থেকে ২৪ মার্চ ২০১৯ দুই বছর অতিবাহিত হলেও নিহত ৪ জঙ্গির মধ্যে মাত্র একজনের পরিচয় শনাক্ত করেছে আইন শৃংখলা বাহিনী। বাকি ৩ জনের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে রোববার এসএমপি উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা জানান, ২০১৭ সালের ২৪ মার্চ দক্ষিণ সুরমার আতিয়া মহলে জঙ্গি অভিযানের পর ‘দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এরপর পুলিশ কিছু সাক্ষ্যপ্রমাণ ও আলামত সংগ্রহ করেছিল। সিআইডিও কাজ করছিল। পরে তদন্তভার উচ্চমহলের নির্দেশে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে বর্তমানে মালাটি তদন্তাধীন আছে।
সিলেট পিবিআই পরিদর্শক আবুল হোসেন জানান, ২০১৭ সালের মে মাসে মামলা দুটি আমরা পাই। এখনও তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে। খুব শিগগির চার্জশিট দেয়া হবে। ইতোপূর্বে আরও তিনজনকে দুটি মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে। আর আতিয়া মহলে নিহত চার জঙ্গির মধ্যে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মর্জিনার পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে।