হঠাৎ করেই অজ্ঞান হয়ে যাওয়া: জেনে রাখুন কিছু তথ্য
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৫৩:২৯,অপরাহ্ন ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪
লাইফ স্টাইল ডেস্ক:: হঠাৎ জ্ঞান হারানো সাধারণত ক্ষণস্থায়ী, যা হওয়ার প্রধান কারণ মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যাওয়া। কখনো কখনো এটা মারাত্মক কোন অসুখের কারণে হয়ে থাকে। এ জন্য হঠাৎ অজ্ঞান হলে তা অবহেলা না করে জরুরিভাবে নিতে হবে যতক্ষণ না এর কারণ জানা যায় এবং তার চিকিৎসা করা না হয়। তবে বারবার জ্ঞান হারালে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
হঠাৎ জ্ঞান হারানোর কারণ
১। নিউরোকার্ডিওজেনিকের ( রিফ্লেক্স বা ভেসোভেগাল ) সময় রক্ত চাপ কমে যায়। ফলে হঠাৎ ক্ষণিকের জন্য মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ তথা অক্সিজেন কমে যাওয়ায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এ ধরনের অবস্থা হয়ে থাকে যখন মানুষ
– হঠাৎ রক্ত দেখে ভয় পায়
– গরিলা হঠাৎ সামনে এসে মুখ ভেংচি দেয়
– নিজের কোন নিকট আত্মীয়ের মৃত্যু সংবাদ শুনলে
– অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে
– গরম ও বন্ধ স্থানে অনেকক্ষণ আটকা থাকলে
২। অকুপেশনাল- এ ধরনের অবস্থা শরীরের কিছু কাজের সময় হতে পারে। যেমন
– কাশি দেয়ার সময়
– মলত্যাগের সময়
– বেশি ওজন তোলার সময়
– হাঁচি দিলে
– প্রসাব করার সময়
৩। স্থান পরিবর্তনে রক্তচাপ কমে যায়। কখনো কেউ বসা অথবা শোয়া অবস্থা থেকে হঠাৎ দাঁড়িয়ে যান, তখন জ্ঞান হারাতে পারেন। কারণ এই সময় রক্ত শরীরের ওপরের অংশ থেকে নিচে অর্থাৎ পায়ে চলে আসে কিন্তু স্নায়ুতন্ত্রের প্রভাবে যদি রক্তচাপ ঠিক না থাকে তখন মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ কমে যায়। কারণ-
– শরীরে অত্যধিক পানিশূন্যতা, ফলে রক্তচাপ কমে যায়
– ডায়াবেটিস রোগের সঠিক চিকিৎসা না করলে বারবার প্রসাব হয়ে বা রক্তে সুগার বেশি থাকলে স্নায়ুর কার্জক্ষমতা হ্রাস পেলে
– কিছু কিছু ওষুধ যেমন- বেটা ব্লকার, মূত্রবৃদ্ধিকারী ওষুধ, অন্যান্য উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খেলে
– মদ পান করে জ্ঞান হারান
– পারকিনসন ডিজিজে স্নায়ুদুর্বলতায় রক্তচাপ কমে গেলে
– হঠাৎ মাথা একদিকে ঘুরালে, কলার বা টাই বেশি চেপে পরলে, অথবা শেভ করার সময় ঘাড়ে ক্যারোটিড সাইনাসে চাপ পড়লে ( ৫০ বছরের বেশি বয়সে পরুষের এটা হতে পারে।
তাছাড়া, হৃতপিন্ডের কারণেও জ্ঞান হারাতে পারেন যেমন- অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, হার্টের ভাল্ব সরু হয়ে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ বা হার্ট অ্যাটাক হলে।
হঠাৎ অজ্ঞান হওয়ার আগে কী কী লক্ষন দেখা যায়
– পা ভারী বোধ
– চোখে ঝাপসা দেখা
– গরম বোধ হওয়া
– মাথা ঘোরা ও মাথা পাতলা বোধ হওয়া
– বমির ভাব
– শরীর ঘেমে যাওয়া
– বমি ও হাই তোলা
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন
জ্ঞান হারানোর আগে যদি বুকে ব্যথা হয়, বুক ধড়ফড় করে, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হয়-
– জ্ঞান হারিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হলে
– জ্ঞান হারানোর আগে প্রসাব বা পায়খানা জয়ে থাকলে
– হার্টের অসুখ থাকলে
– গর্ভবতী হলে
– বারবার জ্ঞান হারালে
– ডায়াবেটিস থাকলে
যখন জ্ঞান হারানোর আশঙ্কা দেখা দেয় তখন যা করবেন
– দাঁড়ানো অবস্থা থেকে বসে বা শুয়ে পড়ুন
– বসতে পারলে মাথাটা দুই হাঁটুর মাঝখানে রাখুন
– উঠে দাঁড়ানোর সময় প্রথমে শোয়া থেকে বসুন, বসা থেকে আস্তে আস্তে উঠুন
কাউকে অজ্ঞান হয়ে যেতে দেখলে যা করবেন
– মুখ ওপরের দিকে রেখে চিত করে শোয়ান
– এ অবস্থায় শ্বাস-প্রশ্বাস নিলে পা দুটি ওপরে তুলুন, যাতে হার্ট থেকে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি পায়
– বেল্ট, টাই, কলার, আঁটসাঁট পোশাক ডিলা করুন
– অবস্থার উন্নতি হলে সাথে সাথে দাঁড় করাবেন না
– শ্বাসনালী বন্ধ কিনা দেখুন
– পড়ে যেয়ে কোথাও কেটে রক্তক্ষরণ হলে তা চাপ দিয়ে বন্ধ করুন
– দেরি না করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসকের সহায়তা নিন