সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে শুধু স্ত্রী দেখা করার অনুমতি পাবেন
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:৩৮:১০,অপরাহ্ন ১৪ মে ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
ভারতের মেঘালয়ে বিচারাধীন বন্দি হিসেবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সালাহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে দেখা করতে পারলেন না তার পরিবারের কয়েকজন সদস্য। রাজ্য পুলিশ সূত্রে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, শিলংয়ে এসে উপস্থিত হওয়া এই ব্যক্তিদের সঙ্গে সালাহ উদ্দিন আহমেদের সম্পর্ক কী, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে না পেরেই তারা দেখা করার অনুমতি দেননি।
এরইমধ্যে সালাহ উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ ভারতের ভিসা পেয়েছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু তার আগেই পরিবারের অন্য সদস্যরা ভিসা জোগাড় করে বৃহস্পতিবার সকালে শিলংয়ে হাজির হন। মোট ছয় জনের এই দলটির নেতৃস্থানীয় ভূমিকায় ছিলেন হুমায়ুন রশিদ নামে এক ব্যক্তি, যিনি নিজেকে সালাহ উদ্দিন আহমেদের সম্পর্কিত ভাই বলে পরিচয় দেন।
রশিদ ছাড়াও ওই দলে বিএনপির দুজন ছোট মাপের নেতাও ছিলেন – যাদের নাম আবদুল লতিফ ও স্বপন। সড়কপথে বাংলাদেশের ডাউকি সীমান্ত পেরিয়ে তারপর গাড়িতে করে তারা আজ মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে এসে হাজির হন।
ছয় জনের এই দলটি নানা খাবার-দাবার ও কাপড়-চোপড় ব্যাগে নিয়ে প্রায় সাতসকালেই সিভিল হাসপাতালে চলে আসেন। নিজেদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষের কাছে তারা নিজেদের সালাহ উদ্দিন আহমেদের আত্মীয় ও বন্ধু বলে পরিচয় দেন এবং দেখা করার অনুমতি চান। প্রথমে পুলিশ তাদের অনুরোধে রাজিও হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু পরে তাদের অপেক্ষা করতে বলা হয়। ইতোমধ্যে সালাউদ্দিন আহমেদের পাহারার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা যোগাযোগ করেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।
এদিকে সালাহ উদ্দিন আহমেদের আত্মীয় পরিচয়ে একদল লোক যে তার সঙ্গে দেখা করার অপেক্ষায় আছেন, সে খবর পৌঁছায় মেঘালয়ের পুলিশ-প্রধান রাজীব মেহতার কাছে। তিনি সব শুনেই পত্রপাঠ নির্দেশ পাঠান – বিচারাধীন বন্দির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতম পরিবারের সদস্য বা আইনজীবী ছাড়া কেউই দেখা করার অনুমতি পাবেন না। ইন্টারপোল থেকে ইতোমধ্যেই যার নামে রেড অ্যালার্ট নোটিশ জারি করা হয়েছে, যার তার সঙ্গে তাকে যে দেখা করতে দেওয়া যাবে না সেটাও তিনি স্পষ্ট করে দেন।
তবে সালাহউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ শিলংয়ে এসে তার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তিনি যে দেখা করার অনুমতি পাবেন– মৌখিকভাবে সে নির্দেশও পুলিশপ্রধান জানিয়ে রেখেছেন।
ওদিকে ততক্ষণ সিভিল হাসপাতাল চত্বরেই অপেক্ষা করছিলেন হুমায়ুন রশিদ ও তার দলবল। বেশ কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করার পর বেলা আড়াইটে নাগাদ তারা জেনে যান আজ আর দেখা করার কোনও আশা নেই। সঙ্গে আনা ফলমূল ও কাপড়চোপড় নিয়েই তারা অগত্যা ফিরে যান।
ওদিকে কথিত আত্মীয়-বন্ধুদের ফিরিয়ে দিলেও মেঘালয়ের পুলিশ কিন্তু আজ আনুষ্ঠানিকভাবে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে জেরা করতে শুরু করেছে। দুপুরের দিকে রাজ্য পুলিশের কর্মকর্তারা হাসপাতালের সেলের ভেতরই বেশ কিছুক্ষণ তার সঙ্গে একান্তে কথা বলেছেন। তবে সেই জিজ্ঞাসাবাদে সালাহ উদ্দিন আহমেদ কী বলেছেন সে বিষয়ে তারা একেবারেই মুখ খুলতে রাজি হননি।
ইস্ট খাসি হিলস পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে বিবিসিকে জানানো হয়েছে, সালাহ উদ্দিন আহমেদ পুরোপুরি সুস্থ বোধ করলে ও ডাক্তারদের অনুমতি পেলেই তাকে আদালতে পেশ করা হবে। ফরেনার্স অ্যাক্টে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে তার বিরুদ্ধে যে মামলা রুজু হয়েছে তাতে তাকে এখনও আদালতে পেশ করা সম্ভব হয়নি।
সূত্র : ট্রিবিউন