সংঘর্ষ কেন্দ্রে তালা ক্যাম্প ভাঙচুর
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:১৭:৩৮,অপরাহ্ন ২৮ এপ্রিল ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভোটগ্রহণ শুরুর ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই নানা অনিয়মের ঘটনা ঘটে। কোনোও কেন্দ্রে সংঘর্ষ, কোনো কেন্দ্রে তালা দেয়া আবার কোথাও ভোট কেন্দ্রের বাইরে ক্যাম্প ভাঙচুর করা হয়। এসব অভিযোগ তুলে অনেক প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম সিটির সিবিএস কোলোনি স্কুল কেন্দ্রে ভোট শুরুর ঘণ্টা খানেক পরেই বাইরে থেকে তালা মেরে দেয়া হয়। এছাড়া পাহাড়তলী থানার ঝাউতলা রেলওয়ে হাসপাতাল স্কুল কেন্দ্র, লালখান বাজার আরোগ্য দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্রে, ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদের দায়য়াপাড়া সৈয়দ মৌলভী স্কুল কেন্দ্র, গোসাইল ডাঙ্গা মকবুলিয়া ভোটকেন্দ্র, কেডি দুভাস কেন্দ্র, তারেক মিয়া স্কুল কেন্দ্রে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের ঢুকতে দেয়া হয়নি।
আ জ ম নাসিরের সমর্থকরা এসব কর্মকাণ্ড করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মনজুর আলমের মিডিয়া টিমের প্রধান সাইফুল ইসলাম শিল্পী। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে মনজুর আলম নির্বাচন বর্জন করেন।
অন্যদিকে, নাসিরাবাদ এলাকার পলিটেকনিক এলাকার ৪টি ভোটকেন্দ্রে কাউকে ঢুকতে দেয়নি আ জ ম নাসিরের সমর্থকরা। এ কেন্দ্রের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মনজুর আলমের সব পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ওইসব কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা মুখ খুলতে রাজি হননি। পুলিশও নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন সাইফুল ইসলাম শিল্পী।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩৭ নং ওয়ার্ডের পোগোজ স্কুলকেন্দ্রে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এম এম পারভেজ রেজার (ট্রাক্টর) পোলিং এজেন্ট ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রহমান মিয়াজীর (ঘড়ি) পোলিং এজেন্টদের মধ্যে সকাল ৯টার দিকে হাতাহাতি হয়। এ খবর কেন্দ্রের বাইরে ছড়িয়ে পড়লে দু’পক্ষের অন্তত দুই শতাধিক সমর্থক কেন্দ্রে ঢুকে পড়ে। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। এরপরই ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় আওয়ামী লীগের এক বিদ্রোহী প্রার্থীর ২ পোলিং এজেন্ট প্রকাশ শুর (৪০) ও বাদল (৩৯) আহত হন। তাদের দু’জনেরই মাথা ফেটে গেছে। তারা চিকিৎসাধীন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলেও ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়।
ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র পদপ্রার্থী তাবিথ আউয়ালের বাবা আব্দুল আউয়াল মিন্টু ভোট দিতে আসেন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে। ভোট দিয়ে বেরিয়ে গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন, তাদের পোলিং এজেন্টরা আসতে পারছেন না। এরই মধ্যে ২টা ক্যাম্প ভাঙার খবর পেয়েছি। মানারত স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং গুলশান মডেল কলেজের দু’টি ক্যাম্প দখল করেছে সরকার সমর্থিত প্রার্থীর লোকজন।’
ঢাকা উত্তর সিটির নিকুঞ্জ মডেল কলেজ কেন্দ্রে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তাবিথ আউয়ালসহ অন্যান্য মেয়র প্রার্থীর কোনো এজেন্টকে কেন্দ্রে দেখা যায়নি। এদিকে, তেজগাঁও সরকারি বালিকা বিদ্যালয়েও তাবিথ আউয়ালের কোনো এজন্টেকে দেখা যায়নি। সকাল ৮.৫০ মিনিটি পর্যন্ত বিএনপি সমর্থিত এই প্রার্থীর কোনো এজেন্ট ভোট কেন্দ্রে আসার খবর পাওয়া যায়নি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের সায়েদাবাদ এলাকায় শহীদ জিয়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং আর কে চৌধুরী স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আতিকুল্লাহর ঘড়ি প্রতীকের পোলিং এজেন্টকে ঢুকতে দেননি আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের লোকজন। এমন অভিযোগ করে আতিকুল্লাহ বলেন, এছাড়া আমাদের ভোট ক্যাম্পের টেবিল ভেঙে ফেলা হয়েছে।
সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত শাজাহানপুর মির্জা আব্বাস মহিলা ডিগ্রি কলেজ, শাজাহানপুর আব্বাস স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও শাজাহানপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালল কেন্দ্র ঘুরে মির্জা আব্বাসের কোনো এজেন্টকে পাওয়া যায়নি। শুধু সাইদ খোকনের এজেন্টসহ অপর ও দুই কাউন্সির মিলে মাত্র তিন এজেন্ট রয়েছে।
সকালে মেয়রপ্রার্থী মির্জা আব্বাসের নির্বাচনী প্রেসউইংয়ের কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কমপক্ষে ৪০টি ভোটকেন্দ্র দখল করেছে। সেখানে তাদের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে কোনো গণমাধ্যম কর্মীকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
ঢাকা উত্তর সিটির উত্তররার স্কলাস্টিকা ভোটকেন্দ্রে জাল ভোট দিতে দেখা গেছে। এসব ভোট দিচ্ছে অপ্রাপ্তবয়স্করা। তারা ভোট দিচ্ছে মেয়র প্রার্থী আনিসুল হকের ঘড়ি মার্কায়।
ঢাকা দক্ষিণে সকালে ভোট উৎসবের শুরু হতে না হতেই ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রিজাইডিং অফিসাররা। বংশাল থানার ২৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় এমন অভিযোগ এসেছে সুরিতলা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র থেকে।
ঢাকা উত্তরের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদপুরের বেঙ্গলি মিডিয়াম হাইস্কুল ও মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে বেলা সোয়া ১১টার দিকে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মীসমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শফিকুল ইসলাম সেন্টু কেন্দ্রটি পরিদর্শনে এলে ওই ওয়ার্ডের স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম ইমতিয়াজ খান বাবুলের কর্মী সমর্থকরা তাকে ও তার কর্মীদের ধাওয়া দেয়। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। পরে কেন্দ্র দুটিতে কিছু সময়ের জন্য ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে।