শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদের প্রচারণা বন্ধ করল ফেসবুক
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৩৪:৫৫,অপরাহ্ন ২৮ মার্চ ২০১৯
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলা চালানোর সময় ঘাতক ব্রেনটন টেরেন্টের ফেসবুক লাইভ কেন প্রচার করেছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক সে বিষয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। হত্যাযজ্ঞের লাইভ প্রচার করায় সমালোচনা শুনতে হয়েছিল ফেসবুককে।এ প্রেক্ষিতে শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদের ‘স্তুতি বা প্রশংসা, সমর্থন এবং প্রতিনিধিত্বমূলক’ কোন ধরণের পোষ্ট ব্লকের ঘোষণা দিয়েছে ফেসবুক।
বুধবার এক ঘোষণায় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহ থেকে শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদের প্রশংসা, সমর্থন এবং প্রতিনিধিত্বমূলক’ কোন ধরণের পোস্টই আর এ মাধ্যমে শেয়ার করা যাবে না। এ বিষয়ে ফেসবুক তিন মাস পর্যালোচনা করেছে জানিয়ে ওই ব্লগ পোস্টে বলা হয়, ‘সুশীল সমাজ এবং একাডেমিকদের সঙ্গে তিন মাস আলোচনার পর সংস্থাটি বুঝতে পেরেছে শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদকে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদ ও সংগঠিত ‘হেট ক্রাইমে’র থেকে আলাদা করা যাবে না।
এ ছাড়া যেকোন জঙ্গি মতাদর্শ প্রচারে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি চিহ্নিত এবং ব্লক করার ক্ষেত্রে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক।এ ধরণের জিনিসপত্র ফেসবুকে যারা সার্চ করবেন তাদের তথ্য সরাসরি উগ্র জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে এমন সংস্থার কাছে পাঠানো হবে বলেও জানায় সংস্থাটি।
গত ১৫ মার্চ অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত শেতাঙ্গ সন্ত্রাসী ব্রেন্টন ট্যারেন্ট একটি গো-প্রো ক্যামেরা ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি সরাসরি সম্প্রচার করে। তার এ লাইভ ভিডিওর মাধ্যমে বীভৎস এ হত্যাকাণ্ডটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে ।
১৭ মিনিটের ভিডিওটি ফেসবুক ছাড়াও ইউটিউব ও টুইটারে শেয়ার হলে পরে তা সরিয়ে নেওয়া হয়।
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরদার্ন ভিডিওটি মুছে ফেলার জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন ফেসবুকের কাছে জানতে চাইবেন বন্দুকধারী ওই হত্যাযজ্ঞ কীভাবে লাইভ প্রচার করতে পারল।
ক্রাইস্টচার্চের ঘটনার পর ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে জঙ্গি মতাদর্শ প্রচারের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে যাতে ব্যবহার না করা হয়, সেজন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অনেকেই।নিউজিল্যান্ডের ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডান বলেছেন, এক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছিল ‘প্রকাশক, শুধু পোষ্টম্যান বা বার্তাবাহক না’। হত্যাযজ্ঞের লাইভ প্রচার করায় ফেসবুক ও গুগলে বিজ্ঞাপন দেয়া বন্ধ করেছিল নিউজিল্যান্ডের বৃহত্তম কোম্পানিগুলো।
এএসবি ব্যাংক, লোট্টো এনজেড, বার্গার কিং, ও স্পার্কের মতো ব্র্যান্ডের মতো নিউজিল্যান্ডের প্রতিষ্ঠানগুলো অনিয়ন্ত্রিত ফেসবুক লাইভের প্রতিবাদ জানাতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ইন্টারনেটে অনিয়ন্ত্রিত কনটেন্টের কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে তার বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
এদিকে ফরাসী মুসলমানদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি গ্রুপ ওই ফুটেজ ব্যবহারের জন্য ফেসবুক এবং ইউটিউবের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করছে।