লাশের আশায় আজও কাঁদছেন পিতা-মাতা
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:১৫:৪২,অপরাহ্ন ২৫ এপ্রিল ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
কাঁদতে কাঁদতে চোখের পলকে চলে গেল সাভার রানা প্লাজা ধসের ২ বছর। আর এ ২ বছর ধরেই মেয়ের ছবি বুকে নিয়ে কাঁদছে। অপেক্ষায় দিন গুনছে কবে ফিরবে মেয়ের লাশ। বছরের পর বছর শেষ হলেও অপেক্ষার পালা শেষ হয় না বৃদ্ধ পিতামাতার।
দিন মজুর বাবা ৪ সন্তান নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনানিপাত করছে। ক্ষুধার জালা মেটাতে ২০১০ সালের শেষের দিকে প্রতিবেশীর হাত ধরে সাভারে রানা প্লাজায় পোশাক কর্মীর কাজ নেয় পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ভুলবাড়িয়া ইউনিয়নের স্বরগ্রামের আসাব আলী খন্দকারের মেয়ে মোছা. ফারজানা খাতুন (১৮)।
ভাগ্যে সহায় হলো না, মাত্র ২ বছরের মাথায় সেই পোশাক কারখানা ভেঙে নিশ্চিহ্ন হলো একটি পরিবারের সব ইচ্ছা। ট্রাজিডিতে বহু প্রাণ হানি ও আহত হয়। নিখোঁজ থাকে কয়েক’শ পোশাক কর্মী। এ নিখোঁজের তালিকায় যোগ হয় ফারজানা খাতুন। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে পোশাক কলের ১ হাজার ১৩১ জনের মৃত দেহ উদ্ধার হলেও সেখানে ছিল না ফারজানা খাতুনের লাশ। কর্মস্থলের পরিচয় পত্র প্যানটম, আইডি নং ১৬৬৩, অপারেটর, সেকশন-সুয়িং, লাইন ডি-অভেন, ৪র্থ তলা।
সরেজমিনে নিখোঁজ ফারজানার বাড়িতে গেলে ফারজানার বৃদ্ধ বাবা মেয়ের ছবি বুকে নিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে বলেন, চোখের পলকে ২ বছর পার হলেও মেয়ের লাশের সন্ধান পেলাম না। পাশে অভাগী মা নুর নাহার শোকে পাথর শুধু আচলে চোখ মুছেন, কোন কথা বলতে পারেন না। জানা যায় লাশ শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য মা-ভাইয়ের রক্ত নেয়া হয়েছে।
আজও ফারজানার লাশ বা কঙ্কালের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ হত দরিদ্র পরিবার মাত্র ৯,০০০ টাকা অনুদান পেয়েছেন। এর বাইরে আর কিছুই পাননি তারা। কেউ তাদের খোঁজ খবর নেয় না। আর কিছু না হোক মেয়ের লাশও যদি তারা দেখতে পেতেন তাতেও তারা শান্তিতে মরতে পারতেন বলে জানান ফাজানার বাবা-মা। তারা কর্তৃপক্ষের নিকট তার মেয়ের লাশ শনাক্তকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন।