লম্পট গৃহকর্তার বিরুদ্ধে নিজের মৃত্যু দিয়ে চুড়ান্ত প্রতিবাদ এক অসহায় কিশোরীর!
প্রকাশিত হয়েছে : ২:২৪:৫৯,অপরাহ্ন ০৩ ডিসেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক::
নিজের সম্ভ্রমের অপমান সইতে না পেরে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানল কিশোরী। অনেক অভিযোগের পরও যৌন নিপীড়ক গৃহকর্তার বাড়িতে কাজ করতে জোর করায় মায়ের ওপর অভিমান করে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় রুনা।
সচেতন সমাজের বিবেককে প্রশ্নবিদ্ধ করে নগরীর সদরঘাটে গৃহকর্তার যৌন হয়রানি ও শারীরিক নির্যাতনের অপমান সইতে না পেরে সরব প্রতিবাদে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে রুনা আক্তার (১৪) নামে এক গৃহকর্মী। প্রতিনিয়ত গৃহকর্তার যৌন নিপীড়নের অপমান সইতে না পেরে এক পর্যায়ে রুনা তার মা এবং লম্পট গৃহকর্তার উপস্থিতিতেই রান্নাঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এসময় ঐ কিশোরীর মা রোকেয়া ও গৃহকর্তা আমিন ভেজা কাপড় ও কম্বল চাপা দিয়ে আগুন নেভান। এরপর ওই অগ্নিদগ্ধ রুনাকে চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তবে টানা চারদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে সে মঙ্গলবার ভোরেমৃত্যুর কাছে হার মানে কিশোরী ।
মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রুনার মৃত্যু হয়।
সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, নগরীর সদরঘাট থানার আইস ফ্যাক্টরি রোডে টিএম টাওয়ারের চতুর্থ তলায় সাইকেল পার্টস আমদানিকারক ও বিক্রেতা আমিন আহমেদ রোকনের (৪৫) বাসায় রুনা কাজ করত রুমা। প্রায় ৬ মাস আগে রুনার মা রোকেয়া বেগম তাকে অভিযুক্ত আমিন আহমেদের বাসায় কাজ করতে দেন।
ওসি আরো জানান, গত ২৯ নভেম্বর দুপুর ১টার দিকে রোকেয়া বেগম মেয়েকে দেখতে গেলে রুনা জানায়, গৃহকর্তা আমিন তাকে প্রায়ই যৌন হয়রানি করে। অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হলে মারধর করে। তাই সে আর ওই বাসায় কাজ করবে না। এতকিছু শোনার পরেও রোকেয়া তার মেয়েকে আরো ২-৩ মাস কাজ করার জন্য বলেন। কাজ করতে রাজি না হওয়ায় রোকেয়া তার মেয়েকে মারধর করে। এসময় মায়ের উপস্থিতিতে গৃহকর্তা আমিনও রুনার গায়ে হাত তোলেন।
ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এ ঘটনায় রুনার মা রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে গৃহকর্তা আমিন আহমেদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা করেন। আমরা আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছি।’
গৃহকর্মী রুনা আক্তার নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার দক্ষিণ হাতিয়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে। তার মা রোকেয়া আক্তার নগরীর কর্ণফুলী থানার জহির মাঝির কলোনি সৈন্যের টেক এলাকায় থাকেন।