মেঘের উপর ভাসমান শহর তৈরির পরিকল্পনা
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৪৩:৫৫,অপরাহ্ন ২৩ ডিসেম্বর ২০১৪
তথ্য প্রযুক্তি ডেস্ক:: পৃথিবীর নিকটতম প্রতিবেশী গ্রহ শুক্র। কেমিক্যাল কম্পোজিশন ও আরে বহরে এই গ্রহ পৃথিবীর কাছাকাছি হলেও, শুক্র বায়ুমণ্ডল ও সারফেস কন্ডিশন পৃথিবীর থেকে একেবারেই আলাদা। এর আগে শুক্র পৃষ্ঠে যে প্রোবগুলো পাঠিয়েছিল পৃথিবী তাদের একটাও শুক্রের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে ২ ঘণ্টাও টিকে থাকতে পারেনি। ধ্বংস হয়ে গেছে।
শুক্রর বায়ুমণ্ডলীয় চাপ পৃথিবীর তুলোনায় ৯২গুণ বেশি। গড় উষ্ণতা ৪৬২ ডিগ্রি। গ্রহটার এখানে ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এক গাদা জীবন্ত আগ্নেয়গিরি। মধ্যাকথা, শুক্রের বুকে পাকাপাকি বাসা বাধাতো দূরের কথা অদূর ভবিষ্যতে সে গ্রহে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনাও মোটামুটি কল্পবিজ্ঞানের পাতাতেই আবদ্ধ।
তবে হাল ছাড়তে নারাজ নাসা। শুক্রের মেঘ বলয়ের মধ্যে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা করছে তারা।
দ্য হাই অলটিট্যুইড ভেনাস অপরেশনাল কনসেপ্ট বা হ্যাভক (HAVOC) নামের একটি কাল্পনিক মহাকাশযান ডিজাইন করেছে নাসার সিস্টেম অ্যানালিসিস অ্যান্ড কনসেপ্ট ডিরেক্টোরেট। বায়ুর থেকেও হালকা এই এয়ার রকেট শুক্রের অ্যাসিড মেঘের মধ্যে স্বচ্ছন্দে ৩০দিন টিকে থাকতে পারবে। এই রকেটের মধ্যে থেকে মহাকাশচারীরা সেই সময় শুক্রের বায়ুমণ্ডল সম্পর্কিত ডেটা সংগ্রহ করতে পারবেন।
এমনিতে শুক্রের বুকে কোনও মানুষ বেঁচে থাকতে পারবেন না। তবে এই গ্রহের চারপাশে ছড়িয়ে থাকা অ্যাসিড মেঘের থেকে ৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় কিছুটা পৃথিবীর মত অবস্থা রয়েছে। এই উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলের চাপ প্রায় পৃথিবীর মত, মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর থেকে কিছুটা কম। উষ্ণতা মোটামুটি ৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেটা কিছুটা সমস্যার হলেও কিছুদিন এই উষ্ণতা সহ্য করে মহাকাশচারীরা থাকতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এই উচ্চতায় সৌর বিকিরণ অনেকটা কানাডার মত।
শুক্র অভিযান নিয়ে নাসার পরিকল্পনার প্ল্যান দীর্ঘ। প্রাথমিকভাবে রোবটিক প্রোব পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সেই প্রোব ফিরে এসে যে ডেটা দেবে তার উপর ভিত্তি করে ৩০দিনের জন্য শুক্রের উপরে মহাকাশচারীদের নিয়ে ভাসার পরিকল্পনা রয়েছে। তারপর হয়ত এক বছরের জন্য দু’জন মহাকাশচারী পারি দেবেন শুক্রের মেঘে। তবে, আসল উদ্দেশ্য শুক্রের উপরে একটি ভাসমান মেঘ শহর তৈরি করা, যেখানে স্থায়ীভাবে মানুষ বসবাস করতে পারবে।
তবে, আগামী দু’দশক অন্তত লাগবে এই পরিকল্পনা কার্যকর করতে। তবে এই গবেষণা যদি সফল হয় তাহলে হয়ত একদিন পৃথিবীর বাইরেও মানুষের কলোনি স্থাপন সম্ভব হবে।