মিলন বিহীন বিবাহিত জীবন, কতটা ক্ষতিকর?
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:১৭:০৯,অপরাহ্ন ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক::
সেক্সবিহীন বিবাহিত জীবন যাপনকারীর সংখ্যা বিশ্ব জুড়ে বাড়ছে। খোদ কামসূত্রের দেশ ভারতেও এনিয়ে জরিপে দেখা যায় ট্রেন্ড পশ্চিমাদের পথেই। ২০০৪ সালের জরিপে বিবাহিত দম্পতিদের ৩৭ শতাংশের সপ্তাহে একবারের বেশি যৌনমিলনের অভিজ্ঞতা হলেও সংখ্যাটি এখন কমে ২০ এর নিচে নেমেছে। আমেরিকায় ১৯৯৪ সালের এক জরিপে দেখা গিয়েছিল ২ শতাংশ বিবাহিত দম্পতি বিগত এক বছরে একবারও সেক্স করেননি। আর ২০ শতাংশ আমেরিকান বিবাহিত দম্পতি বছরে ১০ বারের কম সেক্স করেছেন।বাংলাদেশের বিবাহিতদের যৌন জীবনের কি অবস্থা সেটা অবশ্য জানা যায় না। তবে যেহারে বিদ্যুৎ যাচ্ছে আর পানির সঙ্কট চলছে তাতে ঢাকা শহরের বিবাহিতরা যদি সেক্স কমিয়ে দিয়ে থাকেন তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
ভারতে সেক্সবিহীন বিবাহিত জীবন যাপনকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে বলা হয়- ভারতীয় এখনকার তরুণরা মনে করে শারীরিক মিলন কোনো জরুরি বিষয় নয়। বিশেষ করে বিত্তের পেছনে ছুটে বেড়ানো দম্পতিদের কাছে অনেক বেশি দরকারি হলো অফিসের প্রমোশন, বড় ব্যবসা, বসকে খুশি করা, অফিসের গাদা গাদা কাজ করা, দামী গাড়ি কেনা, ভালো রেস্টুরেন্টে খাওয়া, সন্তানকে দামি স্কুলে পড়ানো এবং সেগুলো নিয়ে গল্প করা। দিনে এতো বেশি কাজের তালিকা তাদের থাকে যে দিনের শেষে তালিকার শেষ দিকে থাকা সেক্স ঘুমের মধ্যেই চলে যায়!
এই ধরনের বিবাহিতদের জীবনে যে সেক্স নিয়ে অতৃপ্তি নেই তাও আবার বলা যাবে না। যেকারণে ভারতের জরিপ থেকে দেখা যায় তুলনামূলকভাবে কম ব্যস্ত জীবনের জয়পুরে যৌনজীবনের তৃপ্তি যেখানে ৭৪ শতাংশ সেটা দিল্লীতে মাত্র ১২ শতাংশ।অনেকে আবার মনে করেন সেক্স হলো রাজা বাদশাহ শেখ আর অলস মানুষদের জন্য। কেউ কেউ অলস শব্দের প্রতি আপত্তি জানিয়ে বলে থাকেন বেকার মানুষদের জন্য হলো সেক্স! তাদের যুক্তি হলো- সেক্স করার জন্য যে পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া দরকার সেটা কর্মজীবী মানুষের জন্য কঠিন।
যারা ঢাকার রাস্তায় ৫ ঘণ্টা ধরে জ্যামে বসে থেকে ৮ ঘণ্টা অফিস করে বাড়িতে ফেরেন তারা এই দলের সঙ্গে সহমত পোষণ করবেন বৈকি। কিন্তু দার্শনিক টাইপের পুরুষরা মনে করেন, একজন সফল পুরুষের পেছনে যেমন একজন নারীর অনুপ্রেরণা থাকে তেমনি নারী তৎপর হলে পুরুষ সেক্সে আগ্রহ বোধ করে।
অনেকে আবার বলতে চান বিয়ে তো ভালোবাসার জন্য। সেক্সের জন্য নয়। বিবাহিত জীবনে আবার সেক্স ছাড়া শুধুমাত্র ভালোবাসা কিভাবে হয় সেনিয়ে আরেকপক্ষ কথা বলে থাকেন। এর একটি জবাব বোধহয় এমন যে, বিয়ে আর ভালোবাসা যেমন অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত তেমনি সেক্সও। তবে গবেষকগণ দেখেছেন যে, বিয়ের তিন বছর পরে বিবাহিত জীবনে সেক্সের ভূমিকার পতন ঘটে! এজন্য অবশ্য দম্পতিদের মধ্যে একে অন্যকে দোষারোপ করার প্রবণতাও দেখা যায়।
কেউ কেউ নিজেদের জীবনের ব্যস্ততার কথা বলেন। কেউ কেউ পরামর্শ দিয়ে থাকেন, এক ঘরে দিনের পর দিন না থেকে বরং সম্ভব হলে বউকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে কিংবা নিজে বাড়ি ছেড়ে ঘুরে আসলে বিবাহিত জীবনে সেক্সের ভূমিকা বাড়তে পারে। অর্থাৎ শেয়ার বাজারের পতন না ঠেকানো গেলেও বিবাহিত জীবনে সেক্সের পতনের সমাধান আছে!
বাচ্চা কাচ্চা সেক্স জীবনে কিছুটা রাশ টানতে সহায়তা করে! অনেক ভাবেই এটা হয়। শহুরে জীবনে অনেকসময় বাচ্চা বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকে। আবার ছোট শিশুকে সামলানোর ধাক্কা সামলিয়ে সেক্স করার মতো মানসিকতা আর থাকে না!
এখন যে কারণটা বলব সেটা বেশ নতুন ধরনের! ফ্যান্টাসির নষ্ট প্রভাব! টিভি চ্যানেল আর ইন্টারনেটের কল্যাণে যেসব যৌন ছবি দেখে থাকেন দম্পতিরা তারা ব্যক্তিগত জীবনেও তেমন কিছু করতে চান যা বাস্তবসম্মত নয়, কিন্তু বিবাহিত জীবনের যৌন জীবনে তার প্রভাব পড়ে থাকে। ফ্যান্টাসির জগতে থাকার ক্ষেত্রে নারীদের চেয়ে পুরুষরা এগিয়ে। ফলে তাদের দিক থেকে সেক্সে অনীহা তৈরি হয়। যার প্রভাব বিবাহিত জীবনে পড়ে থাকে।