ভোরে উঠুন, সুস্থ থাকুন
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:৩৬:৪৯,অপরাহ্ন ২৯ নভেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক:: ‘আমি হবো সকাল বেলার পাখি, সবার আগে কুসুম বাগে উঠবো আমি ডাকি’- বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই কিশোর কবিতার মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে ভোরে ঘুম থেকে উঠলে শারীরিক দিক থেকে বেশ কিছু উপকার পাওয়া যায়। পরিবেশ আর্দ্র থাকা অবস্থায় নিয়মিত সকালে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে শরীর ও মন উভয়কেই সুস্থ, সতেজ ও ফুরফুরে রাখা সম্ভব।
ভোরে ঘুম থেকে ওঠার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি উপকারিতা সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। সংবাদমাধ্যমটির বরাত দিয়ে সে উপকারিতাগুলো উপস্থাপন করা হচ্ছে-
ব্যায়ামের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়
কথায় আছে- ‘মর্নিং শোজ দ্য ডে’ অর্থাৎ প্রাতঃকালীন সূর্যের গতিপ্রকৃতি দেখলে দিনটি কেমন যাবে তা ধারণা করা যায়। আর সবাই চায়, তার প্রতিটি দিন যেন ভালো যায়। সচেতন ব্যক্তিরা ব্যায়াম করে থাকেন। আর ব্যায়ামের শ্রেষ্ঠ সময় হচ্ছে ভোর অর্থাৎ খুব সকাল। এজন্যই যোগব্যায়াম সব সময় উদীয়মান সূর্যকে সমর্থন করে।
লম্বা বিশ্রামের (রাতের ঘুম) কারণে উৎপাদিত চর্বি কমিয়ে স্থূলতা রোধ করতে পারে দ্রুতগতির হাঁটার অভ্যাস। এ অভ্যাস বিভিন্ন ধরনের বিপদ থেকেও রক্ষা করে। দ্রুতগতিতে হাঁটার সবচেয়ে উত্তম সময় হচ্ছে সকাল।
নিস্তব্ধতায় সিক্ত
তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা অপেক্ষাকৃত অনেক স্বস্তিদায়ক। কারণ, এই সময় গাড়ির ভেঁপু, বাচ্চাদের চেচামেচি বা টেলিভিশনের বিরক্তিকর শব্দ থাকে না। ফলে সুস্থ মস্তিস্কে অনেক বিরক্তিকর অথচ ভালো কর্ম এ সময়ের মধ্যে সাধন করা যায়।
তাই শারীরিক ও মানসিকভাবে শান্তিতে থাকতে এই অভ্যাসে নিজেকে অভ্যস্ত করে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কাটে কর্মমুখর দিন, হয় শান্তির ঘুম
ভোরে ঘুম থেকে ওঠা ও রাতে ঘুমাতে যাওয়া সবই একটি বৃত্তে বাধা। কেউ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠলে রাতে ঘুমাতে যাবেন তাড়াতাড়ি। যেহেতু সারাদিন অনেক ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে যাবে, সেহেতু সেই রাতে ঘুমটাও বেশ ভালো হবে। আর ভালো ঘুম দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কার্যকর রাখতে বিশেষভাবে কাজ করে।
এছাড়া, ভোরে ঘুম থেকে উঠলে হাতে অনেক সময় থাকে। সেক্ষেত্রে ব্যায়াম করতেও আগ্রহ পান উদ্যমীরা। এতে তাদের শারীরিক সুস্থতা বাড়ে। ফলে তারা অনেক বেশি সক্রিয় ও কর্মদ্যমী হয়ে কাজ করতে পারেন। তাছাড়া, সকালে ব্যায়াম করার কারণে ঘুম ঘুম ভাব দূর হয়।
অনেকে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে চ্যাট করে, টিভি বা কম্পিউটারে বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখে বা অনেক কাজ করার নামে সারা রাত জেগে কাটান। ফলে অনেক বেলা করে ঘুম থেকে উঠতে হয় তাকে। কিন্তু অনেকে হয়তো ভাবেন, রাত জেগে তারা বেশ ভালোই কাজ করতে পারেন। সুতরাং দিনের চেয়ে রাতে জেগে থাকাই ভালো। কিন্তু তিনি বুঝতেও পারেন না যে- অনেক বেলা করে ঘুমানোর ফলে তার অনেক সফলতার দ্বার বন্ধ হয়ে যায়।
তাই বিদ্রোহী কবির অপর একটি কবিতা ‘ভোর হল, দোর খোল, খুকুমণি ওঠ রে’ এর মন্ত্র ধারণ করে ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাসে নিজেকে অভ্যস্ত কতে হবে।