ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ণয়ের যন্ত্র তৈরির ইতিহাস
প্রকাশিত হয়েছে : ১:২২:২৭,অপরাহ্ন ০৩ মে ২০১৫
নিউজ ডেস্ক ::
ভূমিকম্পের সময় পৃথিবীতে যে কম্পনের সৃষ্টি হয় তাকে “সেস্মিক” (Seismic) তরঙ্গ বলে। এই কম্পনগুলো যে ডিভাইসে রেকর্ড করা হয় তার নাম “সেস্মগ্রাফ”। সেস্মগ্রাফ পৃথিবীর তলদেশের নানারকম প্রশস্ততায় ট্রেস রেকর্ড করে। সেস্মগ্রাফ এর সাহায্যে পৃথিবীর যেকোনো স্থানের শক্তিশালী ভূমিকম্প শনাক্ত করা সম্ভব। এটি ব্যাপকভাবে বিবর্ধিত স্থল গতি শনাক্ত করতে পারে। সেস্মগ্রাফ স্টেশনে যে তথ্য নথিভুক্ত করা হয় এর দ্বারা সময়, স্থান ও ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ধারণ করা যেত।
১৯৩৫ সালে ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট টেকনোলজিতে একটি গাণিতিক ডিভাইস হিসেবে চার্লস এফ. রিখটার ভূমিকম্প মাপার যন্ত্র রিখটার স্কেল আবিষ্কার করেন। ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ণয় করতে সেস্মগ্রাফ ডিভাইসে তরঙ্গের যে প্রশস্ততা নথিভুক্ত হয় এর অ্যালগরিদমের দ্বারা নির্ণয় করা হয়। বিভিন্ন সেস্মগ্রাফ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সেস্মগ্রাফ এবং ভূমিকম্পের উপকেন্দ্রের মধ্যবর্তী দূরত্ব নির্ণয় করে তথ্যগুলো সমন্বয় করা হয়। রিখটার স্কেলে, ভূমিকম্পের মাত্রা সম্পূর্ণ নাম্বার ও দশমিক ভগ্নাংশে প্রকাশ করা হয়।
উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভের মতে, সম্প্রতি নেপালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৯। ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে তাইওয়ানে যে ভূমিকম্প আঘাত হানে তাতে ২,৪০০ জনের প্রাণহানি ঘটে। রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৬। রিখটার স্কেল অনুযায়ী, এ দুটি ভূমিকম্পের যে মাত্রা উল্লেখ করা হয়েছে তাতে কি এটাই প্রতীয়মান হয় না যে, তাইওয়ানের ভূমিকম্পের চেয়ে ভারতের ভূমিকম্পের তীব্রতা সামান্য বেশি ছিল? কিন্তু এটা ঠিক নয়।
রিখটার স্কেলের হিসাব অনুযায়ী তাইওয়ানের ভূমিকম্পের চেয়ে ভারতের ভূমিকম্প দ্বিগুণ শক্তিশালী ছিল। কালোরাডোর জাতীয় ভূমিকম্প তথ্যকেন্দ্রের ভূ-কম্পনবিদ বিল স্মিথ বলেন, “রিখটার স্কেল হচ্ছে একটি লগারিদমিক স্কেল। স্কেলের প্রতি ইউনিট ভূপৃষ্টের কম্পনের পরবর্তী নিম্নসংখ্যার ১০ গুণ শক্তির প্রকাশ ঘটে”। অর্থাৎ, একটি সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় কম্পনের মাত্রা ১০ গুণ বেশি বৃদ্ধি পায়।
প্রথমে রিখটার স্কেলে শুধুমাত্র অন্যান্য যন্ত্র হতে রেকর্ড প্রয়োগ করা হত। কিন্তু, এখন অনেক সাবধানতার সাথে একে অপরকে অনেক সম্মান প্রদান করে যন্ত্রের মডেল তৈরি করা হয়। যাতে, যেকোনো সিস্মগ্রাফ থেকে ভূমিকম্পের বিশালতা সম্পর্কে জানা যায়।
২.০ এর নীচে যে সমস্ত ভূমিকম্প হয় তা সাধারণত মানুষেরা বুঝতে পারে না। এটা শুধু লোকাল সিস্মগ্রাফে রেকর্ড করা হয়। কিন্তু যখন ভূমিকম্পের মাত্রা ৪.৫ বা তার চেয়ে বেশি হয়, তখন পৃথিবীতে প্রায় হাজারটি কম্পনের সৃষ্টি হয়, যা সকল সিস্মগ্রাফে রেকর্ড করা হয়।–সূত্র: ইনভেন্টর।