ভূতের বিশ্বাস :: টুকুনজিল
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৪৮:৫২,অপরাহ্ন ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪
(১)-শ্যাওড়া গাছের মগডালে পা ঝুলিয়ে বসে আছে হড়কু আর হড়হড়কু। আকাশে এই এত্তবড় একখানা চাঁদ উঠেছে। চাঁদ উঠলেই হড়কু আর হড়হড়কুর মন মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। তাদের আলো সহ্য হয়না। শুধু হড়কু, হড়হড়কু না ভূত সমাজের কারোই আলো সহ্য হয়না। তাদের প্রিয় হচ্ছে অন্ধকার। থকথকে কাদাঁর মত গাঢ় অন্ধকার। হড়কু ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বলল দাদা আজ আর বের হওয়া যাবেনা। চল ঠ্যাম্মার কাছে গিয়ে গল্প শুনি।
(২)- হড়কু দাদুর গলা জড়িয়ে আদুরে গলায় ন্যাকা ন্যাকা কন্ঠে বলল ঠ্যাম্মা একটা গল্প বলনা? বৃদ্ধা তার ফোকলা দাঁতে হেসে বললেন কি গল্প শুনতে চাস বল।
মানুষের গল্প ঠ্যাম্মা। হড়হড়কু ছোট ভাইয়ের দিকে চোখ পাকিয়ে, দাত কিড়মিড়িয়ে একটা রাম ধমক দিয়ে বলল মানুষের গল্প আবার কিরে? মানুষ বলতে আবার কিছু আছে নাকি? যত্তসব অবিজ্ঞানিক কথাবার্তা। এ সব হল ভূত মনের কল্পনা। হড়হড়কু সবে কলেজে উঠেছে।
তাই সবকিছুতেই একটা বেশি বুঝি বেশি বুঝি ভাব।
(৩) ইকু বাবার সাথে ঘুড়তে বের হয়েছে। খুব সুন্দর চাঁদ উঠেছে আজ। চাঁদের আলোও পৃথিবী ভেসে যাচ্ছে। এরকম চাঁদনী রাতে ইকু সব সময় বাবার সাথে ঘুড়তে বের হয়। ইকুর বয়স মাত্র ৫। আরেকটু বড় হলেই সে একা একা ঘুড়তে বের হতে পারবে। চল মা ওই শ্যাওরা গাছটার নিছে বসে একটু জিরিয়ে নেই। ইকু আর তার বাবা শ্যাওড়া গাছের তলায় এসে বসল। শ্যাওড়া গাছের নিচে বসতেই তাদের কানে হড়কু আর হড়হড়কুর ঝগড়া কানে এল। বাবা ভূত গুলু কি নিয়ে ঝগড়া করছে? ইকুর বাবা সস্নেহে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন আমাদেরকে নিয়েরে মা। আমাদের কে নিয়ে ঝগড়া করছে কেন বাবা। আমরা মানে মানুষেরা পৃথিবীতে আছি কি নাই তাই নিয়ে ওরা তর্ক করছে। কিন্তু আমরাত আছি তাইনা বাবা। হ্যা মা আমরা আছি। কিন্তু ভুত বিজ্ঞানীরা বলেছেন মানুষ বলে পৃথিবীতে কিছু নাই। তাই শিক্ষিত ভূতেরা এখন আর মানুষে বিশ্বাস করেনা। কেন বিশ্বাস করেনা বাবা। যে জিনিস দেখা যায়না তা বিশ্বাস করতে ভূত বিজ্ঞানীরা নিষেধ করে দিয়েছেন। ভূত বিজ্ঞানীরা খুব বোকা তাইনা বাবা? হ্যা মা খুব বোকা। এখন চল অনেক রাত হয়েছে। ঘুমাতে হবে। হ্যা বাবা চল। ইকুর ভূত বিজ্ঞানীদের উপর খুব রাগ হল। কিরকম গাধা বিজ্ঞানী। বলে মানুষ বলে কিছু নাই। ইকু আরেকটু বড় হলেই গিয়ে ভূত বিজ্ঞানীদের ভয় দেখিয়ে আসবে। তখন বুঝবে বাচাধনেরা মানুষ বলে কিছু আছে কি না। বেশি মেজাজ খারাপ হলে বলা যায়না দু একটার ঘাড়ও মটকে দিতে পারে। সিদ্ধান্তটা নিয়ে ইকুর খুব ভাল লাগতে লাগল। বাবার হাত ধরে বাড়ির পথে হাটা ধরল।