বিশুদ্ধ পানি সংকটে শেবাচিম হাসপাতালে দুর্ভোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:০৩:২৪,অপরাহ্ন ৩০ মে ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
বরিশাল: বিশুদ্ধ পানি সংকটে দুর্ভোগ বেড়েছে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শিশুবিভাগে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজন সিদ্দিকুর রহমান বরিশালের সদর উপজেলার চরমোনাই থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী নিয়ে এসেছেন ৮ দিন আগে।
প্রতিদিনই তিনি তার রোগীর জন্য ওষুধ ও আরও ২ স্বজনের জন্য খাবার সরবরাহ করেন। এতে তার কষ্ট না হলেও বিশুদ্ধ খাবার পানির সরবরাহের জন্য তাকে বেশ বেগ পেতে হয়। প্রথম দিন কিনে খেতে গিয়ে হিসাব কষে দেখলেন ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৬ লিটার পানির প্রয়োজন হয় তাদের।
পরে পানির দামের হিসাব করে একটু কষ্ট হলেও বোতলে হাসপাতাল কম্পাউন্ডের ভেতর থাকা চাপকল (টিউবওয়েল) থেকে পানি সরবরাহের উদ্যোগ নেন। কিন্তু সেই বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করতে গিয়েও শিকার হয়েছেন একে একে নানা দুর্ভোগের।
হাসপাতালের প্রধান গেটের বাম পাশে থাকা চাপকলটি নষ্ট। এরপর ডানপাশের টিউবওয়েলটিতে সব সময়ই লম্বা লাইন লেগেই থাকে। এটাতে পানিও ওঠে খুব কম। বাধ্য হয়ে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে ছাত্রাবাসের সামনের একটি চাপকল থেকে পানি সরবরাহ করছেন এখানকার রোগীর স্বজনরা।
রোগীর স্বজনরা জানান, হাসপাতালের পাইপ লাইনে যে পানি আসছে, তাতে পোকা থাকায় তা পানের অযোগ্য। তবে, সে পানি দিয়ে ধোয়া-মোছার কাজটি করছেন তারা।
গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী বিধান মজুমদার জানান, বছরে বছরে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে, পাশাপাশি গরমের এই সময়টায় পানির স্তর আরও নিচে নেমে যায়। আর বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেসব গভীর নলকূপ রয়েছে। তার বেশিরভাগেরই হাউজিং করা নেই। তাই পানি ওঠাতেও বেগ পেতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ হাসপাতালে গড়ে ১ হাজার রোগী থাকলে প্রায় ৩ হাজার লোকের প্রতিদিন এখানে সমাগম ঘটে। এদের খাবার পানি সরবরাহ করতে গিয়ে চাপকল দুটির ওপরে বেশ চাপ পড়ে যায়। যার কারণে প্রতি পাঁচমাসে গড়ে এ টিউবওয়েল দুটি মেরামত করতে প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়।
তিনি বলেন, হাসপাতালের সামনের দুটি চাপকল প্রতিনিয়ত তাদের মনিটরিং এ থাকছে। তবে হাউজিংসহ আরও ২টি গভীর নলকূপ বসানো গেলে ভালো হতো। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ইতিমধ্যে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু চলতি বছরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েরে কোনও বাড়তি বরাদ্দ না থাকায় এ মুহূর্তে গভীর নলকূপ বসানোর কোনও পরিকল্পনা নেই।
সাপ্লাইয়ের পানিতে ময়লা (পোকা) থাকার বিষয়ে তিনি জানান, এখন প্রচণ্ড গরম থাকায় বড় রিজার্ভ ট্যাংকিটি পরিষ্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে, গরম কমলেই সেটি পরিষ্কার করা হবে।
অপরদিকে, হাসপাতালের পরিচালক ডা. মু. কামরুল হাসান সেলিম জানান, পানির সমস্যা বিষয়টি সম্পর্কে তিনি এখন পর্যন্ত কোনও অভিযোগ পাননি। তবে, তিনি দায়িত্বে থাকা ওয়ার্ডমাস্টারদের রোগীদের যাতে খাবার পানি সরবরাহে কোনও কষ্ট না হয়। সে লক্ষে চাপকল দুটির কার্যক্রম পরীক্ষা করে তাকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি জানান, পানির সমস্যার বিষয়টি নিশ্চিত হলে অবশ্যই গণপূর্ত বিভাগকে তা সমাধানের জন্য বলা হবে।