বিদায় হচ্ছেন ডি ক্রুইফ
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:০০:৪৯,অপরাহ্ন ১৮ অক্টোবর ২০১৪
: আগের দিন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কাল আর রাখঢাক করলেন না। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিলেন, দুই ডাচ কোচকে আর রাখা হচ্ছে না। আজ ভোরে পাঠকের হাতে পত্রিকা পৌঁছানোর আগেই লোডভিক ডি ক্রুইফের ঢাকা পৌঁছানোর কথা। ঢাকায় এলেই ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়ে তাঁর হাতে ধরিয়ে দেওয়া হবে কারণ দর্শানো নোটিশ। জবাব যা-ই হোক, অব্যাহতির চিঠিও তৈরি।
অর্থাৎ এ মাসের শেষ দিকে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে দুটি প্রীতি ম্যাচে জাতীয় দলের ডাগ-আউটে দেখা যাবে না ডি ক্রুইফকে। ম্যাচ দুটিতে জাতীয় দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সহকারী কোচ সাইফুল বারীকে।
ডিসেম্বরে জাপান অনূর্ধ্ব-২৩ দলের আসার কথা। ওই মাসেরই শেষ সপ্তাহে শুরু হবে বঙ্গবন্ধু কাপ। দুটি আয়োজন সামনে রেখে নতুন করে বিদেশি কোচ খুঁজতে শুরু করে দিয়েছেন সালাউদ্দিন, ‘শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সিরিজটা শেষ করে আমরা নতুন বিদেশি কোচ আনব। সে লক্ষ্যে কাজও শুরু করেছি।’ তবে ডি ক্রুইফদের নিয়ে ‘তিক্ত অভিজ্ঞতা’ থেকে বাফুফে সভাপতি এ-ও বলেছেন, ভবিষ্যতে কোচের বেতনের স্থায়ী সংস্থান করে তবেই কোচ আনা হবে।
অর্থের স্থায়ী উৎস খুঁজে না পাওয়া সত্ত্বেও উচ্চ বেতনে আনা হয়েছিল ডি ক্রুইফ ও রেনে কোস্টারকে। এঁদের পেছনে মাসে ব্যয় হতো প্রায় ২৫ লাখ টাকা। কিন্তু সময়মতো বেতন দিতে না পারায় কোচরা কদিন পরপরই বেতন না পাওয়ার অভিযোগ তুলে এসেছেন। সেই অভিযোগই শেষ পর্যন্ত তাঁদের সঙ্গে বাফুফের দূরত্ব বাড়িয়েছে। অবশেষে তাঁদের বিদায় হচ্ছে বরাবরের মতো তিক্ততায়। যদিও সালাউদ্দিনের ভাষায় কোচদের বিদায় হতে পারত আগেই, ‘ফেডারেশনের আগের সভাতেই কোচ বিদায়ের পক্ষে সবাই মত দিয়েছিল। কিন্তু আমি আরও কিছুদিন দেখতে চেয়েছিলাম।’
চার মাসের বেতন বাকি দাবি করে ফিফার কাছে নালিশ করেছেন বলে ভাষ্য ডি ক্রুইফের। মজার ব্যাপার হলো, বাফুফেও যাচ্ছে ফিফার দরবারে। দু-এক দিনের মধ্যেই এ ব্যাপারে চিঠি দেওয়া হবে ফিফাকে। এ প্রসঙ্গে সালাউদ্দিনের বক্তব্য, ‘আমরা ফিফাকে জানাব, কোচদের সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি, তাঁরা এখানে ১৬ মাস কাজ করেছেন, যার মধ্যে ৭ মাসই কাটিয়েছেন হল্যান্ডে। তবু আমরা এক বছরের টাকা দিয়েছি। কোচরা এখানে না থাকলে আমরা টাকা কেন দেব? এটি জানিয়ে ফিফাকে চিঠি দেব।’
চলতি অক্টোবর মাস বাদ দিলে কোচদের তিন মাসের বেতন বকেয়া। এ মাস ধরলে চার মাস। বিদায় করে দিলে চুক্তির সময়কালের বাকি আট মাসের টাকাও দিতে হবে কি না, চুক্তিতে সেটি পরিষ্কার নয়। তবে বাফুফে নিশ্চিত করেছে, গত বছর ১ জুলাই শুরু হওয়া চুক্তি অনুযায়ী এক বছর পর সেটি নবায়ন করা বাধ্যতামূলক ছিল না। নবায়ন না করার অর্থ চুক্তিটি দুই বছরেরই।
বাফুফে মনে করে, যেহেতু একটা ‘গ্রহণযোগ্য’ (১৬ মাসের মধ্যে ৭ মাসই বাংলাদেশে না থাকা) কারণ দেখিয়ে কোচদের বিদায় দেওয়া হচ্ছে, কাজেই বাকি সময়ের পারিশ্রমিক দিতে হবে না। এ নিয়ে ক্রুইফের সঙ্গে আগামীকাল আলোচনায় বসার কথা সালাউদ্দিনের।
তবে আলোচনার ফল যা-ই হোক, ডাচ কোচকে জানিয়ে দেওয়া হবে, তাঁকে আর প্রয়োজন নেই। বাফুফে কঠিন সিদ্ধান্তটি নিয়েছে দিন চারেক আগে ফেসবুকে ডি ক্রুইফ একটি পোস্ট দেওয়ার পরই। কোচ হল্যান্ডে বসে ফেসবুকে লিখেছিলেন, বাফুফে তাদের বকেয়া চার মাসের বেতন আগে পরিশোধ না করলে আর ঢাকায় ফিরবেন না। বাফুফের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারেরও অভিযোগ আনেন। পরে বাফুফেকে ফোন করে জানান, ২৪ ও ২৭ অক্টোবর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ম্যাচ দুটি শেষে মালয়েশিয়ায় কোচদের এক সেমিনারে যোগ দিয়ে সেখান থেকেই ফিরে যাবেন হল্যান্ড। তবে শেষ পর্যন্ত ডি ক্রুইফের এবারের ফিরে আসাটা হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশকে বিদায় বলার উপলক্ষ।