পুলিশ হেফাজত থেকে ‘পলাতক’ জামায়াত কর্মীর লাশ উদ্ধার
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৩০:১০,অপরাহ্ন ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
যশোরে পুলিশের কাছ থেকে ‘পালিয়ে যাওয়া’ দুই আসামির মধ্যে একজনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের দাবি, বন্দুকযুদ্ধে তার মৃত্যু হয়েছে। নিহত শহিদুল ইসলাম জামায়াতে ইসলামী সাতক্ষীরা জেলা আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবদুল খালেকের ভাগ্নে। তিনি জামায়াতের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক জানান, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ২টার দিকে যশোর-খুলনা মহাসড়কের ‘ক্ষণিকা’ পিকনিক স্পটের সামনে একটি সাদা মাইক্রোবাসকে থামতে বলে পুলিশ। এসময় মাইক্রোবাসের আরোহীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে একজন আহত হয়। অন্যরা পালিয়ে যায়। আহত ব্যক্তিকে যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আসামি পালানোর ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলার বাদী শার্শা থানার এএসআই সোমেন বিশ্বাস শুক্রবার সকালে শহিদুলের লাশ শনাক্ত করেন।
‘শার্শা থানা থেকে একটি মাহেন্দ্র গাড়িতে তুলে দেওয়া হয় দু’জনকে। পুলিশসহ মাহেন্দ্রটি যশোর শহরের শেষ মাথায় আসা পর্যন্ত আমি মোটরসাইকেলে পেছন পেছন এসেছি। এরপর গাড়ির ভিড়ে আমি পেছনে পড়ে যাই। পরে থানায় এসে খোঁজ নিতে গেলে আমাকে জানানো হয়, আবদুল মজিদ ও শহিদুল ইসলাম পালিয়ে গেছে। বলা হয়, গাজীর দরগাহ ও নতুনহাটের মাঝামাঝি স্থান থেকে তারা পালিয়েছে। কিন্তু আমি জানি, তারা পালায়নি।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে শার্শা থেকে যশোর আনার পথে পুলিশ হেফাজত থেকে শহিদুল ইসলাম ও আবদুল মজিদ নামে দুই আসামি পালিয়ে যায় বলে পুলিশ দাবি করে। ‘পালিয়ে যাওয়া’ শহিদুল ইসলাম জামায়াত এবং আবদুল মজিদ বিএনপি নেতা। তাদের নামে সাতক্ষীরা সদর ও কলারোয়া থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
আসামি পালানোর ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার দায়ে তিন পুলিশকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার রাতে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান। অবশ্য রাতেই শহরে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, আসামি পালানোর ঘটনা স্রেফ নাটক। প্রকৃতপক্ষে ওই দুই ব্যক্তিকে ‘ক্রসফায়ারে’ হত্যা করার জন্য পুলিশ এ নাটক সাজিয়েছে।
কথিত পলাতক আবদুল মজিদের ভগ্নিপতি আবুল কালাম আজাদ ইকতিয়ার ওই রাতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘শার্শা থানা থেকে একটি মাহেন্দ্র গাড়িতে তুলে দেওয়া হয় দু’জনকে। পুলিশসহ মাহেন্দ্রটি যশোর শহরের শেষ মাথায় আসা পর্যন্ত আমি মোটরসাইকেলে পেছন পেছন এসেছি। এরপর গাড়ির ভিড়ে আমি পেছনে পড়ে যাই। পরে থানায় এসে খোঁজ নিতে গেলে আমাকে জানানো হয়, আবদুল মজিদ ও শহিদুল ইসলাম পালিয়ে গেছে। বলা হয়, গাজীর দরগাহ ও নতুনহাটের মাঝামাঝি স্থান থেকে তারা পালিয়েছে। কিন্তু আমি জানি, তারা পালায়নি।’ নিহত শহিদুল ইসলাম সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের নূর আলী সানার ছেলে।
এদিকে, ‘পালিয়ে যাওয়া’ বিএনপি নেতা আবদুল মজিদের কোনও হদিস নেই। এ বিষয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি মজিদ সম্বন্ধে কোনও তথ্য দিতে পারেননি।