পিঠে ব্যথা মেয়রের, চিকিৎসা নিলেন সাধারণ রোগির মত
প্রকাশিত হয়েছে : ১:০৭:৪১,অপরাহ্ন ২৩ মে ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
সকাল সাড়ে ১১টা। রোগি আর স্বজনদের ভিড়ে কোলাহলমুখর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। সেই ভিড়ের মধ্যে হঠাৎ হাজির হলেন নবনির্বাচিত মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। সাধারণ রোগির মত তিনিও চিকিৎসা নিতে এসেছেন হাসপাতালে।
মেয়র আসার খবর পেয়ে কোলাহল যেন আরও বাড়ল। কেউ একনজর দেখতে ছুটে যান মেয়রের কাছে। ছুটে আসেন হাসপাতালের পরিচালক থেকে উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা। কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও আসেন। মধ্যবিত্ত, গরীব মানুষের ভিড়ে মেয়রকেও রোগি হিসেবে দেখে সবাই বিস্মিত।
মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারি রায়হান ইউসুফ বলেন, নির্বাচনের সময় অধিক পরিশ্রমের কারণে মেয়র মহোদয়ের কোমড় থেকে মেরুদন্ড পর্যন্ত পিঠে ব্যথা শুরু হয়। সেসময় ব্যস্ততার জন্য তিনি চিকিৎসা করাতে পারেননি। তখন অবশ্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সহকারি অধ্যাপক ডা.শওকতের পরামর্শ নিয়েছিলেন। তার পরামর্শেই আজ (শনিবার) তিনি থেরাপি নিয়েছেন।
রায়হান জানান, মেয়র সকাল সাড়ে ১০টায় বায়েজিদ বোস্তামি থানার বাস্তুহারা কলোনির পাশে মক্কা মসজিদের সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধন করেন। এরপর এলাকাবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
সেখান থেকে ফেরার পথে প্রবর্তক মোড় এলাকায় এসে মেয়র গাড়ি চমেকে নেয়ার নির্দেশ দেন। রায়হানকে বলেন, তিনি থেরাপি নেবেন। এসময় রায়হান ইউসুফ হাসপাতালের চিকিৎসক ও বিএমএ নেতা ডা.রিদওয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
মেয়র যখন গাড়ি থেকে নেমে ভেতরে প্রবেশ করছিলেন তখন খবর ছড়িয়ে পড়ে পুরো হাসপাতালে। রোগির স্বজন, সাধারণ দর্শনার্থীরা এসে ভিড় জমায় হাসপাতালের করিডোরে। মেয়রকে নেয়া হয় নিচতলায় ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগে। সেখানে সাধারণ রোগির মত সব নিয়মকানুন অনুসরণের পর তাকে থেরাপি দেয়া হয়। এরপর বেলা ১২টার দিকে মেয়র হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
মেয়র হাসপাতালে আসার খবর পেয়ে তার কাছে যান হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার শহীদুল গণি, বিএমএ’র কেন্দ্রীয় নেতা ডা.শেখ শফিউল আজম, বিএমএ’র চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা.শরীফসহ চিকিৎসক নেতৃবৃন্দ, সাধারণ শিক্ষার্থীরাও।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, আওয়ামী লীগপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের উপর দৃশ্যত নিয়ন্ত্রণ আছে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের। তাকে ঘিরেই আবর্তিত হয় চমেকের শিক্ষক-ছাত্র, চিকিৎসকদের রাজনীতি।
মেয়রের ঘনিষ্ঠজনদের সূত্রে জানা গেছে, তার অসুস্থতার কথা জানতে পেরে অনেক নামীদামী চিকিৎসকরা তাদের ক্লিনিকে চিকিৎসা নেয়ার জন্য মেয়রকে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু আ জ ম নাছির অভিজাত ক্লিনিকের পরিবর্তে চমেক হাসপাতালে সাধারণ রোগির মত চিকিৎসা নিতে অনড় ছিলেন।
শেষ পর্যন্ত সাধারণ রোগির মতই থেরাপি ও চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে মেয়র বাসায় ফিরেছেন বলে জানান তার ব্যক্তিগত সহকারি রায়হান ইউসুফ।