নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবী খালেদার
প্রকাশিত হয়েছে : ১:১৬:০০,অপরাহ্ন ১৩ মে ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিসহ বিরোধী দলমতের সকল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাদেরকে মুক্তির দাবী করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এছাড়া কারাগারে আটক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অসুস্থ সিনিয়র নেতাদের মুক্তি ত্বরান্তিত করারও দাবী জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘বন্দী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের জামিন লাভের স্বাভাবিক অধিকারও এখন সরকারের তীব্র বিরোধিতার মুখে ক্ষুন্ন হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্যে যাদের দেশের বাইরে যাওয়ার আশু প্রয়োজন তাদেরকেও জামিন দেয়ার বিরোধিতা করা হচ্ছে। আমি এ ধরণের অমানবিক আচরণ পরিহার করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হামলা-মামলা ও অত্যাচার-উৎপীড়নে পর্যুদস্ত করে বিএনপির মতো একটি দলের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে স্থবির করে দিয়ে ক্ষমতাসীনরা উল্লাস প্রকাশ করছে। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারাকে এভাবে স্তব্ধ করে দিয়ে কেউ কখনো সুফল পায়নি। আমি ইতিহাস থেকে সেই শিক্ষা গ্রহনের জন্যে ক্ষমতাসীনদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
পাশাপাশি আহ্বান জানাচ্ছি দেশে রাজনৈতিক সহঅবস্থান ও সুস্থ স্বাভাবিক প্রতিযোগিতার পরিবেশ অবিলম্বে ফিরিয়ে আনার।’
‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সহ-সভাপতি শমসের মোবিন চৌধুরী বীর বিক্রম, যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ, চেয়ারপারনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এম এ মান্নান, শামসুজ্জামান দুদু ও মোসাদ্দেক আলী, বিএনপি নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর, আসলাম চৌধুরী, আবদুস সালাম পিন্টু ও আরিফুল হক চৌধুরীসহ বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের বহু নেতা-কর্মী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক রয়েছেন উল্লেখ করে বেগম খালেদা জিয়া বিবৃতিতে আরো বলেন, ‘জাতীয় পর্যায়ের এসব রাজনীতিক, সাবেক মন্ত্রী এবং নিজ নিজ অঙ্গনে খ্যাতিমান ব্যক্তি। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বশত: বিরোধীদলকে দমনের হীন উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মিথ্যা ফৌজদারী মামলা এবং সরকারের আজ্ঞাবহ দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা সাজানো মোকদমায় দীর্ঘদিন ধরে এসব নেতাদের অনেককেই বিনা বিচারে বন্দী করে রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন ‘আটকাবস্থায় বেআইনী ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে দফায় দফায় পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে উল্লেখিত এসব রাজনৈতিক বন্দীদের অনেকের ওপর দৈহিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। তাদের অনেকে বয়সে প্রবীণ এবং নানা ধরণের রোগে আক্রান্ত। কারাগারে সুচিকিৎসার অভাবে তারা অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।’
এছাড়া বেগম খালেদা জিয়া তার দেয়া এই বিবৃতিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করে বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিএনপি নেতা নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুকে রাজশাহী কারাগারে স্থানান্তরের পর সম্প্রতি তিনি কর্তৃপক্ষের নিষ্ঠুর অবহেলায় মৃত্যুবরণ করেন। গুরুতর অসুস্থ দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা আলমগীরকে সম্প্রতি তেমন কোনো চিকিৎসা না দিয়েই কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়েছে। স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন অজ্ঞান হয়ে বাথরুমে পড়ে যাবার পরেও তার তেমন কোনো চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। এসব ঘটনা তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং আমাদের জন্য গভীর উদ্বেগের।’