কারা যাচ্ছেন মন্ত্রিসভায়! চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে আলোচনায় ১২ জন
প্রকাশিত হয়েছে : ২:২৯:৪১,অপরাহ্ন ১০ জানুয়ারি ২০২৪
বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে ঠাঁই পেয়েছিলেন ৯ জন। এর মধ্যে আটজন ছিলেন পূর্ণ মন্ত্রী ও একজন উপমন্ত্রী। কাল বৃহস্পতিবার গঠন হতে যাওয়া সরকারের নতুন মন্ত্রিসভাতেও একই ধারাবাহিকতা রক্ষা হতে পারে বলে জানা গেছে। চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে এবার আলোচনায় আছেন আরও নতুন মুখ।
মো: আবদুল্লা আল আমীন
টানা পাঁচবার এমপি হয়েও এখনও মন্ত্রিত্ব পাননি চট্টগ্রামের এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। তবে তিনবার সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এবার মন্ত্রিসভায় তাঁর অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে তাই জোর আলোচনা আছে। চারবার এমপি হওয়া কুমিল্লার আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এবং চট্টগ্রামের এম এ লতিফও আছেন আলোচনায়। বাহার কুমিল্লা সদর আসনের ও লতিফ চট্টগ্রাম নগরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা বন্দর-পতেঙ্গার এমপি। আবার এমপি না হয়েও আলোচনায় আছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এম এ সালাম। বারবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েও দলীয় মিত্রদের সঙ্গে সমঝোতার কারণে নির্বাচন করতে পারেননি তিনি। তাই এবার তাঁকে টেকনোক্র্যাট কোটায় মূল্যায়ন করার দাবি উঠেছে দল থেকে।
চাঁদপুর-২ আসনের চারবারের এমপি সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, চাঁদপুর-৫ আসনের পাঁচবারের এমপি রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম, রাঙামাটির পাঁচবারের এমপি দীপঙ্কর তালুকদার, কুমিল্লা-১১ আসনের তিনবারের এমপি মুজিবুল হক ও কুমিল্লা-৭ আসনের দু’বারের এমপি প্রধানমন্ত্রীর সাবেক ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রাণ গোপাল দত্ত, চাঁদপুর-১ আসনের এমপি ড. সেলিম মাহমুদও অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন মন্ত্রিসভায়। এর বাইরে তরুণ এমপিদের মধ্যে আলোচনায় আছেন চট্টগ্রামের মাহবুব উর রহমান রুহেল ও মহিউদ্দিন বাচ্চু।
বর্তমান মন্ত্রিসভায় চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে আছেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আইন ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়কমন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। এ ছাড়া শিক্ষা উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এবারও মন্ত্রিত্বের আলোচনায় আছেন তারা।
অষ্টম সংসদ নির্বাচন থেকে রাউজান আসনে টানা পাঁচবার এমপি হন ফজলে করিম চৌধুরী। নবম জাতীয় সংসদে তিনি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মনোনীত হন। ফজলে করিম চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছিলেন। নবম সংসদ নির্বাচন থেকে টানা চারবার চট্টগ্রাম-১১ আসনে এমপি হন এম এ লতিফ। তিনি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এবং নৌপরিবহন ও পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য। এর আগেও একাধিক সংসদীয় কমিটিতে সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন।
১৯৯৬ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত পাঁচটি সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এম এ সালাম। এর মধ্যে ১৯৯৬ সালে একবার নির্বাচনে হেরে যান। বাকি চারবার মনোনয়নপত্র জমা দেন। কিন্তু দলের মিত্র জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে চট্টগ্রাম-৫ আসনটি বারবার ছেড়ে দিতে হয়েছে। আবার সাবেক ছাত্রনেতা এম এ সালাম ১৯৯২ সালের মে মাসে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। টানা ২৮ বছর তিনি এই পদে ছিলেন। তিন বছর আগে তিনি উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এখনও এই পদে রয়েছেন।
রাঙামাটি আসনে পঞ্চম সংসদ নির্বাচন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে আসছেন দীপঙ্কর তালুকদার। তিনি এ পর্যন্ত পাঁচবার এমপি হয়েছেন। মাঝখানে ২০০১ সালে বিএনপির মনি স্বপন দেওয়ান ও ২০১৪ সালে জেএসএসের ঊষাতন তালুকদারের কাছে হারেন। ১৯৯৮ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শরণার্থীবিষয়ক টাস্কফোর্স গঠিত হলে তাঁকে এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৯১ সালে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, ১৯৯৬ সালে শিক্ষা কমিটি, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি ও জাতীয় সংসদ হাউস কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
দলীয় সূত্র বলছে, যদি চমকের মন্ত্রিসভা হয়, তাহলে ঠাঁই পেতে পারেন চট্টগ্রাম-১ আসনে প্রথমবার নির্বাচিত হওয়া মাহবুব উর রহমান রুহেল। তাঁর বাবা আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এ আসনে ছয়বারের এমপি। আবার রুহেল আওয়ামী লীগের তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ খাত নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করছেন। চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং-হালিশহর আসনের দু’বারের এমপি মহিউদ্দিন বাচ্চুও আছেন আলোচনায়। তিনি সাবেক মন্ত্রী ডা. আফসারুল আমীনের আসন থেকে এমপি হয়েছেন।