‘কল্পনাও করিনি খালার কাছ থেকে ফুলের তোড়া নেব’

প্রবাস ডেস্ক::
ব্রিটেনে লেবার পার্টির এমপি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিকী বলেছেন, ‘আমি কখনও এটা স্বপ্নেও ভাবিনি যে মঞ্চে এসে আমি আমার খালার কাছ থেকে ফুলের তোড়া নিচ্ছি।’ রবিবার সন্ধ্যায় লন্ডনে পার্ক লেন হোটেলে এক নাগরিক সংবর্ধনায় টিউলিপ একথা বলেন। সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য অর্জনের জন্য এই সংবর্ধনার আয়োজন করে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ।

মুহুর্মুহু করতালির মধ্যে আবেগাপ্লুত টিউলিপ বলেন, ‘আপনারা অনেক করেছেন। আপনাদের সমর্থন, স্নেহ ও ভালোবাসা ছাড়া আমি এ অবস্থানে আসতে পারতাম না।’

অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য তার নির্বাচনি এলাকার জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে লেবার পার্টির এই এমপি বলেন, ৭ মে’র নির্বাচনে এক হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন তিনি। তার এই নির্বাচনি আসনে বাঙালি ভোটার রয়েছেন এক হাজার।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অন্য দুই ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী ও ড. রুপা হকের ব্যাপারে টিউলিপ বলেন, যুক্তরাজ্যের এবারের নির্বাচনে তিনজন বাঙালি নির্বাচিত হওয়ায় তিনি গর্বিত। টিউলিপ আরও বলেন আগামী ডিসেম্বরে তিনি বাংলাদেশ সফরে আসবেন এবং এ সময় তিনি প্রথম সিলেট ও পরে ঢাকা যাবেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী ফুলের তোড়া ও বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী হস্তান্তরকালে তার ভাগ্নি টিউলিপকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু দেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ফুলের তোড়া ও বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থ গ্রহণের পর হাউস অব কমন্সের কয়েকজন এমপি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। টিউলিপ ছাড়াও এদের মধ্যে রয়েছেন কার্ডিফের লেবার পার্টির এমপি জো স্টিভেন্স, ইলফোর্ড নর্থের লেবার পার্টির এমপি ওয়েস স্ট্রির্টিং, ইলফোর্ড সাউথের লেবার পার্টির এমপি মাইক গ্যাপস এবং সুথান ও চীফ থেকে নির্বাচিত কনজারভেটিভ পার্টির এমপি পল স্কাউলি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক খাতে বাংলাদেশের বিস্ময়কর সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন অন্য ব্রিটিশ এমপিরা। ব্রিটিশ অর্থনীতির পাশাপাশি রাজনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ব্যাপক অবদানেরও প্রশংসা করেন। বৃটিশ হাউস অব কমান্সের সদস্যরা ‘জয় বাংলা’ বলে অনুষ্ঠানে তাদের বক্তৃতা শেষ করেন।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক আনোরুজ্জামান চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। এতে প্রবাসী বাংলাদেশি ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া সম্মাননা পাঠ করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজেদুর রহমান ফারুক।

সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, বাংলাদেশ প্রত্যেক খাতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। গত ৬ বছরে দেশ এভাবে এগিয়ে যাবে এটা কেউ কল্পনা করতে পারেনি। সংবর্ধনার শুরুতে ১৫ আগস্টের হত্যাযজ্ঞে বঙ্গবন্ধু ও অন্যান্য শহীদ, শহীদ জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের শহীদগণ এবং বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের স্মৃতির সম্মানে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ঝিনাইদহের আওয়ামী লীগের এমপি নবী নেওয়াজ, প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, প্রেস সচিব এ কে এম শামীম চৌধুরী এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশের আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।