আজ জেল হত্যা দিবস
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:৩৯:০৮,অপরাহ্ন ০৩ নভেম্বর ২০১৪
স্টাফ রিপোর্টার :
আজ ৩ নবেম্বর। ঐতিহাসিক জেল হত্যা দিবস। মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানকে ১৯৭৫ সালের এদিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় হত্যা করা হয়।
সেদিন কারাগারে ঢুকে এই জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা অবস্থায় এ ধরনের বর্বরোচিত হত্যাকান্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। এর আগে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নিহতের পর তার ঘনিষ্ঠ সহকর্মী চার জাতীয় নেতাকে গ্রেফতার করে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে পাঠানো হয়।
জাতীয় চার নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যার এ ঘটনায় তখনই লালবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ২১ বছর এ হত্যাকান্ডের তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার জেল হত্যা মামলার প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত করে। এরপর দীর্ঘ ৮ বছরেরও বেশি সময় বিচার কাজ চলার পর গত জোট সরকারের সময়ে ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত মামলাটির রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ২০ আসামীর মধ্যে ১৫ সাবেক সেনা কর্মকর্তার শাস্তি এবং অপর ৫ জনকে খালাস দেয়া হয়। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে পলাতক তিন আসামীর মৃত্যুদন্ড এবং অপর ১২ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়।
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি :
ভোরে বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সব শাখা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, কালো পতাকা উত্তোলন এবং কালো ব্যাজ ধারণ। সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুার্ঘ্য অর্পণ। সকাল সাড়ে সাতটায় বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদ ও জাতীয় নেতাদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত। বিকেল সাড়ে ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ৩ নবেম্বর জেল হত্যা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে পালনের জন্য আওয়ামী লীগের সকল শাখা এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী-সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী:
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি দিনটিকে মানবতা ও গণতন্ত্রের ইতিহাসে কলঙ্কময় দিন বলে আখ্যায়িত করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে এ ধরনের বর্বর হত্যাকান্ড পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে জাতীয় চার নেতার হত্যাকান্ড ছিল জাতির জনককে সপরিবারে হত্যার ধারাবাহিকতারই অংশ। এর মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশের মাটি থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাম চিরতরে মুছে ফেলার এবং বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল।