৩ বছরে ৪০ দেশ ভ্রমণ, রহস্য খুঁজছেন গোয়েন্দারা
প্রকাশিত হয়েছে : ২:২৪:৫৪,অপরাহ্ন ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
নিউজ ডেস্ক:: ঢাকা থেকে দুবাইগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার পর কমান্ডো অভিযানে নিহত তরুণ পলাশ আহমেদকে ঘিরে রহস্য ঘনিভূত হচ্ছে।রবিবার সন্ধ্যায় ওই ঘটনার পর তার নাম মাহাদী বলে জানিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী; কিন্তু পরে জানা যায় ওই তরুণের নাম পলাশ আহমেদ। তবে তার ফেসবুক আইডিতে পরিচয় দেওয়া আছে মাহীবি জাহান।
র্যাবও জানিয়েছে, পলাশের আঙুলের ছাপ তাদের ডাটাবেজে থাকা এক অপরাধীর সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়েছে। তিনি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের দুধঘাটা এলাকার পিয়ার জাহান সরদারের ছেলে। তার নামে ২০১২ সালে এক নারীকে অপহরণের মামলা রয়েছে। ওই সময় তাকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল।
ইমিগ্রেশন পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, পলাশের পরিচয় উদ্ধার করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য মিলেছে।দেখা গেছে, গত তিন বছরে পলাশ ৪০টিরও বেশি দেশে যাতায়াত করেছেন। শুধু গত বছরই এই তরুণ দুবাই যান চারবার। প্রত্যেকবার দুদিনের বেশি সেখানে থাকেননি। একই বছর তিনি মালয়েশিয়া ও ভারতেও তিনবার করে যাতায়াত করেন। সর্বশেষ গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর দুবাই গিয়ে মাত্র দুদিন পর ২৮ ডিসেম্বর দেশে ফেরেন পলাশ।
এর আগে গত বছরের ১১ মে, ২ জুন, ১৯ আগস্ট তিন দফা তিনি দুবাই যান। গতকাল র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান জানান, পলাশের আঙুলের ছাপ ও চোখের মণি পরীক্ষা করে আমাদের ডাটাবেজে থাকা এক অপরাধীর সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। সেই অনুযায়ী নিহতের বিমানের টিকিট ও পাসপোর্টের তথ্যে সব মিল পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী পলাশ ২০১২ সালে এক নারীকে অপহরণ করে ৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। তখন তাকে এক সহযোগীসহ আটক করে র্যাব-১১। একইসঙ্গে সেই নারীকেও উদ্ধার করা হয়। র্যাবের ডাটাবেজ অনুযায়ী ২০১২ সালে তিনি বিবাহিত ছিলেন। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা দাখিল পাস। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পলাশ আহমেদের পাসপোর্ট নম্বর বিএন ০৯৫০৮৮২। এই পাসপোর্টের সূত্র ধরেই তার বিদেশ যাতায়াতের তথ্য বেরিয়ে আসে। গত তিন বছরে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, মালয়েশিয়া, নেপাল, ভুটান, সিঙ্গাপুরসহ অন্তত ৪০টি দেশে গিয়েছেন। তবে পলাশ সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করেছেন দুবাই। কেন তিনি বারবার দুবাই যেতেন তা এখন খতিয়ে দেখছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, একজন মানুষের স্বাভাবিক বিদেশ যাতায়াতের চিত্রের সঙ্গে পলাশ আহমেদের বিদেশ ভ্রমণের মিল নেই। তার কার্মকাণ্ড এক অস্বাভাবিক। তার পুরো জীবনযাপন রহস্যেঘেরা। কখনও তিনি নিজেকে আইটি এক্সপার্ট, আবার কখনও স্বল্প দৈর্ঘ্য সিনেমার নায়ক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেন। তিনি এতবার বিদেশে কেন যেতেন তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে।