২০০ টাকার টিকিট ৫০০, পুলিশকে দায় দিল বিসিবি
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৫৬:০৬,অপরাহ্ন ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
২০০ টাকার টিকিট ৫০০ টাকা! ৪০০ টাকার টিকিট ৮০০ থেকে শুরু করে ১০০০! ৮০০ টাকারটা বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজারেরও অধিক দামে। এমনই চিত্র দেখা গেছে শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামের বাইরে। প্রায় প্রতিটি গেটের আশেপাশে অবাধে চলছে কালোবাজারিদের অবৈধ টিকিট বিক্রির ব্যবসা।
মো. আবদুল্লা আল আমীন
চট্টগ্রাম পর্ব শেষে আবারও ঢাকায় ফিরেছে বিপিএল। রাউন্ড রবিন লিগে নিজের শেষ ম্যাচে শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) মাঠে নামে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স এবং ফরচুন বরিশাল। হাইভোল্টেজ এই ম্যাচকে ঘিরে দর্শকদের উন্মাদনা চরমে। সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছে টিকিট কালোবাজারিরা।
এদিন কুমিল্লা-বরিশালের ম্যাচটি শুরু হয় দুপুর দুইটায়। স্টেডিয়ামের পাশে বুথেও ছিল দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়। ছুটির দিন হওয়ায় ম্যাচ শুরুর আগেই শেষ হয়ে যায় ইস্টার্ন স্ট্যান্ডের ২০০ টাকার টিকিট। ৪০০ টাকার টিকিটও শেষ হয়ে যায় ম্যাচ শুরুর পরপরই। ৮০০ টাকার টিকিটটা একটু দামে বেশি হওয়ায় অনেক দর্শককেই হাঁটতে দেখা যায় ভিন্ন পথে।
দর্শকদের পিছু নিয়ে এসময় সন্ধান পাওয়া যায় কালোবাজারি টিকিট বিক্রেতার। স্টেডিয়ামের প্রায় প্রতিটি গেটের সামনেই অবাধে টিকিট কালোবাজারি চালিয়ে যাচ্ছে একটি চক্র। স্টেডিয়ামের নর্দান গেটের সামনে খোঁজ পাওয়া যায় এমনই এক ব্যক্তির। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইস্টার্ন স্ট্যান্ডের ২০০ টাকার টিকিট তিনি বিক্রি করছেন ৫০০ টাকায়। তিনি আরও জানান, এখন না কিনলে এই টিকিটের দাম আরও বাড়তে পারে।
পাশেই দাঁড়ানো আরেক কালোবাজারি ৪০০ টাকার টিকিট বিক্রি করছেন ১০০০ টাকায়। দরদাম করে এক দর্শক টিকিট কেনেন ১৪০০ টাকায়। এসময় তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে পরিচয় গোপন করে কথা বলতে রাজি হন তিনি।
বরিশালের সমর্থক ওই সমর্থক বলেন, ‘দেখেন ভাই, আমাদের তো কিছু করার নাই। কাউন্টারে টিকিট কিনতে গেলে বলে শেষ। কিন্তু এখানে কালোবাজারিদের হাতে টিকিটের শেষ নেই। খেলা দেখতে এসে ফেরত যাব, এই চিন্তা করে বাধ্য হয়ে শেষমেশ বেশি দামে কিনলাম।’
টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরছিলেন কলেজছাত্র মাহিদুল ইসলাম। কালোবাজারিদের কারণেই টিকিট দ্রুত শেষ হয়ে যায় বলে মনে করেন তিনি। প্রশাসন সবকিছু জেনেও কোনো উদ্যোগ নেয় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মাহিদুল বলেন, ‘আমরা ছাত্র। ৮০০ টাকার টিকিট কিনে খেলা দেখার সামর্থ্য নেই। কিন্তু কম দামের টিকিট তো আগেই শেষ হয়ে যায়। কালোবাজারিরা পুলিশের আশেপাশে থেকেই টিকিট বিক্রি করে। সবকিছু জেনেও কেউ কোনো উদ্যোগ নেয় না।’
অবাধে কালোবাজারির বিষয়ে বিসিবির এক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বল ঠেলে দেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোর্টে। তার মতে, কালোবাজারি ঠেকানোর দায়িত্ব বিসিবির নয়, বরং পুলিশের।
বিসিবির ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘টিকিট বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর ক্রেতা সেটা কী করছেন সেটা আমাদের দেখার দায়িত্ব নয়। কালোবাজারি এক ধরনের অপরাধ। এটা অনেক দেশেই হয়ে থাকে। কোনো বোর্ডই কিছু করে না। এটা ঠেকানোর দায়িত্ব পুলিশের।’