১৫ দিন ধরে নিখোঁজ সুনামগঞ্জ শহরের ‘কোটিপতি নারী‘
প্রকাশিত হয়েছে : ২:১২:১৫,অপরাহ্ন ০২ মার্চ ২০১৯
নিউজ ডেস্ক:: সুনামগঞ্জ পৌরশহরের নতুনপাড়া আবাসিক এলাকা থেকে ৩৮ বছরের কোটিপতি নারী রিপা বেগম গত ১৫দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজের পর তার ঘর থেকে কোটি টাকার অর্থ-লগ্নির হিসাব ও ঋণ গ্রহিতাদের চেক পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নিখোঁজের উদ্বিগ্ন স্বজনরা মনে করছেন, আর্থিক লেনদেনের কারণেই ওই মহিলাকে অপহরণ করা হতে পারে। এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রিপা বেগমের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের সদরগড় গ্রামে। তবে তিনি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের নতুনপাড়া এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। অবিবাহিত রিপা নিজের মা, প্রতিবন্ধী ছোট তিন বোন ও এক ভাইকে নিয়ে শহরের বাসায় থাকতেন। প্রতিবন্ধী ওই শিশুরা শহরের একটি স্কুলে পড়ে। তাদের দেখাশোনা করতেন রিপা নিজে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রিপা নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করা হয়। তাঁকে না পাওয়ায় ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর এক ভাই মোস্তাক হোসেন সুনামগঞ্জ সদর থানায় জিডি করেন।
রিপা বেগমের ভাই মোস্তাক হোসেন বলেন, বাবা গোলাপ আলী ২০১০ সালে মারা যাবার পর এই বোনই তাদের পরিবারের অভিভাবক। পৃথক বাসায় ভাড়া থাকলেও তার পরিবারেরও অনেক দায়িত্ব রিপা পালন করতেন। নিখোঁজ হওয়ার পর রিপার একটি নোটবুকে শহরের বিভিন্ন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে তাঁদের কাছে রিপা ৬৭ লাখ টাকা পান বলে লেখা রয়েছে।নোট বুকে উল্লেখ রয়েছে বিলকিস আক্তার নামে এক নারী ৫ লাখ, ওয়াহিদা আক্তার ৩ লাখ, সুমন আহমেদ নামের একজন ১০ লাখ, রতন ১ লাখ, অজিত কুমার কর ১০ লাখ, সুজিত কুমার ১৫ লাখ, বজু বণিক ৫ লাখ, সুমন বণিক ১ লাখ, হেনা বেগম দেড় লাখ, সত্যজিৎ বণিক ১ লাখ, অজয় বণিক দুই লাখ, উজ্জ্বল ৫ লাখ, সাবানা বেগম ১ লাখ ৩৫ হাজার, আমির উদ্দিন ও আলম ৭ লাখ, রাসেল ৩ লাখসহ অসংখ্য মানুষের নামে টাকার হিসাব লিখা রয়েছে।
মোস্তাক হোসেন আরও বলেন, ‘শহরে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে আমার বোনের কোটি টাকার লেনদেন আছে। এসব টাকা লেনদেনের জের ধরেই আমার বোন অপহরণের শিকার হতে পারেন। ১৫ দিন হয়ে গেল, তাঁর কোনো খোঁজ নেই। পুলিশ বলছে, তারাও কোনো খোঁজ পাচ্ছে না। আমরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছি।’
জিডি’র তদন্তকারী কর্মকর্তা সুনামগঞ্জ সদর থানার এসআই মো. জিন্নাত বলেন,রিপা বেগম নিখোঁজের বিষয়টি এখনো জিডি আকারেই রয়েছে। তাঁকে কেউ অপহরণ করতে পারে এমন যথেষ্ট প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। চেকসহ অন্যান্য কাগজপত্র রিপা বেগমের ভাই-বোনদের কাছেই রাখতে বলেছি।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহিদুল্লাহ বলেন, আমরা সম্ভাব্য সব জায়গাতেই রিপা বেগমের খোঁজ করছি। একই সঙ্গে তাঁর মোবাইলের সূত্র ধরেও খোঁজা হচ্ছে। বিষয়টি জটিল মনে হচ্ছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখছি।