‘হাতে কিছুদিন সময় পেলাম’: নূর হোসেন
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:৪৮:৫৪,অপরাহ্ন ১৩ জানুয়ারি ২০১৫
কোলকাতা:: দমদম জেল থেকে গাড়িতে ওঠার সময় শুনলাম এক আইনজীবী মারা গেছে। হাতে কিছুদিন সময় পেলাম বলে মন্তব্য করেছেন নারায়াণগঞ্জের সাত খুন মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেন।
নূর হোসেনকে মঙ্গলবার সকালে ভারতের বারাসত আদালতে আনা হয়। বারাসত আদালতে নূর হোসেনের সঙ্গে তার সহযোগী ওয়াহিদুজ্জামান সেলিম দেখা করতে গেলে সে একথা বলে।
বারাসত আদালত থেকে মঙ্গলবার দুপুরের পর দমদম কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় নূর হোসেনকে। যাওয়ার সময় গাড়িতে বসে নারায়ণগঞ্জ আদালতে সাত খুনের চার্জশিট দেওয়া প্রসঙ্গে নূর হোসেন বলেন, চিন্তায় আছি।
বিধাননগর কমিশনারেট পুলিশের হাতে ধরা পড়া নূর হোসেনের সহযোগী ওয়াহিদুজ্জামান সেলিম বারাসত আদালতে বলেন, চেয়ারম্যান (নূর হোসেন) খুব খুশি। ভাই খুব চিন্তায় ছিলেন। ওনাকে ফেরতের বিষয়ে আদালতের কাছে বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে চিঠি এসেছে কি না, বার বার এ বিষয়ে জানতে চাইছিলেন।
খান সুমনের আইনজীবী অনুপ কুমার ঘোষ জানান, আইনজীবী ও সাবেক বিধায়ক গোপাল মুখার্জির মৃত্যুর কারণে আদালতে কর্মবিরতি চলায় মামলার শুনানি হয়নি। তবে মঙ্গলবার সকালে মুখ্য বিচার বিভাগীয় হেকিম মামলার রেকর্ড জেলা আদালতে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে ফেরতের কোনো চিঠি মামলার রেকর্ডে দেখিনি। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন পড়েছে ৯ ফেব্রুয়ারি।
নূর হোসেনের সহযোগী খান সুমন জানান, এ নিয়ে চতুর্থবার আইনজীবীদের মৃত্যুর কারণে শুনানি পেছালো। প্রথমে একটু গম্ভীর থাকলেও পরে ভাই খোশ মেজাজে ছিলেন। প্রিজন ভ্যান থেকে আদালতের লকআপে হাসিমুখে প্রবেশ করেন।
বিধাননগর কমিশনারেট পুলিশের হাতে ধরা পড়ার দুই মাসের মধ্যে পুলিশ নূর হোসেন, ওয়াহিদুজ্জামান সেলিম ও খান সুমনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর থেকে কখনো নূর হোসেন অসুস্থ হন, আবার কখনো খান সুমন অসুস্থ হন। যখন নূর হোসেনরা সুস্থ থাকেন তখন উত্তর ২৪ পরগনা আদালতের আইনজীবী অথবা আদালতের কর্মীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ফলে পিছিয়ে যায় চার্জ গঠনেরশুনানির দিন।
উল্লেখ্য, গেল বছর ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের পর খুন করা হয়। ওই ঘটনার প্রধান আসামী নূর হোসেন এবং তার দুই সহযোগী ওয়াহিদুজ্জামান সেলিম ও খান সুমনকে ১৪ জুন কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন কৈখালি এলাকার একটি বহুতল আবাসন থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতীয় দণ্ডবিধি ১৪ বিদেশী নাগরিক আইন (ফরেনারস অ্যাক্ট) লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়।
১৮ আগস্ট সোমবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাতের জেলা ও দায়রা জজ অমিতাভ চট্টোপাধ্যায় খান সুমনের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। জামিনের শর্ত পূরণ করায় ২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় দমদম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে শর্তসাপেক্ষ মু্ক্তি পান তিনি। ৩ ডিসেম্বর শর্তসাপেক্ষে জামিন পান সেলিম। ৫ ডিসেম্বর কারাগার থেকে মুক্ত হন তিনি।