হলিউডে সুন্দরবন
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:১২:৩৮,অপরাহ্ন ১৭ জানুয়ারি ২০১৫
বিনোদন ডেস্ক :: গেল বছর ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবনে একটি তেলের ট্যাঙ্কার ডুবে যায়। সাড়ে তিন লাখ লিটারেরও বেশি ফার্নেস তেল নিয়ে সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে দু’টি জাহাজের মধ্যকার সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার পর এ ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ সরকার তেমন কোনো উদ্যোগ না নিলেও পরিবেশবাদী থেকে শুরু সমাজকর্মীরা নানা মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন। এমনকি বাংলাদেশ সরকারের একজন মন্ত্রী সে সময় জানান যে, এ দুর্ঘটনায় বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হবে না। কিন্তু ঘটনার পরে দিন যত গড়াচ্ছে ততই সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে।
সুন্দরবন নিয়ে এ উদ্বেগ এখন শুধু বাংলাদেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এ উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে হলিউডেও। সম্প্রতি মার্কিন অভিনেতা মার্ক রাফালো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইউটিউবে সুন্দরবনের তেল ট্যাঙ্কার দুর্ঘটনা নিয়ে একটি ভিডিওচিত্র আপলোড করেছেন। সেখানে একটিই বিশ্ব একই জলধারা শ্লোগানকে সামনে রেখে সুন্দরবনের প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষার জন্য বিশ্ববাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ভিডিওচিত্রে তিনি বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। গোলাপি ইরাবতী ডলফিন, রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ হাজারো প্রাণবৈচিত্র্যের বসবাস এই বনে। ওই দুর্ঘটনার কারণে সুন্দরবনের প্রাণবৈচিত্র্য পুরোপুরি দূষণের শিকার হচ্ছে।
তিনি জানান, আমাদের একটাই বিশ্ব আর এর জলধারা একই। তাই একটি স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হলে আসলে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হই। সেখানে এখনো অনেকে কাজ করছেন। আমরা আমাদের সাধ্যমতো তাদের পাশে দাঁড়াতে চাই।
তিনি বলেন, আর এজন্য আমরা কিছু ফান্ড সংগ্রহ করছি ইন্ডিগোগো ক্যাম্পেইন নামে। আশা করি আপনিও এর অংশ হবেন। ভিডিওটিতে পরিবেশ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ স্কট স্মিথ বলেন, সুন্দরবনে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে তাতে ওখানকার প্রাণবৈচিত্র্য হুমকির মুখে।
তিনি আরো বলেন, শুধু তাই নয় সেখানে বসবাসরত মানুষের ক্যান্সারের মতো প্রাণঘাতী রোগ হওয়ার সমূহ সম্ভবনা রয়েছে। মানুষের শরীরে এবং প্রকৃতিতে ক্ষতিকর প্রভাব শুরুর আগেই উন্নত প্রযুক্তি এবং কৌশল খাটিয়ে তেল অপসারণ করতে হবে। তা না হলে বিপর্যয় আসন্ন।
বাংলাদেশ থেকে অনেক দূরের হলিউডের বিখ্যাত এক অভিনেতা যখন সুন্দরবন এবং প্রাণ-প্রকৃতি নিয়ে ভাবছেন, তখন আমাদের প্রশাসন প্রায় নির্বিকারই বলা চলে। নিতান্ত ব্যক্তি উদ্যোগে একদল মানুষ ঘটনার পর থেকেই তেল অপসারণের কাজ করে যাচ্ছে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খুবই অল্প সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী সুন্দরবনে দিনের পর দিন থেকে কাজ করছেন। কিছু বছর আগে নাইজেরিয়াতেও এমনি এক তেল দুর্ঘটনা ঘটেছিল। আর সেই দুর্ঘটনায় দেশটির প্রাণবৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এখনই কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ না করতে পারলে হয়তো বাংলাদেশেরও নাইজেরিয়ার পরিণতি বরণ করতে হবে।