হবিগঞ্জ জেলা যুবদলের কর্মকাণ্ডে কেন্দ্রের অসন্তোষ
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:৫০:৪২,অপরাহ্ন ২৭ মে ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: হবিগঞ্জ জেলা যুবদলের কমিটি নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি অসন্তুষ প্রকাশ করছে। কেন্দ্রের কেউ বলছেন কর্মকান্ড ভাল না হলে ভেঙ্গে দেয়া হবে, আর ভাল হলে পূর্নবহাল থাকবে। আবার অন্যদিকে কেন্দ্রের অপর এক নেতা বলছেন কমিটি ভেঙ্গে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সংসদ। বিগত আন্দোলনে জেলা যুবদলের সভাপতি-সম্পাদকের অনুপুস্থিতি ও আন্দোলনে পিছুটানের কারনেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি।
বিগত দিনের লড়াই সংগ্রামে সরকারী দলের এবং সরকারের কৌশলের কাছে হার মানার পরই বিএনপির চেয়াপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে দেশের সবকটি জেলায় ব্যর্থ কমিটিগুলো বাতিল করে দেয়া হচ্ছে বলে জানান কেন্দ্রীয় নেতারা।
জানা যায়, ২০০৯ সালে মোঃ আজিজুর রহমান কাজলকে আহবায়ক, মিয়া মোঃ ইলিয়াছকে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও জালাল আহমেদকে যুগ্ম আহবায়ক করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। ২০১১ সালে একই ভাবে ওই ৩ নেতাকে দিয়ে জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। অর্থাৎ এ ৩ নেতার নেতৃত্বে ৫ বছর যাবত জেলা যুবদল পরিচালিত হচ্ছে।
এদিকে, কেন্দ্রীয় যুবদল রাজধানীর অফিসে আন্দোলন উত্তর দলের অবস্থা জানতে জেলা যুবদলের দায়িত্বশীল ৩ নেতাকে আহবান করা হয়। কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ খ ম মোজাম্মেল হক উপস্থিত ছিলেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মতিন বক্স উপস্থিত ছিলেন। এ সময় কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা যুবদলের নেতৃবৃন্দদের বিগত আন্দোলন সংগ্রামে তাদের ভূমিকার প্রশ্ন করেন।
এ ব্যাপারে জেলা যুবদলের সভাপতি আজিজুর রহমান কাজল বলেন, বিগত আন্দোলনে আমাদের কমপক্ষে ৬০ জন নেতা-কর্মী জেল খেটেছে। এখনো কয়েকজন কারাগারে রয়েছেন। কেন্দ্র বিগত আন্দোলনে আমাদের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং ধন্যবাদ জানান। বিগত আন্দোলনে অনুপুস্থিতির অজুহাতে জেলা কমিটি বাতিলের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আন্দোলনে সবচেয়ে বেশী ভূমিকা ছিল আমাদের। যা আর কেউ দেখাতে পারবে না। তিনি বলেন কমিটি বাতিলের বিষয় তো আমরা কেন্দ্রে উথ্বাপন করেছি।
তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা না হওয়ায় দলের কারোরই কোন পদ পরিচয় নেই। এর মধ্যে যারা জেল খেটেছে, তারাও তাদের দলীয় কোন পদ-পদবি বলতে পারেনি। তাই আমরাই বলেছি, যে ৩ জনের কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ রুপ দেয়া হউক, অন্যথায় কমিটি বাতিল করা হউক। এ ব্যাপারে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রিচি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিয়া মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, জেলা যুবদলের কর্মকান্ডে কেন্দ্র আমাদের উপর অত্যন্ত সন্তুষ্ট।
বিগত আন্দোলন সংগ্রামে বর্তমান কমিটির ভূমিকা ছিলনা এ কারনে জেলা কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার বিষয়ে কথা বলতে তিনি জানান, আমরাতো আমাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দাখিল করেছি। এটি আনুমোদন দেবে কেন্দ্র। আর আন্দোলনে ভূমিকার কারণে আমি সহ দলের অনেকেই সরকারের নির্যাতনের শিকার হয়েছি।
ওই দিন কেন্দ্রে হবিগঞ্জ জেলা যুবদলের সাবেক সমাজ কল্যাণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম সেলিমও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বিগত আন্দোলন সংগ্রামে তার ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের বলেন, জেলা যুবদলের বর্তমান কমিটি ব্যর্থ, তারা আন্দোলন সংগ্রাম করতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি কেন্দ্র কে জানান, বিগত আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের কারনেই ৩৯দিন কারাভোগ করতে হয়েছে এবং এ জন্য বেশ কয়েকটি মামলাও হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আ খ ম মোজাম্মেল হক এর সাথে এ ব্যাপারে কথা বললে তিনি বলেন বিগত আন্দোলনে নিষ্কিৃয়তার কারনে জেলা যুবদলের বর্তমান কমিটি বাতিল করা হবে। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুল সালাম আজাদ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দলের অবস্থান কি, কয়টি কমিটি গঠন সম্পন্ন হয়েছে, সম্মেলন হয়েছে কি না, বিগত আন্দোলনে বর্তমান নেতৃত্বের কি অবস্থানসহ বিভিন্ন বিষয়ে দলের জেলার নেতৃবৃন্দকে ডাকা হয়েছে। বিভিন্ন বিষয় নোট করা হয়েছে।
এখন দলের চেয়ারপার্সন এ ব্যাপারে সিন্ধান্ত দেবে। এখন যদি বর্তমান কমিটি ভাল কর্মকাণ্ড করে থাকে, তাহলে এ কমিটি বহাল থাকবে, অন্যথায় বাতিল করা হবে। আর এ সিদ্ধান্ত দেবে দলীয় নেত্রী।