সোনাগাজীতে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ২০
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:০৩:৫৩,অপরাহ্ন ০৪ জানুয়ারি ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: ফেনীর সোনাগাজীতে আওয়ামী লীগের দুই এমপি গ্রুপের মুখোমুখি সংঘর্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতিসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ১১ জন কে আটক করেছে। এ সময় একটি লাইসেন্স করা শর্টগানসহ ম্যাগজিন উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত ৩ টার দিকে সোনাগাজী পৌরসভার জিরো পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও দলীয় সুত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন থেকে ফেনী-৩ আসনের সাংসদ ও প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা হাজী রমি উল্যাহর সমর্থকদের সাথে ফেনী-২ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীর সমর্থিত নেতা কর্মীদেও দ্বন্ধ চলছিল। এরই মধ্যে ৫ জানুয়ারী গণতন্ত্র রক্ষা দিবস কে কেন্দ্র করে দুই এমপির সমর্থকেরা পুনরায় বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে দুই পক্ষ পৌরসভার জিরো পয়েন্টে ও আওয়ামী লীগ কার্য্যালয়ের সামনে অবস্থান করে এক গ্রুপ অন্য গ্রুপের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়। পুলিশ উভয় গ্রুপের মধ্যখানে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। উভয় গ্রুপ তাদের নিজ নিজ অবস্থানে অনড় থাকলে রাত ১২ ঘটিকার সময় ফেনী জেলা সহকারী পুলিশ সুপার শামছুল আলম সরকার ঘটনাস্থলে পৌঁচে উভয় গ্রুপকে তাদের অবস্থান থেকে সরাতে ব্যার্থ হয়ে পুনরায় ফেনীতে চলে যায়। এর পরেই উভয় গ্রুপ তাদের শক্তি বৃদ্ধির জন্য উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সমর্থকদের ঘঠনাস্থলে জড়ো করে শক্তি বৃদ্ধি করে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ননা মতে, আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থানের সুযোগে পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে বিএনপি সমর্থকেরা বোমা ও ককটেলের বিস্ফোরন ঘটিয়ে ব্যাপক আতংকের সৃষ্টি করে। পরে রাত ত ঘটিকার সময় আওয়ামীলীগের উভয় গ্রুপ শ্লোগান সহকারে একে অপরের প্রতি ঝাপিয়ে পড়ে।এ সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক গুলি ও বোমা বর্ষনের ঘঠনা ঘঠে।গুলির আঘাতে আওয়ামী লীগ কার্য্যালয়ের সম্মুখে বঙ্গবন্দুর প্রতিকৃতি ঝাঝরা হয়ে যায়। এ ঘঠনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রুহুল আমিন,সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খোকন, আমিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল আলম জহির, পৌর যুবলীগের আহবায়ক নাছির উদ্দিন অপু, ছাত্রলীগ নেতা শাখাওয়াত হোসেন মনি, আব্দুল মোতালেব রবিন, আকবর হোসেন, সাদা ইব্রাহিম, জুলহাস, ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হক হিরনসহ অন্তত ২০ জন গুলিবিদ্ধ হয়। আহতদের স্থানীয় হাসপাতাল ও ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পরে ফেনীর পুলিশ সুপার রেজাউল হকের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও হাজী রহিম উল্যাহ শফিং কমপ্লেক্সে তল্লাসি চালায়। আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে তল্লাসী চালিয়ে কোন কিছু না পেলেও শফিং কমপ্লেক্সে থেকে ১১ জনকে আটক ও লাইসেন্স করা একটি শর্টগান উদ্ধার করে। আটককৃত সবাই রহিম উল্যাহ সমর্থক বলে জানা গেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খোকন জানান, গভীর রাতে বিনা উস্কানিতে জলদর্স্যুদের নিয়ে সাংসদ রহিম উল্যাহ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা করে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংসদ রহিম উল্যাহ জানান, তারা বার বার আমার উপর হামলা করছে। আমার নেতাকর্মীদের উপর হামলা করতে এসে তারা নিজেরা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। সোনাগাজী মডেল থানার ওসি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।