সুন্দরবনের ঘটনা বাংলাদেশের জন্য ওয়েকআপ কল
প্রকাশিত হয়েছে : ১:১৩:২০,অপরাহ্ন ০১ জানুয়ারি ২০১৫
অনলাইন ডেস্ক:: সুন্দরবনের দুর্ঘটনা বাংলাদেশের জন্য একটি ‘ঘুম ভাঙানিয়া বার্তা’ (ওয়েকআপ কল) বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদল। সুন্দরবনের মতো মহামূল্যবান এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মাঝখান দিয়ে নৌচলাচল বন্ধ করাও উচিত বলে মনে বিশেষজ্ঞরা। এ ছাড়া স্থানীয় জনসাধারণের তৎপরতা, সরকার ও বন বিভাগের তাৎক্ষণিক ভূমিকারও প্রশংসা করেছেন তাঁরা।
গতকাল বুধবার বিকেলে ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে বক্তব্য দেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান এমিলিয়া ওয়ালস্টোন, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী বেট্রিকা কালদুন, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, সচিব নজিবুর রহমান প্রমুখ।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, আল্লাহর রহমত যে ওই দুর্ঘটনায় যে ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করা হয়েছিল, সেটি হয়নি। তবে একেবারে যে কিছুই হয়নি, তা আমি বলব না। এ ধরনের দুর্ঘটনা হলে বিবিসি-সিএনএনে যেসব ছবি দেখানো হয়, সে রকম কোনো ছবি সুন্দরবনের ক্ষেত্রে পাওয়া যায়নি। এ ধরনের দুর্ঘটনা মোকাবিলার পূর্বাভিজ্ঞতা আমাদের নেই। তার পরও সীমিত সম্পদ নিয়েই আমরা পরিস্থিতি সামাল দিয়েছি।
এক প্রশ্নের জবাবে মঞ্জু বলেন, শ্যালা নদীতে স্থায়ীভাবে নৌচলাচল বন্ধ করে দিলে খাদ্যদ্রব্যসহ অনেক পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। কারণ ওই রুটে খাদ্য, তেল ও সারবাহী জাহাজ চলাচল করে। বিকল্প নৌরুট ঘাষিয়াখালি খননের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই রুট যত দিন না চালু হচ্ছে তত দিন শ্যালা নদীতে নিয়ন্ত্রিত পন্থায় জাহাজ চলাচলের কথা ভাবা হচ্ছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় বেশ কিছু ভাসমান তেল সংগ্রহ করা গেছে। এই কাজের জন্য তাদের ৩০০ জোড়া হাতমোজা, প্রয়োজনীয় নৌকা সরবরাহ করা হয়েছিল। আর দুর্ঘটনাস্থলে কোনো জনবসতি নেই। বনের ওপর নির্ভরশীল লোকজন সেখানে গোলপাতা সংগ্রহসহ নানা কাজে যায়। এখনো কোনো অসুখ-বিসুখের কথা আমরা শুনিনি। আপনারা এমন কোনো খবর পেলে পত্রিকায় লিখে দেবেন। আমরা সেখানে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবনে তেলবাহী জাহাজ দুর্ঘটনায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার লিটার ফার্নেস অয়েল শ্যালা নদীসহ বনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার পরপরই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে জাতিসংঘের একটি বিশেষজ্ঞদল সুন্দরবন সফর করে। ১৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সফর করা ২৫ সদস্যের এই দলে ছিলেন ইউএনডিএসি (ইউনাইটেড নেশন ডিজাস্টার অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন), ইউএনডিপি, ইউএসএআইডি, ইউনিয়ন সিভিল মেকানিজম প্রটেকশন, ফ্রান্স সরকার, ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটি এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।