সাগর পারে সাগরিকায়
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৪৫:৫৯,অপরাহ্ন ১৭ নভেম্বর ২০১৪
দিগন্ত সৌরভ::
বাংলার ঝতুতে শরৎকাল। এমন সময়ে বাংলালিংক ফোন কোম্পানীর কয়েকটা বিজ্ঞাপন আসে আমাদের ছবিয়াল ইউনিটের কাছে। শুর্টিং করার জন্য তারিখ ঠিক হয়। পছন্দসই লোকেশন খোজার জন্য আমাদের টিমের লোকদের চারিদিকে পাঠানো হলো। কিন্তু কোথাও সেই স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী লোকেশন পাওয়া যাচ্ছিলো না। অবশেষে আমাদের টিমের অন্যতম সহকারি পরিচালক মজিদ ভাই বন্দর নগরী চট্রগ্রাম শহরের নিকটে এই মনোরম জায়গাটি খুজে বের করেন। চির সবুজ কেওড়া বন তার মাঝখান দিয়ে থেকে থেকে চলে গেছে ছোট ছোট খাল।
সামুদ্রিক শামুক, সাপ, কখনো বা এক দুটি কচছপের আনাগোনা বলতে গেলে জীববৈচিত্র্যের প্রাচুর্য নিয়ে গড়ে ওঠেছে এখানকার পরিবেশ। শ্যুটিংয়ে প্রথমবার গিয়ে এই সৈকতের প্রেমে পড়ে যাই। আমাদের দেশে সমুদ্র সৈকতের প্রসঙ্গ আসলেই প্রথমে চোখের সামনে ভেঁসে ওঠে কক্রবাজার কিংবা কুয়াকাটার দৃশ্য। কিন্তু এসব স্থানের বাহিরেও কিছু দৃষ্টিনন্দন সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশে রয়েছে যা অনেকের অজানা। এমন একটি চমৎকার নিরিবিলি সমুদ্র সৈকত বন্দর নগরী চট্রগ্রামের কাট্রলী সৈকত।
এ স্থানটির আরেকটি নাম সাগরিকা। চট্রগ্রাম শহর থেকে কিছুটা দূরে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে আকর্ষনীয় এ সমুদ্র সৈকতটি। পাহাড়তলী থানার দক্ষিণ কাট্রলী এলাকায় এই সমুদ্র সৈকতটি। স্থানীয় চ্রঁগ্রামবাসীদের জানা থাকলেও বাহিরের অনেকের কাছেই তা অজানা। সৈকতের একদিকে সারিবদ্ধভাবে আছে কেওড়া বন। এখানে ঘুরে বেড়ানো, গাড়ি চালানো, ঘোড়ায় চড়া, স্পিডবোটে চড়া, খেলাধূলা করা পিকনিক ও সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে।
স্থানীয়দের কাছে এই সৈকতটির আরেকটি নাম আছে, তা হলো জেলেপাড়া সৈকত। জায়গাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দর্শনার্থীদের সহজেই বিমোহিত করে। একদিকে সৈকত আর অন্যদিকে স্থানীয়দের জেলে পল্লী অন্য সৈকতগুলোতে এমন এবস্থান খুব কমই পাওয়া যায়। বর্তমানে এখানে প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থী বিকেল বেলা পরিবার পরিজন নিয়ে পিকনিক করতে ও বেড়াতে আসেন। বিকেলের ঝিরি ঝিরি বাতাসে কিছুটা সময় নিরিবিলি পরিবেশের কাটনোর জন্য অবসর সময়ে নগরবাসীরাও এখানে এসে সময় কাটিয়ে থাকেন। একানকার সামুদ্রিক পরিবেশ, জোয়ারের গর্জন, জেলেদের মাছ ধরা, কেওড়া বনে শনশন করে যাওয়া বাতাস, সাম্পান নৌকা, আর সন্ধ্যার পূর্বে সূযাস্তের মোহনীয় দৃশ্য সত্যিই আপনাকে মুগ্ধ করবে।
যাতায়াত
রাজধানী ঢাকা থেকে ট্রেন, বাস ও প্লেনে যাতায়াত করা যায়। ফকিরাপুল, সায়েদাবাদ এবং আরও ভিবিন্ন স্থান হতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পরিবহনের বাস ছেড়ে যায়। বাসের ভাড়া প্রতিজনের পড়বে ৪০০-১০০০ টাকা। কমলাপুর ও এয়ারপোর্ট থেকে ট্রেন ছেড়ে যায়। ট্রেনে টিকিটের দাম পড়বে ২৮০-৪৫০ টাকা। সেগুলোর যে কোন মাধ্যমে গিয়ে নামতে হবে চট্রগ্রাম শহরে। সেখান থেকে টোল সড়ক ধরে সহজেই পৌছতে পারেন এই সৈকতে।