সরকার নয় বেকায়দায় লতিফ সিদ্দিকী: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ২:২৫:০৯,অপরাহ্ন ০৩ অক্টোবর ২০১৪
ঢাকা: বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে সরকার কোনো বেকায়দায় পড়েনি, লতিফ সিদ্দিকী বেকায়দায় পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার বিকেলে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সদ্যসাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর সাম্প্রতিক বিতর্কিত মন্তব্য সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে এই কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, কেউ যদি অবিবেচকের মতো কথা বলে, তাহলে তার বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, সেটাই নেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, লতিফ সিদ্দিকী যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেখানে সরকার কোনো বেকায়দায় পড়েনি। আমি মনে করি, সেখানে সরকারের কোনো ভয় নাই।
তিনি বলেন, যেটা আমি বলেছি সেটাই করব। তাকে মন্ত্রিসভায় রাখব না। সে থাকবে না।
কবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে এমন এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি নির্দেশ দিলে রিজাইন (পদত্যাগ) করতে হবে। নইলে বিদায় করে দিতে হবে। কিন্তু বিদায় দিতে হলে রাষ্ট্রপতির কাছে ফাইল পাঠাতে হবে। রাষ্ট্রপতি হজে গেছেন। আমি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে ফাইল তৈরি করে রাখতে বলেছি, তারা ফাইল তৈরিও করেছে।
লতিফ সিদ্দিকীকে দল থেকে বাদ দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাদ দিতে হলে তা নিয়ে দলে আলোচনা করতে হবে। অভিযোগ তুলে ধরে আলোচনা করতে হবে। ওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর সাথে জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইর্য়ক সফরকালে গত ২৮ সেপ্টেম্বর একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী বলেন, আমি কিন্তু হজ্ব আর তাবলীগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী। তবে তার চেয়েও হজ্ব ও তাবলীগ জামাতের বেশি বিরোধী। এ হজ্বে যে কত ম্যানপাওয়ার নষ্ট হয়। হজ্বের জন্য ২০ লাখ লোক আজ সৌদি আরবে গিয়েছে। এদের কোনও কাম নাই। এদের কোনও প্রডাকশন নাই। শুধু রিডাকশন দিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, তাবলীগ জামাত প্রতি বছর ২০ লাখ লোকের জমায়েত করে। নিজেদের তো কোনও কাজ নেই। সারা দেশের গাড়িঘোড়া তারা বন্ধ করে দেয়।
প্রধানমন্ত্রী তার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে এবং নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়নে আমাদের সরকারের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন বিশ্ব নেতারা। একইসঙ্গে তারা আমাদের দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নেরও প্রশংসা করেছেন।
বিনিয়োগবান্ধব দেশ গড়তে উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশ সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, এবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। এমডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। এসব সাফল্য অর্জনে জাতিসংঘে বাংলাদেশে ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর হয়ে চলেছে।
নিজ বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী জানান, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাফল্য দেখানোয় জাতিসংঘে বাংলাদেশ সমাদৃত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। এমডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। এসব সাফল্য অর্জনে জাতিসংঘে বাংলাদেশে ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর হয়ে চলেছে।
এদিকে বিএনপি ও এর জোটের সঙ্গে কোনো ধরনের সংলাপের সম্ভাবনা আবারো নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ আওয়ামী লীগ সরকারের এ অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখন আগ্রহ দেখালাম তখন কোনো খবর ছিল না। এখন কার সঙ্গে আলোচনা করবো? দুর্নীতিবাজ ও হত্যাকারীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা নয়।
বাংলাদেশের যেসব মুসলমান হজব্রত পালন করতে গেছেন তাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের যেসব মুসলমান হজব্রত পালন করতে গেছেন তারা যেন হজ পালন করে সহি-সালামতে দেশে ফিরতে পারেন।
এ সময় তিনি দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দুধর্মের সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।
প্রধানমন্ত্রী আমেরিকা ও বৃটেনে তার ১০ দিনের সফর শেষে সকালে সরাসরি ফ্লাইটে সিলেটে আসেন। সেখানে এক ঘণ্টার যাত্রাবিরতি শেষে তিনি ঢাকায় ফেরেন।