শুভ বড়দিন আজ
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:২৩:০০,অপরাহ্ন ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক:: আজ ২৫ ডিসেম্বর, খ্রিস্টান সমপ্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব, শুভ বড় দিন। এদিন যীশুখ্রিস্ট মাতা মেরীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন। সে কারণে সারা পৃথিবীর খ্রিস্টান সমপ্রদায়ের মানুষ বড়দিনকে সবচাইতে বড় ধর্মীয় উৎসবের দিন হিসেবে পালন করে থাকেন।
এদিনের অপেক্ষায় তাদের সারাটি বছর কাটে। ডিসেম্বর মাস শুরু হলেই এ সমপ্রদায়ের মানুষের মধ্যে উৎসবের সাড়া পড়ে যায়। ঘরবাড়ি নতুন করে সাজাতে শুরু করেন। নতুন পোশাক কেনাকাটার ধূম পড়ে যায়। শুভেচ্ছা কার্ড বিনিময় করেন। ইতোমধ্যে, সারা পৃথিবীর খ্রিস্টান সমপ্রদায়ের মানুষ দিনটি পালন করতে শুরু করেছেন। হাজার হাজার পুণ্যার্থী, পর্যটক যীশুর জন্মস্থান বেথলেহেমে হাজির হচ্ছেন। সেখানে চার্চ অব নেটিভিটি’র বাইরে বয়স্কাউটরা ব্যান্ড বাজিয়ে মার্চপাস্ট করেছে। অনেকে সেখানে মোমবাতি জ্বালিয়ে উৎসব পালন করছেন। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।
সিলেটের খ্রিষ্টানমন্ডলিতে বড়দিন উদযাপনের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। চারদিকে সাজসাজ রব। নগরীর নয়াসড়কে অবস্থিত ১০১ বছরের প্রাচীন গির্জাটি আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। এছাড়াও খাদিম, লাক্কাতুরা, বড়শালা গির্জা ও সাজানো হয়েছে বড়দিনের সাজে ।
বড়দিনকে কেন্দ্র করে ঘর গোছানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করেন গৃহিনীরাও । পাশাপাশি নানান রকমের কেক ও খাবার দাবারের আয়োজন করা হয় বড়দিনকে কেন্দ্র করে । অনেক পরিবার আবার আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় বেড়াতে যাওয়ার জন্যে বড়দিনকেই বেছে নেয় । সিলেটে বড়দিনকে কেন্দ্র করে যাতে কোন ধরণের দুর্ঘটনা না ঘটে সেজন্য পুলিশ প্রশাসন বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ।
রাজধানীর ঢাকার বড় বড় হোটেল- হোটেল সোনারগাঁও, শেরাটন, র্যাডিসন, অস্টিনসহ খ্রিস্টান সমপ্রদায়ের মানুষ তাদের বাড়িঘর আলোক সজ্জায় সজ্জিত করেছেন। শুভ বড় দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। বড়দিন উপলক্ষে দেশের খ্রিস্টধর্মাবলম্বীসহ দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে গতকাল এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ সুখী-সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশে বিদ্যমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুমহান ঐতিহ্যকে আরও সুদৃঢ় করতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমানকাল থেকে এদেশের মানুষ ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ। বাংলাদেশে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীগণ শিক্ষা, মানবতার সেবাসহ সমাজ উন্নয়নে যে ভূমিকা রাখছেন তা অত্যন্ত প্রশংসনীয় বলে উল্লেখ করেন তিনি। শুভ বড়দিন উপলক্ষে গতকাল এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিপন্ন ও অনাহারক্লিষ্ট মানুষের জন্য মহামতি যিশু নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর জীবনাচরণ ও দৃঢ় চারিত্রিক গুণাবলীর জন্য মানব ইতিহাসে তিনি অমর হয়ে আছেন। বানীতে প্রধানমন্ত্রী এ পূণ্যদিন উপলক্ষে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ জাতি, ধর্মনির্বিশেষে সকলকে মানবতার মহান ব্রতে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের উন্নয়নে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উপলক্ষে এ সম্প্রদায়ের সকল নাগরিকদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খ্রিষ্টান ধর্মের প্রবর্তক যিশু খ্রিষ্ট এদিনে বেথেলহেমে জন্মগ্রহণ করেন। শোষণমুক্ত সমাজ প্রবর্তনের জন্য পৃথিবীতে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই ছিল যিশু খ্রিষ্টের অন্যতম ব্রত।
বড়দিন দেশের খ্রিষ্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যকার বিরাজমান সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতিকে আরও সুদৃঢ় করবে প্রত্যাশা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে রয়েছে সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের নিজস্ব ধর্ম পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা। আনন্দময় ও উৎসবমুখর বড়দিনে তিনি খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী জনসাধারণের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।