শিগগিরই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হবে
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৩৪:০৬,অপরাহ্ন ২২ নভেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক::
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. একেএম শফিউল ইসলাম হত্যা মামলার অনেক অগ্রগতি হয়েছে দাবি করেছেন পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) হাসান মাহমুদ খন্দকার।
পুলিশের আইজি বলেন, ‘রাবি শিক্ষক ড. শফিউল ঘটনাটি গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে এবং এরই মধ্যে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে এখনই এভাবে তা প্রকাশ করা উচিৎ হবে না। সত্য উদঘাটনের স্বার্থে সবাইকে আরও অপেক্ষা করতে হবে। শিগগিরই রাবি শিক্ষক ড. শফিউল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হবে।’
রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে শনিবার ৩৪তম বহিরাগত ক্যাডেট সাব ইন্সপেক্টর (২০১৩) ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। তাই সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের স্থাপনা বসাতে হলে জনস্বার্থে তা বসানো হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ‘একটি ঘটনা ঘটলে অনেক সময় পুলিশ তাৎক্ষণিক সময়ে ‘ক্লু’ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়, আবার অনেক সময় দেরি হয়। তবে দেরি হলেও ঘটনার রহস্য বের করা সম্ভব হয়। এ নিয়ে সংশয়ের অবকাশ নেই। ড. শফিউল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ন্যায়, নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে পুলিশ তদন্ত করছে। সম্পূর্ণ পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েই দ্রুততম সময়ে নিরপেক্ষ এবং সঠিকভাবে পুলিশ এ তদন্ত কাজ শেষ করবে বলে আমি সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই।’
এদিকে, ড. শফিউল হত্যাকাণ্ডের কয়েক ঘন্টার মাথায় আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ-২ নামে একটি নতুন জঙ্গি সংগঠন ফেসবুকে এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে স্ট্যাটাস দেয়। ফেসবুকের ওই পেজটি সম্পর্কে মন্তব্য জানতে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা গভীরভাবে সবকিছুই পর্যবেক্ষণ করছি।’
এর আগে পুলিশ মহাপরিদর্শক একাডেমির ৩৪তম বহিরাগত ১ হাজার ৩২১ জন সাব ইন্সপেক্টরের এক বছর মেয়াদী মৌলিক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে তাদের অভিবাদন গ্রহণ করেন। কুচকাওয়াজ পরিদর্শন শেষে বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের মধ্যে পদক প্রদান করেন তিনি।
এ সময় বক্তব্য রাখতে গিয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু, তার পরিবারের শহীদ সদস্যসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে আইজিপি বলেন, ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, অপরাধ দমন ও সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষার মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশের ভূমিকাই মূখ্য। বিশ্বায়নের এ যুগে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নগরায়ন, শিক্ষা, প্রযুক্তির বিস্তার ও যোগাযোগের ক্রমবিকাশের ফলে অপরাধের সংখ্যা ও প্রবৃত্তিতে ব্যাপক ভিন্নতা এসেছে। তাই পুলিশের কার্যক্রমে ক্রমাগতভাবে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ যোগ হচ্ছে বলে বিশেষভাবে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এ সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ পুলিশের মূল চালিকা শক্তি সাব ইন্সপেক্টরদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে দক্ষতার সাথে জনগণের সেবক হিসেবে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হবে। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন এটাই হবে আপনাদের মূলমন্ত্র।’
সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ একাডেমির প্রিন্সিপ্যাল নাঈম আহমেদ। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে একাডেমির ভাইস প্রিন্সিপ্যাল সোহরাব হোসেন উপস্থিত ছিলেন। প্যারেড কামন্ডার হসেবে কুচকাওয়াজ পরিচালনা করেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রিয়াজুল কবির।
আজকের সমাপনী কুজকাওয়াজ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ১ হাজার ৩২১ জন বহিরাগত ক্যাডেট সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) এক বছরের মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষ হলো। এর মধ্যে ড্রিলে সাকলাইন ইবনে রশিদ, পিটি ও বাঁধা অতিক্রমে রাজিয়া বেগম, মাসকেট্রিতে বোরহান উদ্দিন ভুইয়া, অশ্বচালনায় মোশারফ হোসাইন চৌধুরী, আইন ও সকল বিষয়ে নাজমুল হোসেন খান সেরা ক্যাডেট পুরস্কার লাভ করেন।