শার্শা উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৫৯:৫৮,অপরাহ্ন ০৪ জানুয়ারি ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: শার্শা উপজেলা প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে রাজস্ব এবং উন্নয়ন খাত থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযুক্ত ওই প্রকৌশলী শার্শায় যোগদান করার পর থেকে রাজস্ব খাত থেকে মালামাল ক্রয় না করে ভুয়া ভাউচার দিয়ে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সুনিদিষ্ট অভিযোগ উঠেছে। তিনি উন্নয়ন তহবিল হতে গত ১৪ মে, ২০১৪ তারিখে একটি প্রিন্টার ক্রয় দেখিয়ে বিল উত্তোলন করে। পরে পুনরায় একই তারিখে রাজস্ব খাত থেকে প্রিন্টার ক্রয় দেখিয়ে ভুয়া ভাউচার দাখিল করাই ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় বিপত্তি ঘটে।
বিলটি প্রদানের সময় উপজেলা নির্বাহী আফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যান একই জিনিস ক্রয় দেখিয়ে বিল গ্রহণ করা যাবে না মর্মে ফেরত দিয়েছেন উপজেলা নাজির কফিল উদ্দিন। এর আগে কম্পিউটার কালি ক্রয় দেখিয়ে গত ২৬ অক্টোবর ২০১৪ উপজেলার উন্নয়ন খাত ও রাজস্ব খাত থেকে নতুন প্রিন্টার ক্রয় দেখিয়ে ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে প্রায় অর্ধ-লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এদিকে, যশোরের নাথ কম্পিউটারের গত ২৬ নভেম্বর, ২০১৪ তারিখের একটি বিল ভাউচার নং ২৩৬৩-তে উল্লেখ করা হয়েছে, ঐ তারিখে একটি কম্পিউটার পিসি (ডুয়েল) ক্রয় করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রকৌশলী অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আদৌ কম্পিউটার পিসি (ডুয়েল) ক্রয় করা হয়নি। এছাড়া ওই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা অফিসে ফটোকপি মেশিন ক্রয় না করলেও বিভিন্ন সময় খুচরা যন্ত্রাংশ ক্রয় দেখিয়ে বিল উত্তোলন করেছেন হাজার হাজার টাকা।
ঘটনাটি জানাজানি হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়াম্যান প্রকৌশলী দফতরে যেয়ে ফটোকপি মেশিন দেখতে চাইলে তারা দেখাতে পারেননি। তা ছাড়া নতুন প্রিন্টার ও কালি দেখাতে পারেননি। ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে অর্ধ-লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সময় ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে পুনরায় ঐ টাকা রাজস্ব খাতে জমা দিয়েছে উপজেলা কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ঐ কর্মকর্তা অফিসের যাবতীয় বিল প্রদানের সময় ঠিকাদারদের কাছ থেকে অগ্রিম উৎকোচ নিয়ে থাকেন।
উপজেলার রেজিস্ট্রি অফিসের ভূমি হস্তান্তর কর রাজস্ব খাতের অর্থ সকল ইউপি চেয়াম্যানদের ১% প্রদানের সময় ১০% অগ্রিম উৎকোচ নিয়ে বিল প্রদান করে থাকেন। একাধিক চেয়ারম্যানদের অভিযোগ উপজেলা প্রকৌশলী যে কোনো বিলে যে কোনো খাতের অর্থ প্রদান করার পূর্বেই তাকে অগ্রিম উৎকোচের অর্থ পরিশোধ করতে হয়। তবে তার বিলে বা চেকে স্বাক্ষর করে থাকে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের কাছে ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের বিষয়ে সরাসরি তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উপজেলা নাজির কফিল উদ্দিন অফিসিয়াল বিভিন্ন খরচের বিল বাবদ চেক প্রকৌশলী অফিস বরাবর না দিয়ে নিজেরাই বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের শার্শা শাখা হতে টাকা উত্তোলন করে। চেক চাওয়াতে নাজির কফিল উদ্দিন হুমকি প্রদান করে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে নেয়ার জন্য বলেন। কোন অফিসের চেক ভাঙ্গানোর একতিয়ার নাজিরের নেই। চেকে ৪৭হাজার টাকা চাওয়াতে তিনি আমার বিরুদ্ধে রটনা রটিয়ে চলেছেন।
ভুয়া বিল ভাওচারের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন কিছু অফিসিয়াল খরচ আছে যার বিল করা সম্ভব হয় না। তাই এ সব বিল ভাউচার করে খরচ মেটাতে হয়। এ সব ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতা থাকে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম শরিফুল আলমের কাছে উপজেলার প্রকৌশলী কর্তৃক ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।