শার্লি অবদোর নতুন সংস্করণে আবারো ইসলামকে ব্যঙ্গ : মুসলিম গণমাধ্যমের নিন্দা
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:৩০:১৫,অপরাহ্ন ১৬ জানুয়ারি ২০১৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক::
প্যারিসের শার্লি অবদো কার্যালয় ও কোশার সুপার মার্কেটে হামলার মত ঘটনার জন্য ইউরোপের রাজনৈতিক নীতি নির্ধারকরাই দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। এদিকে শার্লি অবদোর নতুন সংস্করণের প্রচ্ছদে আবারো ইসলামকে ব্যঙ্গ করায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে বিশ্বের মুসলমান নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমগুলো।
এদিকে হুজুগেই হোক বা অন্য কোন কারণেই হোক, সন্ত্রাসী হামলার পর কার্টুন পত্রিকা শার্লি অবদোর কাটতি বেড়েছে বহুগুণ। পাঠকরা ঝাঁপিয়ে পড়েছে নতুন সংস্করণটি হাতে পাওয়ার জন্য। এরই মধ্যে শার্লি অবদোর সর্বশেষ সংস্করণ পুরোটা বিক্রি হয়ে যাওয়ায় পাঠকের অনুরোধে আরো ৫০ লাখ কপি মুদ্রণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে গণমাধ্যম।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমি এক কপি জোগাড় করতে পেরে খুবই আনন্দিত। পত্রিকাটি কেনার মধ্য দিয়ে ওদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি আমি।’
অথচ এই পত্রিকাটিই নিন্দিত হচ্ছে পুরো মুসলিম বিশ্বে। ইসলামকে ব্যঙ্গ করে প্রকাশিত কার্টুনের সমালোচনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, ইরান, তুরস্ক, জর্ডানসহ বিভিন্ন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের গণমাধ্যম। তুরস্কে শার্লি অবদো সাময়িকীর কার্টুন ছাপার কারণে কয়েকটি পত্রিকা পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। কেউ কেউ আবার শার্লি অবদোয় হামলাকারীদের সাধুবাদ জানিয়েছে।
একজন বিক্ষোভকারী বলেন, ‘ওরা মুসলমানদের অপমান করেছে। এজন্য অবশ্যই পুরো বিশ্বের কাছে জবাবদিহি করতে হবে ওদের। আমার মনে হয় এই হামলায় ওদের উচিত শাস্তি হয়েছে।’ তবে আতঙ্ক কাটিয়ে উঠে শার্লি অবদো সাময়িকীর প্রকাশনা নব উদ্যোমে শুরু হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ। এই পুনর্জন্মের মধ্য দিয়ে পত্রিকাটি আরো নন্দিত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ফরাসি প্রেসিডেন্টের বক্তব্যই যেন প্রতিফলিত হলো অস্ট্রেলীয় প্রধামন্ত্রী টনি অ্যাবোটের কণ্ঠে। তার মতে শার্লি অবদোর কার্টুনগুলো খুবই প্রাণবন্ত ও সহিংসতা বিরোধী। তিনি বলেন, ‘পত্রিকাটির সব সংস্করণই আমার পছন্দ হয়েছে এমন বললে ভুল হবে। তবে এবারের প্রচ্ছদটিতে হাস্যরসের মধ্য দিয়েই ইসলামের ক্ষমাশীলতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে, যা এই সময়ে পুরো বিশ্বের মানুষের জন্য শিক্ষণীয় ও অনুকরণীয়।’
এদিকে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেছেন, রাজনৈতিক নেতাদের নীতিগত সংকীর্ণতার কারণে গোটা ইউরোপ সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হচ্ছে, যার ফলভোগ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
তিনি বলেন, ‘আমি প্যারিস হামলায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি সন্ত্রাস দমনের জন্য সেনাবাহিনী নয় প্রয়োজন সুষ্ঠু নীতি নির্ধারণের। প্রয়োজন প্রতিটি রাষ্ট্রের মধ্যে তথ্যের অবাধ প্রবাহের। ইউরোপীয়দের সংকীর্ণ নীতির কারণে সেখানে সন্ত্রাসী তৎপরতা মাথা চাঁড়া দিয়ে উঠছে, আর প্রাণ হারাচ্ছে নির্দোষ মানুষগুলো।’ এদিকে, প্যারিসে হামলার দায় স্বীকার করে বুধবার ইয়েমেনী আল কায়দার প্রচার করা ভিডিওটির জন্ম যে আরব অঞ্চলের কোথাও তা নিশ্চিত করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্ত চলছে বলেও জানিয়েছে তারা।