‘রাবিশ’ বক্তব্য কেবল কোন অর্বাচিন বালকের মুখেই মানায়।
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৫৭:২৮,অপরাহ্ন ০৫ জুন ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে বিএনপি। এ ধরণের বক্তব্য কেবল একজন অর্বাচিন বালকের মুখেই মানায় বলে মন্তব্য করেছে দলটি।
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে গতকাল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত একটি জাতীয় দৈনিকের সাথে সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার রাজনীতি শেষ (ফিনিশড্) অফিসিয়ালি তিনি এখন আর কেউ নন।’
এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বিএনপি বলছে, বেগম জিয়াকে নিয়ে অর্থমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন তা একজন সাবেক স্বৈরাচারের সহযোগীর পক্ষেই মানানসই।
শুক্রবার বিকেলে পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের বিপক্ষে এসব কথা বলেন।
বিএনপি বলছে, তিন বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তার নেতৃত্ব নিয়ে আবুল মাল আবদুল মুহিতের এ ধরণের ‘রাবিশ’ বক্তব্য কেবল কোন অর্বাচিন বালকের মুখেই মানায়।
দলের পক্ষে রিপন বলেন, জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসন জারির পরপরই মুহিত সাহেব দু’বছর তার অর্থমন্ত্রীত্ব ভোগের সময় ভেবেছিলেন রাজনীতিকরা শেষ। ’৮৮-৯০ সালে এরশাদ যখন প্রধান দলগুলোর বয়কটে পাতানো ইলেকশন করেন, হয়তো তখনও ভেবেছিলেন খালেদা জিয়া-শেখ হাসিনার রাজনীতিও শেষ। বাস্তবিকই কি তা হয়েছিল?
অর্থমন্ত্রী দ্বিবাস্বপ্ন দেখছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেন আসাদুজ্জামান রিপন। তিনি বলেন‘রাবিশ’ ‘বোগাস’ খ্যাত পতিত স্বৈরাচারের সহযোগী মাল মুহিত সাহেব মন্ত্রীত্বের সুখে দিবাস্বপ্ন দেখছেন এই ভেবে যে, খালেদা জিয়ার রাজনীতি শেষ!
প্রস্তাবিত ও সংসদে উত্থাপিত বাজেট বিষয়ে বিএনপি অভিযোগ করে যে, ঘোষিত বাজেটে ৮৬ হাজার ৬ শত ৫৭ কোটি টাকা ঘাটতি দেখানো হয়েছে-যার পুরোটাই ঋণনির্ভর। ব্যাংকিং খাত থেকে ৩৮,৫২৩ কোটি টাকা ঋণ নেয়া হবে। এ ঋণের সুদ-উন্নয়ন কর্মসূচিতে প্রকৃত খরচের চেয়ে বেশী বর্তাবে। জরাগ্রস্ত ব্যাংকিং ব্যবস্থায় এতো টাকার ঋণ গ্রহণ করা ব্যাংকিং খাত দুর্বল হয়ে পড়বে এবং বেসরকারী খাতের বিনিয়োগে ঋণপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে।
এই বাজেট জনগণের কাঁধে অতিরিক্ত করেরে বোঝা চাপিয়ে দেবে বলে অভিযোগ করে দলটি। মুখপাত্র রিপন বলেন, বাজেটে ৪১,৫৬৮ কোটি টাকার অতিরিক্ত করের বোঝা চাপবে জাতির কাঁধে। আগামী অর্থবছরের জন্য ১ লাখ ৮২ হাজার ২ শ ৪৪ কোটি টাকা অতিরিক্ত করও দিতে হবে জনসাধারণকে।
প্রস্তাবিত বাজেটকে প্রকৃতপক্ষে অবাস্তব বলে উল্লেখ করেন রিপন। তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে এই বাজেট এতটা অবাস্তব যে তা বাস্তবায়ন দু:সাধ্য। অর্থমন্ত্রী প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে যে কথা বলেছেন বাস্তবতা তা নয়।
তিনি বলেন, জিডিপি’র মাত্র এক শতাংশ বৈদেশিক বিনিয়োগে প্রবৃদ্ধি অর্জন অলীক কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়। এছাড়া সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও সুশাসনের অনুপস্থিতিতে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি তো দুরে থাক, বর্তমান অবস্থাও ধরে রাখা কঠিন।
রিপন আরও বলেন, ঘোষিত বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য কোন সুখবর নেই। নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের দাম বাড়বে। ঘোষিত বাজেটকে কোনভাবেই জনবান্ধব বলা যাবে না।
বাজেটের বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ঘাটতির এই বাজেট পেশ করে অর্থমন্ত্রী জাতিকে যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, বাস্তবায়নে বছর শেষে তা দু:স্বপ্নে পরিণত হবে বলেই আমরা শঙ্কা প্রকাশ করছি।